Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ক্রিমিয়ায় মহড়া অবসানের ঘোষণা রাশিয়ার

কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা আক্রমণের সম্ভ্যাব্যতা এখনো বিদ্যমান : বাইডেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

মস্কোর নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় সামরিক মহড়া অবসানের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। গতকাল বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, সেনা সদস্যরা নিজেদের ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছে। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা জানানোর এক দিন পর এ ঘোষণা দিয়েছে মস্কো। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক জেলার ইউনিটগুলো তাদের কৌশলগত মহড়া সম্পন্ন করেছে। আর তারা তাদের স্থায়ী অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে।’

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত উপত্যকার সাথে মূল ভূখণ্ডকে যুক্ত করা একটি সেতু পার হচ্ছে সামরিক ইউনিটগুলো। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ট্যাংক, কামানসহ সামরিক সরঞ্জামগুলো ট্রেনে করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। রাশিয়া সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয়ার পরও পশ্চিমা নেতাদের উদ্বেগ রয়ে গেছে। তারা এখনো মনে করছে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন সম্ভব। এএফপি জানায়, মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মস্কোর আগ্রাসন চালানোর আশঙ্কা এখনও রয়েছে। বাইডেন জানান, ওয়াশিংটন এবং তাদের মিত্ররা ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার রুশ দাবি যাচাই করে দেখবে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাসমাবেশ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ বাড়তে থাকলেও সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। এর মধ্যে ৩০ হাজার সেনা বেলারুশের সাথে যৌথ মহড়ায় অংশ নেয়। বিবিসির খবরে বলা হয়, ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সাথে আলোচনায় বসতে চান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজ এ তথ্য জানিয়েছেন। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের সাথে আলোচনার জন্য গত রোববার মস্কো সফরের ঘোষণা দেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজ। মঙ্গলবার মস্কোতে তিনি পুতিনের সাথে বৈঠক করেছেন।

বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শুলৎজ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক আলোচনার সুযোগ এখনও শেষ হয়ে যায়নি বলে রাশিয়ার যে মূল্যায়ন তার সাথে তিনি একমত। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কো ইউরোপে যুদ্ধ চায় না। তবে পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলোর পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং মিনস্ক শান্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেখানে সংঘাতের সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অপরদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছেন, ইউক্রেন সীমান্তে এখনও প্রায় দেড় লাখ রুশ সেনা মোতায়েন আছে। ইউক্রেনে এখনো রাশিয়ার হামলার আশঙ্কা আছে। আর যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের উদ্যোগের জবাব দিতে প্রস্তুত। টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে বাইডেন বলেন, রুশ বাহিনীর চলে যাওয়াটা ভালো হবে। কিন্তু, আমরা এখনো তা যাচাই করিনি। আমরা এখনো জানি না রাশিয়ার সামরিক ইউনিটগুলো তাদের নিজ ঘাঁটিতে ফিরে গেছে কিনা। প্রকৃতপক্ষে, আমাদের বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এখনও হামলার আশঙ্কা আছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন মস্কোর নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বাইডেন এ কথা বলেন।

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কিছু সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে বাইডেন বলছেন, বিষয়টি যাচাই করা হয়নি। গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো। দুই দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনার মধ্যেই নিরাপত্তার স্বার্থে কিয়েভে অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে অনেক রাষ্ট্রই। তবে মস্কো প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে তাদের এ মুহূর্তে ইউক্রেন হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাইডেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ