Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র নদ: ব্যাহত হচ্ছে নৌ-চলাচল

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১০:২০ এএম

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের চিলমারীকে ঘিরে রয়েছে হাজারো ইতিহাস ঐতিহ্য শিল্পী আব্বাস উদ্দিন এর দরদ ভরা কন্ঠের সেই গান বিশ্বের কাছে চিলমারীকে পরিচিত করলেও পরিবর্তন হচ্ছে না চিলমারীর উন্নয়ন প্রতি বছরে কিংবা মাসে মন্ত্রী আসছে নৌবন্দর পরিদর্শনে তাদের বক্তব্যে দিয়ে যাচ্ছে আশ্বাস দ্রুত নদী খনন সহ বন্দরের কাজ হচ্ছে ঢিলেঢালা। এদিকে খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদ এখন নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদের বুকে জেগে উঠছে চর। আর বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চলের এসব গ্রাম থাকছে বন্যার চরম ঝুঁকিতে।
বর্তমানে চিলমারী উপজেলার নৌবন্দর ঘেঁষে প্রবাহমান ব্রহ্মপুত্র নদটি নাব্যতা হারিয়েছে মরাখালে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ লোকজনই পায়ে হেঁটে ব্রহ্মপুত্র নদের চর পাড়ি দিচ্ছে। অষ্টমির চর , নয়ারহাট, করাই বরিশাল, চর সহ বিভিন্ন স্থানের লোকজন এবার ব্রহ্মপুত্র নদে ইরি-বোরো চাষের প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। নদে চর জেগে উঠায় বন্ধ হয়ে গেছে দুই শতাধিক পরিবারের মাছধরা ও নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ। বিশাল নদটিতে চর জেগে পরিণত হয়ে ছোট্ট একটি খালে।
নৌকার মাঝিরা জানান, শুকনো নদী, অনেক দুর ঘুরে ঘুরে যাইতে হয় তাই সময় ও তেল খরচ বেশি পরে। নৌকায় পারাপারের যাত্রী নেই। ইঞ্জিন চালিত প্রায় সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে । তাই খুবই কষ্টে দিনযাপন করছি।

কৃষক লতিফ মিয়া বলেন,দীর্ঘদিন আগে নদী ভাঙ্গনে জমি চলে গেছে। আমি এখন চর জেগে ওঠা নদের বুকে সামান্য বোরো আবাদ করছি।

গ্রীষ্ম মৌসুমে শুকিয়ে জেগে উঠছে চর। আর বর্ষা মৌসুমে এই ব্রহ্মপুত্র নদের গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় সামান্য পানিতেই ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আর বন্যা এই এলাকার মানুষের জন্য একটি অভিশাপ। প্রতি বছরেই বন্যার কারনে নানান সমস্যার মধ্যে পরতে হয়। ২০১৬ সালে ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারীতে আগমন করেন এবং খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি উদ্বোধন কালে তিনি জানান চিলমারী নদী বন্দর কে একটি পূর্নাঙ্গ রুপ দেবে কিন্তু বছরের পর বছর গেলেও কোন কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে না বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের জনগনের। তারা মনে করেন নদী খনন করে গভীরতা বাড়ালেই তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।

স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নদীর উপরও পড়ছে। তাই গ্রীষ্ম মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে আর বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও নদী ভাংগনের সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করা না হলে চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের অনেক গ্রাম বর্ষা মৌসুমে বন্যায় কবলিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদ শুকিয়ে যাওয়ায় এসব গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে।ব্রহ্মপুত্র নদে পানি না থাকায় গাছপালা ও কৃষি উৎপাদনের প্রভাব পড়ছে। উপজেলার সবজি আবাদের কমে যাচ্ছে উৎপাদন।


ব্রহ্মপুত্র নদের সংস্কার না হলে বর্ষা মৌসুমে চরম হুমকির শিকার হবে উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো । জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর নাব্যতা হারিয়ে বেকার হয়ে যাবে নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবন যুদ্ধ করা নৌকার মাঝি প্রায় দুই হাজার পরিবার।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ চিলমারী পাইলট মাইদুল ইসলাম বলেন,নাব্যতা সংকটের কারণে বিভিন্ন চ্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নদী খননের ব্যবস্থা করলে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ