বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় গত এক বছরে ১১ বছর ঊর্ধ্বের ৫০ ভাগেরও বেশী মানুষকে করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন প্রদান সম্ভব হলেও এখনো সংক্রমণ হার জাতীয় হারের চেয়ে ১০%-এর বেশী,৩২.০৫%। যা গত শনিবারে ছিল ৪৩.৫৩%। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, গত বছর ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে চলতি বছরের ৬ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত এক বছরে এ অঞ্চলের প্রায় ৫৬ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ এবং সাড়ে ৩৭ লাখ দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন করেছেন। এ অঞ্চলের ৬টি জেলা ও ৪২টি উপজেলা সদর ছাড়াও ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে গত জানুয়ারী মাস থেকে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। যা আগামী মাসের শেষভাগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে।
তবে প্রচার-প্রচারনা সহ স্থানীয় সরকার প্রশাসনগুলোর যথাযথ উদ্যোগ ও আগ্রহের অভাবে এখনো গ্রামেগঞ্জে ভ্যাকসিন গ্রহনকারীদের উপস্থিতি নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। তাদের মতে প্রতিদিন গড়ে ৪শ মানুষ ইপিআই কেন্দ্রে ভ্যাকসিন গ্রহনের জন্য আসার প্রাক্কলন করা হলেও উপস্থিতির সংখ্যা ১শরও কম। ফলে জেলা ও উপজেলা সদরের বাইরে আশানুরূপভাবে মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহন করছেন না। এক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বাইরে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা এড়িয়ে যাবার প্রবনতা বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল।
এদিকে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, ৬ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ধাপের প্রায় ৫৬ লাখ ডোজ টিকা প্রদান সম্ভব হলেও এসময়ে দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০%। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার ১১ উর্ধ বয়সের সংখ্যাটা প্রায় ৮৫ লাখ। সে নিরিখে ৩৭ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহনের ফলে প্রায় ৪৫ভাগ মানুষই করেনা ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩১ মার্চের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ৭০ ভাগ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আনার লক্ষ নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ হুমায়ুন শাহিন খান। তবে বিশষেজ্ঞ চিকিৎসকগন এলক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে আরো আন্তরিকতার সাথে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানে নিবিড়ভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তবে গত ১ জানুয়ারী থেকে দক্ষিণাঞ্চলেও বুষ্টার ডোজ প্রদানের কার্যক্রম শুরু হলেও এক্ষেত্রে অগ্রগিত কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌছেনি এখনো। ৬ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত বুষ্টার ডোজ সম্পন্ন করেছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। পাশাপাশি ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় পৌনে ৯ লাখ ছাত্রÑছাত্রী করোনা ভ্যাকেসিনের প্রথম ডোজ ও প্রায় ২.৬০ লাখ দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে বলা হয়েছে।
এদিকে সোমবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় ৮৮৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় আরো ২৮৪ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার গড় শনাক্তের হার আগের দিনের ৩৫.৩৩% থেকে ৩২.০৫%-এ হ্রাস পেলেও বরিশাল জেলায় শনাক্তের হার আগের দিনের ২৬.৪২ থেকে ৩৫.০৬%-এ বৃদ্ধি পেয়েছে । জেলাটিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩০৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১০৮ জনের দেহে করোনা পাজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় মোট করোনা সংক্রমন সংখ্যা দাড়াল ২০ হাজার ৫০২ জনে। মারা গেছেন ২৩২ জন। এরমধ্যে মহানগরীতেই গত ২৪ ঘন্টায় ৫৩ জন সহ এপর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ হাজারের কাছে। নগরীতে মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের।
গত ২৪ ঘন্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে ৪৮ জন। জেলাটিতে এ সময়ে ১২৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার অবশ্য আগের দিনের ৪৭.৩১% থেকে ৩৮.৭১%-এ হ্রাস পেলেও এখনো জেলাটিতে সংক্রমন হার দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ। জেলাটিতে ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৩৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনাÑবাগেরহাটের সীমান্তবর্তী পিরোজপুরেও গত ২৪ ঘন্টায় ১১৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪৬ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার আগের দিনের ৪৪.০৭% থেকে এসময়ে ৪০.৩৫%-এ হ্রাস পেলেও জেলাটিতে ইতোমধ্যে ৬ হাজার ১৩৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক মৃত্যু হারের বরগুনাতেও গত ২৪ ঘন্টায় ৯২ জনের মধ্যে ৩১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ৩৩.৭০%। যা গত শণিবারে ছিল ৪৫.৪৫% এবং রোববার ৪৩.৭৫%। জেলাটিতে ইতোমধ্যে ৪ হাজার ৩৫৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৯ জন মারা গেছেন।
দ্বীপজেলা ভোলাতেও গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ১৭.৮৩%। যা আগের দিন ছিল ৩০.৮৯% এবং শণিবারে ৩৬.২৩%। ভোলাতে ইতোমধ্যে ৭ হাজার ৬০৫ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতেও গত ২৪ ঘন্টায় ১ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এসময়ে জেলাটিতে শনাক্তের হার ছিল ২৫.২৭%। যা আগের দিন ছিল ৪৪%। ঐদিন মাত্র ৫০ জনের নমুনা পরিক্ষায় জেলাটিতে ২২ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। পটুয়াখালীতে এপর্যন্ত ৬ হাজার ৮৪০ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে গত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ২শ জন সহ এ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৫ হাজার ৯২১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।