Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইন মানছেন না ভাটা মালিকরা

ঘাটাইলে ৪৮ ইটভাটার বৈধ কাগজপত্র নেই

আতাউর রহমান আজাদ, টাঙ্গাইল থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৬ এএম

আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রায় ৫৬টি ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৮টি ভাটার লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৪৮টি ইটভাটার কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এদের মধ্যে কারো লাইসেন্স নেই, কারো পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, কেউ সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে এবং বিদ্যালয়ে পাশে গড়ে তুলেছেন ইটভাটা। কেউ পাহাড়ের লালমাটি দিয়ে ইট প্রস্তুত করছে, কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছেন। এক কথায় কোন আইন মানছেন না ভাটা মালিকরা, তবুও চলছে ইটভাটা।
টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তত করা ও পোড়ানোর কোন সুযোগ নেই। আইন অমান্য করলে ভাটা মালিককে ২ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডই হতে পারে। কিন্ত আইনের কোন তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী কৃষিজমি, আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তিগত বন, অভয়ারণ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন, বাগান বা জলাভূমিতে ইটভাটা স্থাপন না করার বিধান রয়েছে। তারপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা উচ্চ আদালতে রিট করেই চালাচ্ছে এসব ইটভাটা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটাইল উপজেলার চানতারা, ধলাপাড়া, দেউলাবাড়ি, জামুরিয়া, সিংগুরিয়া, রসুলপুর, মোগলপাড়া বীরসিংহ এলাকার ইটভাটাসহ অধিকাংশ ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে কৃষিজমি, সংরক্ষিত বন, আবাসিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায়। কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো নিষিদ্ধ থাকলেও ইটভাটাগুলোতে হরহামেশা পোড়ানো হচ্ছে সংরক্ষিত বনের কাঠ। ইট প্রস্তুতের জন্য পাহাড়েরর লাল মাটি ও ফসলি জমির মাটি ব্যবহারের বিধান না থাকলেও ইটভাটাগুলোতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পাহাড়ের লাল ও ফসলি জমির মাঠি দিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইদা পারভীনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল ৯টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে সাড়ে ২৭ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩টি ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে। অভিযানের পরপরই এসব ইটভাটার স্থাপনা মেরামত করে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। অপরদিকে পাহাড়ের লাল মাটি দিয়ে ইট প্রস্তুতের কারণে ৪ ইটভাটা মালিককে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন ঘাটাইলের সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইয়াসমিন।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন ঘাটাইলে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ভ্রামামান আদালতের অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেছে। কয়েকটি ইটভাটার স্থাপনাও ভেঙে দেয়া হয়েছে। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।
উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শাহজাহান সরকার বলেন, যাদের লাইসেন্স নবায়ন নেই তারা সকলেই নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে জেলা প্রশাসন ইটভাটার লাইসেন্স প্রদান করেন। ঘাটাইলের অধিকাংশ ইটভাটাই পুরানো তাই বর্তমান আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারছে না। তাই নানা ভোগান্তির কারনে তারা আদালতের আশ্রয় নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে ইটভাটা পরিচালনা করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইন মানছেন না ভাটা মালিকরা

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ