Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেতে পারে এমপি পদ হাজী সেলিমের ১০ বছর কারাদণ্ডের রায় প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৩৩ পিএম

ঢাকা-৭ আসন থেকে আওয়ামীলীগের এমপি হাজী মো: সেলিমের ১০ বছর কারাদণ্ডের রায় প্রকাশিত হয়েছে। বিচারপতি মো: মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের স্বাক্ষরের পর আজ (বুধবার) পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশিত হয়।

গতবছর ৯ মার্চ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজী মো: সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছরের কারদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
রায়ে জরিমানার টাকা অনাদায়ে হাজী মো: সেলিমকে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়। রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল করে হাজী মো: সেলিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পূর্ণাঙ্গ রায়েও এ কথা উল্লেখ রয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণ হাইকোর্ট বলেছে, রায়ের আগে বিচারপতিদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
এদিকে হাইকোর্টের এ রায় কার্যকর হলে সংবিধান অনুযায়ী হাজী সেলিমের এমপি পদ থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের অ্যাডভোকেট মো: খুরশীদ আলম খান।
কারণ বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো আইন প্রণেতা নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই কিংবা ততোধিক বছর কারাদ-ে দ-িত হলে এমপি পদে থাকার যোগ্য হবেন না এবং মুক্তি পাওয়ার পর ৫ বছর পর্যন্ত তিনি আর এমপি হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন না। খুরশীদ আলম খান বলেন, আমি মনে করি এটি তার (হাজী সেলিম) নৈতিক স্খলন। তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
গতবছর ৯ মার্চ রায় ঘোষণার পর খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, দুদক আইনে (২৬ এর ২ ধারা) করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ৩ বছরের কারাদ- দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কিন্তু দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদ- দেন। ওই অভিযোগে তার সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদ- দেন আদালত। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে যেসব সম্পত্তি নিয়ে এ সাজা দেয়া হয়েছে তা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিতে হবে।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেছিলেন উচ্চ আদালত। সে আদেশ অনুসারে নথি আসার পর আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
প্রসঙ্গত: ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদ- দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ