Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেনে অভিযান চালাতে রাশিয়ার ৭০ ভাগ সামরিক সক্ষমতা তৈরি, বলছে যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:০৬ পিএম

সামনের সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে যে ধরণের সামরিক সক্ষমতা দরকার, রাশিয়া তার প্রায় ৭০ শতাংশ এখন জড়ো করে ফেলেছে বলে দাবি করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মাটিতে বরফ জমে গিয়ে তা শক্ত হয়ে যাবে এবং এর ফলে মস্কোর পক্ষে ভারী সামরিক যান নিয়ে আসা সহজ হবে, বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লাখের বেশি সৈন্য এনে জড়ো করেছে। তবে ইউক্রেনে কোন আক্রমণের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করছে রাশিয়া।

মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য তাদের দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ হাজির করেন নি। তারা কেবল বলছেন, গোয়েন্দা সূত্রে তারা এসব তথ্য পেয়েছেন, কিন্তু বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কারণে এর বেশি কিছু তারা জানাতে নারাজ। মার্কিন গণমাধ্যমকে ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এরকম একটি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কীনা, সেটা তারা জানেন না, তবে এই সংকটের কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হতে মার্চের শেষ পর্যন্ত যে ধরণের আবহাওয়া থাকবে তা রাশিয়াকে ভারী সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ দেবে।

ওই কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়ার এই অভিযানের কারণে ৫০ হাজার পর্যন্ত বেসামরিক মানুষ মারা যেতে পারে। তারা আরও অনুমান করছেন, এরকম একটি রুশ আক্রমণের মুখে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন ঘটবে কয়েকদিনের মধ্যেই। এর ফলে ইউরোপে এক বিরাট শরণার্থী সংকট দেখা দেবে, কারণ লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাবে।

এদিকে নেটোর শক্তি বাড়ানোর জন্য পোল্যান্ডে আরও মার্কিন সেনাদল এসে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এদের প্রথম দলটি গতকাল পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে রযেসযো শহরে এসে অবতরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, তারা পূর্ব ইউরোপে আরও তিন হাজার মার্কিন সেনা পাঠাবে। মস্কো দাবি করছে তাদের সেনাদলকে ঐ অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য। তবে ইউক্রেন এবং এর পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর আশংকা, ক্রেমলিন হয়তো কোন একটি আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।

রাশিয়া আট বছর আগে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয়ার পর এবং পূর্বদিকের ডনবাস অঞ্চলের বিদ্রোহীদের রক্তাক্ত বিদ্রোহে সমর্থন দেয়ার পর নতুন করে এই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মস্কো ইউক্রেনের সরকারের বিরুদ্ধে মিনস্ক চুক্তি মেনে না চলার অভিযোগ তুলেছে। পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই চুক্তি হয়েছিল। পূর্ব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে ২০১৪ সালের পর থেকে যুদ্ধে এপর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

রাশিয়া দাবি জানাচ্ছে, ইউক্রেনকে যেন নেটো জোটে নেয়া না হয়। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় হতে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র আছে এই দুটি দেশের হাতেই। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউক্রেন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ