পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সাংবিধানিক পদাধিকারীদের সবার ওপরে রেখে এবং জেলা জজ ও সচিবদের মর্যাদা সমান করে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম সংশোধনের চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হয়েছে। জেলা জজরা বর্তমানে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ২৪ ক্রমিকে আছেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের ৬২ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বিষয়ে প্রকাশিত রায় লিখেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মো: মোজাম্মেল হোসেন। তার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন আহমেদ চৌধুরী।
এদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রায় প্রকাশিত হওয়ার পর বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ঢাকা জেলা জজ এস এম কুদ্দুস জামান এক প্রতিক্রিয়ায় ইনকিলাবকে বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় শিরোধার্য।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিষ্পত্তি করে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো: মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি এই রায় দিয়েছিল। রায়ে যা আছেÑ সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের শুরুতেই সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে। জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যরা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ২৪ নম্বর থেকে ১৬ নম্বরে সরকারের সচিবদের সমমর্যাদায় উন্নীত হবেন। জুডিশিয়াল সার্ভিসের সর্বোচ্চ পদ জেলা জজ। অন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে সচিবরা রয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যদের অবস্থান হবে জেলা জজদের ঠিক পরেই, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ১৭ নম্বরে। রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম কেবল রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্র বা অন্য কোনো কার্যক্রমে যেন এর ব্যবহার না হয়।
১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো: আতাউর রহমান একটি রিট আবেদন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় জেলা জজদের পদমর্যাদা সচিবদের নিচে দেখানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাÑ তা জানতে চেয়ে রুল দেয় হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দেয়া রায়ে আটটি নির্দেশনা দেয়। সে অনুসারে নতুন তালিকা তৈরি করতে সরকারকে ৬০ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত তা মঞ্জুর করে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সুযোগ দেয়। নিষ্পত্তির পর ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে বলা হয়, সংশোধন, পরিমার্জন ও পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করা হলো। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়ার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ বলেন, একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের ‘যথাযথ সম্মান’ দিতে বলা হয়েছে। যারা সাংবিধানিক পদাধিকারী, তাদের যেন অগ্রাধিকার দেয়া হয় অন্যান্য পদের ওপরে।
আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার শুনানি করেছিলেন আইনজীবী আব্দুর রব চৌধুরী। হাইকোর্টে রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও মো: আসাদুজ্জামান। আপিল বিভাগে রায়ের দিন আব্দুর রব চৌধুরী বলেছিলেন, এই রায়ের ফলে প্রধান বিচারপতি ৪ নম্বর ক্রম থেকে এক ধাপ উঠে স্পিকারের ক্রমে যাচ্ছেন। আর জেলা জজরা যাচ্ছেন সচিবদের সমান স্তরে। অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল সচিবদের ওপরে যাবেন। প্রধান বিচারপতি, জেলা জজ ও অ্যাটর্নি জেনারেলের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে একমত পোষণ করে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান সেদিন বলেছিলেন, আপিল বিভাগের বিচারকরা মন্ত্রীদের সঙ্গে থাকবেন। হাইকোর্টের বিচারকরা থাকবেন প্রতিমন্ত্রীদের সঙ্গে। অ্যাটর্নি জেনারেল সচিবদের ওপর, সাংসদরা তিন বাহিনীর প্রধান ও সচিবদের ওপরে থাকবেন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলরা সচিবের ঘরে অবস্থান করবেন। জেলা জজরা প্রজাতন্ত্রে নিয়োজিত সর্বোচ্চ কর্মকর্তার পদমর্যাদার সঙ্গে যাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।