রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন করা হলে বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠার পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীকুটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকে মাত্র ৩০০ গজের মধ্যেই গত কয়েক দিন ধরে একটি প্রভাবশালী মহল ইটভাটা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। তারা সরকারি মহলের প্রভাব খাটিয়ে ধানী জমি নষ্ট করে দ্রুত ভাটা তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। ওই ইটভাটার মালিক কিছু জমি লিজ নিয়ে ও কিছু জমি কিনে বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৩শ’ গজের মধ্যেই ইটভাটা স্থাপনের কাজ শুরু করেন। এ বিষয়টি জানতে পেরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু এখনো ইটভাটা তৈরির কাজ বন্ধ না হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপনের কাজ বন্ধ না করলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন। প্রয়োজনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা রাস্তায় নেমে মানববন্ধন ও অনশন করবেন বলেও জানান। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীকুটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের জমির ধান পাকার পূর্বেই প্রভাবশালী মহলটি দ্রুত জমির ধান নষ্ট করে ইটভাটার রাস্তা ও মাঠ তৈরি করছেন। ইটভাটা স্থাপন আইন অনুযায়ী লোকালয় ও বন থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে এবং ধানী জমি ছাড়া অন্যান্য জমিতে ভাটা স্থাপন করার কথা থাকলেও এখানে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। যেখানে ইটভাটা নির্মাণ করার কাজ চলছে, সেখানে প্রতিবছরই কৃষকরা ধান চাষ করেন। কৃৃষকদের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে ধানী জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে ব্রিকস ফিল্ড। আইন না মেনে ধানী জমি নষ্ট করে এবং বিদ্যালয়ের পাশেই স্থাপন করা হচ্ছে ইটভাটা। এতে করে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কেবিনেটের প্রধান ও দশম শ্রেণির ছাত্র ঐহিদুজ্জামান ঐহি বলেন, এমনিতেই আমরা মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে বাস করছি। তার উপর বিদ্যালয় থেকে মাত্র তিন’শ গজের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করলে আমাদের বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। ইটভাটার কালো ধোঁয়া এবং গরম বাতাস আমাদের বিদ্যালয়ের দিকে এসে লেখাপড়ার পরিবেশে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটাবে। স্টুডেন্ট কেবিনেটের সদস্য ৯ম শ্রেণির ছাত্রী মাসুমা আক্তার মুন্নি বলেন, আমরা কোনোভাবেই বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন করতে দেব না। প্রয়োজনে আমরা রাস্তায় নামবো এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবো। এখানে ইটভাটা স্থাপন করা হলে আমাদের বিদ্যালয়ের পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল বলেন, এখানে ইটভাটা হলে এ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বা পাঠ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। কেননা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে চুনারুঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি আহমেদ জামিল বলেন, বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং কৃষি বিভাগের লোকজন রয়েছেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।