গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর ডেমরা ও হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভারতীয় জাল রুপিসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ । গ্রেফতারকৃতরা হলো- আমানুল্লাহ ভূঁইয়া, কাজল রেখা, ইয়াসিন আরাফাত কেরামত ও নোমানুর রহমান খান।
তাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ ভারতীয় রুপির জাল সুপার নোট এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সোম ও মঙ্গলবার গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর ডেমরা ও হাজারীবাগ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করে।
বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের নভেম্বরে খিলক্ষেত থানায় দায়েরকৃত সাত কোটি ৩৫ লাখ ভারতীয় জাল রুপি পাচার সংক্রান্ত একটি মামলা গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর এ মামলার তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। তদন্তে গ্রেফতারকৃত নোমানুর রহমান খানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
গত সোমবার গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের একটি টিম পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে নোমানুর রহমান খানকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত নোমান জানায়, পাকিস্তানে অবস্থানকারী তার ভাই মো. ফজলুর রহমান ওরফে ফরিদ বিভিন্ন সময়ে সেদেশ হতে আকাশ ও সমুদ্রপথে পণ্য সামগ্রী ও ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০ অথবা ১০০০) বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণ করে। সাম্প্রতিক সময়ে পাচারকৃত জাল রুপির বড় একটি চালানের এক অংশসহ তার ভাই সাইদুর রহমান, ইম্পোর্টার তালেব, সমন্বয়কারি ফাতেমা আক্তার ও অন্যান্যরা গ্রেফতার হয়েছে। বাকি অংশ হাজারীবাগের কাজল এবং আমানদের হেফাজতে রাখা হয়। গ্রেফতারকৃত নোমানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনেশ্বর রোড থেকে ইয়াসির আরাফাত ওরফে কেরামত এবং আমান উল্লাহ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ করে ১২ লাখ জাল রুপি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কেরামত ও আমান উল্লাহর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩ লাখ ভারতীয় জাল রুপিসহ কাজল রেখাকে গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ পাকিস্তান হতে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০ বা ১০০০) কৌশলে সংগ্রহ করে বিভিন্ন পণ্যের ভিতর, ব্যক্তি বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, জাল রুপি পাচারকারী এ চক্রের কেন্দ্রে আছে মূলত দু’টি পরিবার। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার একটি পরিবার। এই পরিবারের অধিকাংশ সদস্য একসময় পাকিস্তানে অবস্থান করতো। বর্তমানে এই পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফজলুর রহমান পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থান করে পাকিস্তান কেন্দ্রিক মাফিয়াদের কাছ থেকে উন্নত মানের জাল রুপি সংগ্রহ করত।
এরপর এসব জাল রুপি তিনি কখনো শুটকি মাছ, কখনো মোজাইক পাথর বা অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বস্তার মধ্যে করে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ প্রেরণ করতো। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতো তার ভাই সাইদুর রহমান, নোমানুর রহমান এবং ভগ্নীপতি শফিকুর রহমান। ইম্পোর্টারদের সাথে মিলে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের মাধ্যমে আনা হতো এসব জাল রুপি। পরবর্তীতে তা খালাস করে গোডাউনে মজুদ ও বিভিন্ন মাধ্যমে তা ডিলারদের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউশন করা হত।
গ্রেফতারকৃত আমান উল্লাহ ভূঁইয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সরকারি গাড়ি চালক। কাজলরেখা আমান উল্লাহ ভূঁইয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। তাদের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
সূত্র: বাসস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।