নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেশের ফুটবলে ইতিহাস গড়ার দিনে সহজ জয় তুলে নিলো চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এর আগে অন্য কোন ক্লাব যা পারেনি তাই করে দেখালো কিংসরা। নিজেদের ভেন্যুতে বিপিএলের ম্যাচ আয়োজন করে বাংলাদেশ ফুটবলে নতুন ইতিহাস গড়লো তারা। বৃহস্পতিবার বিকালে নব-নির্মিত বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বিপিএলে নিজেদের চতুর্থ ও প্রথম হোম ম্যাচে স্বাগতিক দল ৩-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ পুলিশ এফসি’কে। বিজয়ী দলের হয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহো জোড়া গোল করলে অন্যটি গোলটি করেন নাইজেরিয়ান বংশদ্ভুত সদ্য বাংলাদেশী ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসলে।
লাল-সবুজের ফুটবলে অনেক নতুনের শুরু বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় থেকেই। ঘরোয়া আসরে এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা কিংস-পুলিশ ম্যাচ শুরুর আগে স্বাগতিক দলের লোগো সম্বলিত ছোট এক গাড়িতে করে ম্যাচ বল এলো মাঠে। রেফারি আনিসুর রহমান সাগর বল বুঝে নিলেন। বিদায় নিলো গাড়িটি। বল বহনকারী ছোট্ট গাড়ি মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরই রেফারি সামান্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজান। এমন ইতিহাসেরই স্বাক্ষী হলেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।
নিজেদের হোম ভেন্যুতে বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকদের উল্লাসের মধ্যদিয়ে ম্যাচ শুরু হলে ২ মিনিটেই প্রথম সুযোগটি পায় স্বাগতিক দল। এসময় ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের লং থ্রোর বলটি বক্সে হেডে ক্লিয়ার করেন পুলিশের এক ডিফেন্ডার। ৫ মিনিটে সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন কিংস মিডফিল্ডার ইব্রাহিম। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় বল বিপদমুক্ত করেন পুলিশ অধিনায়ক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ড্যানিলো। ৭ মিনিটে বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি-কিক পায় পুলিশ। কিন্তু মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজুর স্পট কিক চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ১১ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে রবসন রবিনহোর ফ্রি কিক বক্সে ক্লিয়ার করেন ড্যানিলো কুইপা। ম্যাচের ১৬ মিনিটে নিজেদের বক্সে পুলিশের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ড্যানিলসনের শট আটকে দেন বিশ্বনাথ। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তার হাতে বল লেগেছে বলে দাবি করেন পুলিশের ফুটবলাররা। কিন্তু বিশ্বনাথের হাত ছিল পেছনে। যে কারণে রেফারি পেনাল্টি কল করেননি। পরের মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে পুলিশের ডিফেন্ডার ঈসা ফয়সালের কর্ণার বক্সে পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন জার্মানির ফরোয়ার্ড আদিল খুসখুস। বল সরাসরি গ্রিপে নেন কিংস গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ম্যাচের প্রথমার্ধে একের পর সুযোগ পেয়েও গোলের দেখা পায়নি বসুন্ধরা কিংস। পুলিশও পারেনি প্রতিপক্ষের রক্ষণদূর্গ ভাঙতে। ফলে গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আরও বেশি ধারালো দেখা যায় কিংসদের। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলে অবশেষে ৬৬ মিনিটে সফল হয় তারা। এসময় প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে পুলিশের সীমানায় ঢুকে পড়েন কিংসের মিডফিল্ডার মাহদী ইউসুফ খান। দারুণ দক্ষতায় তিনি পাস দেন বক্সের কাছে অপেক্ষায় থাকা অধিনায়ক রবিনহোকে। অনেকটা ফাকায় থাকা রবিনহো ডান পায়ের দারুণ শটে গোল করলে আনন্দে মাতেন কিংস সমর্থকরা (১-০)। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। এসময় মাহদী বল নিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়লে তাকে ফেলে দেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ড্যানিলো। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিলে স্পট কিক থেকে গোল করেন রবিনহো (২-০)। ম্যাচের ৮১ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পুলিশের ডিফেন্ডার ইসানুর রহমান। দশজনের দলে পরিণত হয় পুলিশ। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ৮৭ মিনিটে তৃতীয় গোল করে বসুন্ধরা। মিডফিল্ডার মাহদীর পাসে বল পেয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে চমৎকার প্লেসিং শটে এলিটা কিংসলে গোল করলে বসুন্ধরার সহজ জয় নিশ্চিত হয় (৩-০)। বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় এই ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কিংসরা। চার ম্যাচে তিন জয় ও এক হারে ৯ পয়েন্ট পেয়ে তালিকায় শীর্ষে উঠলো বসুন্ধরা কিংস। সমান ম্যাচে দু’টি করে ড্র ও হারে ২ পয়েন্ট পাওয়া পুলিশের অবস্থান নয়ে।
একই দিন সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে লিগের আরেক ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৩-৩ গোলে ড্র করেছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে। চার ম্যাচে দু’টি করে জয় ও ড্র’তে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শেখ জামাল দ্বিতীয়স্থানে থাকলেও সমান ম্যাচে এক ড্র ও তিন হারে ১ পয়েন্ট পেয়ে তালিকায় এগারতম স্থানে জায়গা পেয়েছে রহমতগঞ্জ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।