মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলছে। গত ৪০ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার। মার্কিন শ্রম বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এদিকে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দামও। এ পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে রাশিয়া-ইউক্রে সংকট। এর কারণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দামও নজিরবিহীনভাবে বেড়ে চলছে। অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠানগুলোর বহুজাতিক নেটওয়ার্ক সংস্থা আরএসএম জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রে সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খবর সিএনএন বিজনেস। পুতিন সরকারের ইউক্রে দখলের জোর গুঞ্জন চলছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। ইউক্রে সংকটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের ঊর্ধ্বে পৌঁছেছে। আরএসএম জানিয়েছে, ইউক্রে সংকটের ফলে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১১০ ডলারে পৌঁছলে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮১ সালের অক্টোবরের পর এখন পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশ স্পর্শ করেনি। আরএসএমের প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রুসুলাস বলেন, আমরা একটি প্রকৃত স্বল্পমেয়াদি ধাক্কার কথা বলছি। বিশ্ববাজারে জ্বালানি চাহিদা প্রকট হয়ে আছে। প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেলের দ্বিতীয় শীর্ষ উৎপাদক রাশিয়া। এমন সময়ে রাশিয়া-ইউক্রে সংকট বিশ্ববাজারের সমস্যাকে আরো হাওয়া দিল। মার্কিন বহুজাতিক ব্যাংকিং এবং হোল্ডিং প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ১২০ ডলারে পৌঁছতে পারে। জো ব্রুসুলাস বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রে আক্রমণ করলে ঘর উষ্ণ রাখা ও গাড়িতে গ্যাস ব্যবহার করা আরো ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। ফলে বাণিজ্যিক বিনিয়োগ কমবে। ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯৫ ডলারে স্থির হয়। তবে গত মঙ্গলবার অপরিশোধিত তেলের দাম ৯২ ডলারের নিচে নেমে আসে। ব্রুসুলাস জানান, তেলের দাম আরো ২০ শতাংশ বাড়লে ব্যারেলপ্রতি দাম পড়বে ১১০ ডলার। ফলে ভোক্তা মূল্য এক বছরে ২ দশমিক ৮ শতাংশীয় পয়েন্ট বৃদ্ধি পাবে, যা মার্কিন অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাশের দিকে ঠেলে দেবে। এদিকে তেলের পাশাপাশি গ্যাসের দামেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। মার্কিন সংস্থা এএএ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার গ্যাসের দৈনিক গড় মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলারে স্থির হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৩ দশমিক ৪৬ ডলার। মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি স্বল্পমেয়াদি হুমকি হলেও বড় পরিসরে মার্কিন অর্থনীতিতে কোনো নাটকীয় প্রভাব পড়বে না। আরএসএমের প্রধান অর্থনীতিবিদের ধারণা, তেলের দাম ১১০ ডলারে পৌঁছলে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) পয়েন্ট ১ শতাংশেরও নিম্নে কমবে। তবে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছিল ফেডারেল রিজার্ভ। মূল্যস্ফীতির হার বাড়লে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সিএনএন বিজনেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।