Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শ্রম ঘাটতিতে জাপান, বিদেশী কর্মীর সংখ্যা চার গুণ বাড়াতে পরামর্শ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:৩৪ পিএম

দ্রুত জনসংখ্যা কমছে জাপানে। নিম্ন জন্মহারের কারণে দেড় দশক ধরে দেশটির জনসংখ্যা নিম্নমুখী। ফলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি শ্রম ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জাপান। এ লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি রূপরেখা ঘোষণা করেছে ফুমিও কিশিদার সরকার। এ অবস্থায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেশটিকে বিদেশী কর্মীর সংখ্যা চার গুণ বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছে টোকিওভিত্তিক একটি পাবলিক থিংক ট্যাংক। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাটি সংকুচিত জনসংখ্যার জন্য অভিবাসী শ্রমের ওপর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান নির্ভরতাকে তুলে ধরে। খবর রয়টার্স।
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছে জাপান। ফলে ছাত্র ও শ্রমিকদের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদেশী প্রতিভা আকর্ষণ নিয়ে দেশটির এ সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্ত জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) গবেষণা শাখা জানিয়েছে, সরকার দীর্ঘমেয়াদি প্রাক্কলনে গড় বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৪ শতাংশ ধরে রাখতে চায়। তবে এর জন্য সরকারকে ২০৪০ সালের মধ্যে বিদেশী কর্মী সংখ্যা ৬৭ লাখ ৪০ হাজারে উন্নীত করতে হবে।
বিদেশী কর্মীর এ সংখ্যা বর্তমানের ১৭ লাখ ২০ হাজারের চেয়ে প্রায় ৩০০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বিদেশী কর্মীরা জাপানের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
গবেষণাটির বিষয়ে জাইকার প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকা বলেন, আমাদের অবশ্যই বিদেশী কর্মী নেয়ার বিষয়ে আরো বেশি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে চীনের মতো দেশের বিরুদ্ধে শ্রমশক্তি নিয়ে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এ অবস্থায় জাপানকে দীর্ঘমেয়াদে আকর্ষণীয় করে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে।
সমীক্ষাটিতে বলা হয়েছে, আগামী দুই দশকের মধ্যে জাপান ১০ শতাংশেরও বেশি গৃহকর্মী হারাবে। দেশটির জনসংখ্যা ২০০৮ সালে চূড়া স্পর্শ করেছিল। এরপর থেকে কম জন্মহারের কারণে জনসংখ্যা নিম্নমুখী। গত বছরের হিসাবে এশীয় দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখে নেমেছে। এ পরিস্থিতিতে বার্ধক্যজনিত কারণে দেশটির কর্মজীবী জনসংখ্যা দ্রুত সংকুচিত হচ্ছে। গবেষণাটিতে শেয়ারের পরিমাণও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। অটোমেশন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের কারণে বছরে এ শেয়ার ১ শতাংশ হারে বাড়তে থাকবে বলে ধারণা করা হয়েছে।
সাধারণতভাবে বিদেশী কর্মী ও অভিবাসনের প্রশ্নটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে সংবেদনশীল ছিল। দেশটিতে জাতিগত একতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। আর এক্ষেত্রে বিদেশী কর্মী ও অভিবাসনের বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে দেখা হয়। তবে শ্রম ঘাটতি মোকাবেলায় প্রতিনিয়ত সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেয়ার চাপ বাড়ছে। পাশাপাশি কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ, খনি ও রক্ষণাবেক্ষণের মতো কঠোর কায়িক শ্রমে নিয়োজিত শ্রমিকের অভাব জাপান সরকারকে নতুন ভিসা বিভাগ তৈরিতে প্ররোচিত করেছে।
জাপানের প্রায় অর্ধেক বিদেশী শ্রমিক ভিয়েতনাম ও চীন থেকে আসেন। থিংক ট্যাংকটি জানিয়েছে, তারা আশা করছে যে আগামী দুই দশকে কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের মতো স্থান থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে।
জাইকার গবেষণা শাখা বলেছে, বর্তমান অভিবাসন ব্যবস্থার অধীনে চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে শ্রমিকের সরবরাহ পাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য জাপানকে আরো দীর্ঘমেয়াদি ভিসা উন্মুক্তের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। কভিডজনিত কারণে বিদেশী প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এ ব্যবস্থা বিদেশী প্রতিভার জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে জাপান তার খ্যাতি হারাতে পারে। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ