মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কোভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে পুনরুদ্ধার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। দ্রæতগতিতে বেড়েছে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। বিধিনিষেধ শিথিলের পর তৈরি হয় তুমুল ভোক্তা চাহিদা। পাশাপাশি সরকারের দেয়া বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা বাড়িয়ে দিয়েছে ভোক্তা ব্যয়। এ অবস্থায় চাহিদা মোকাবেলায় বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করতে হয়েছে ওয়াশিংটনকে। ফলে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল প্রকাশিত বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে মহামারীতে মার্কিন ভোক্তা ব্যয় পরিষেবা থেকে পণ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিকে তুলে ধরেছে। বিশ্বজুড়ে চলমান সরবরাহ ব্যবস্থার বাধার মধ্যে চলতি বছর এ বাণিজ্য ঘাটতি বেশি সংকুচিত হওয়ারও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক ওয়েলস ফার্গোর একজন সিনিয়র অর্থনীতিবিদ টিম কুইনল্যান বলেন, বর্তমানে কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা পণ্য থেকে পরিষেবায় ফিরে আসছে। তবুও চাহিদা মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শক্তিশালী থাকবে। যদি অভ্যন্তরীণ চাহিদা কিছুটা শিথিল হয় এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকে তবেই আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমার আশা করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, ২০২১ সালে বাণিজ্য ঘাটতি সর্বকালের সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার ৯১০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বাণিজ্য ঘাটতির এ পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৬৭ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। বাণিজ্য ঘাটতির এ পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ৭ শতাংশের সমান। ২০২০ সালে এ হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। গত বছর মার্কিন অর্থনীতি ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির এ হার ১৯৮৪ সালের পর সর্বোচ্চ। সরকারের প্রায় ৬ লাখ কোটি ডলার প্রণোদনা দেশটির ভোক্তা ব্যয় বাড়িয়ে তোলে। গত বছর পণ্য ঘাটতি রেকর্ড ১ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে আগের বছর এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার ২০০ কোটি ডলার। গত বছর দেশটির পণ্য আমদানি ব্যয় সর্বকালের সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শিল্প উপকরণ ও কাঁচামাল পণ্য আমদানি বাড়াতে অবদান রেখেছে। এছাড়া পুঁজি, ভোক্তা ও অন্যান্য পণ্যের হিসেবে খাদ্য আমদানিও রেকর্ড সর্বোচ্চ ছিল। মেক্সিকো, কানাডা ও জার্মানির নেতৃত্বে ৭০টি দেশ থেকে রেকর্ড পরিমাণ আমদানি হয়েছে। আমদানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি আয়ও বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। গত বছর ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন পণ্য রফতানি হয়েছে। অর্থের হিসাবে রফতানির এ পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। শিল্প উপকরণ, খাদ্য, ভোগ্যপণ্য ও পেট্রোলিয়াম পণ্য রফতানির শীর্ষে ছিল। দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে মেক্সিকোয়। সবমিলিয়ে ৫৭টি দেশে মার্কিন পণ্য রফতানি হয়েছে। গত বছর চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি ২১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ১১০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি থেকে আমদানি ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৫০ হাজার ৬৪০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে বেইজিংয়ের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ৩৫ হাজার ৫৩০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৩০ কোটি ডলার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো বেশি পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ‘ফেজ ১’ বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী বেইজিং আমদানি করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও ২০২১ সালের শেষ দিকে এ প্রতিশ্রুতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।