গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে আজ ৩ ফেব্রুয়ারি ইউআইসিসি'র গর্বিত সদস্য 'কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট', বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম ও মার্চ ফর মাদার মোর্চা-এর যৌথ উদ্যোগে বিকাল ৩টায় হাইব্রিড (ভার্চুয়াল ও সশরীরে) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার থেকে সরাসরি লাইভে প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয় ।
"ক্যান্সারের আর্থ- সামাজিক প্রভাব ও সবার জন্য ক্যান্সার সেবা" শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লতিফা শামসুদ্দিন, গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ, রাজশাহী ক্যানসার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস ও ক্যান্সার রোগতত্ত্ববিদ ডা. মোঃ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার স্বপন কুমার বন্দোপাধ্যায়।
বক্তারা যে বিষয়গুলোর উপর জোর দেন-
১. বাংলাদেশ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে অন্যান্য রোগের মত ক্যানসার সেবা জনগনের জন্য মিশ্চিত করার অঙ্গীকার আছে। আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার রোগী নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়,এবং প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার রোগী মারা যায়।
২. তবে বিপুল জনসংখ্যার এ দেশে শুধু সরকারের পক্ষে এটা সম্ভব না। বক্তারা একটি জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্র, কর্ম পরিকল্পনা ও কর্মসূচী প্রণয়ন করে এর আওতায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কর্মসূচী ও পেশাজীবী, স্বেচ্ছাসেবী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গুলিকে সম্পৃক্ত করে সম্মিলিত প্রয়াসে এগিয়ে যেতে হবে।
৩. সঠিক পরিকল্পনার জন্য সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। একমাত্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট এ হাসপাতালভিত্তিক নিবন্ধন চালু আছে কিন্তু জনগোষ্ঠী ভিত্তিক নিবন্ধন এখনো চালু করা যায় নাই। এ কারণে দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের হার মৃত্যুর হার সহ গুরুত্বপূর্ণ নিজস্ব পরিসংখ্যান নাই। সভায় জরুরি ভিত্তিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে পপুলেশন বেইজড ক্যান্সার রেজিস্ট্রি চালুর মতামত দেয়া হয়।
৪. ক্যান্সার চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে ৮ টি বিভাগীয় শহরে পূর্নাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। তবে অনুমিত ক্যান্সার রোগীর এক তৃতীয়াংশ বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংযুক্ত হয় বলে একটি জরিপে দেখা গিয়েছে। বাকিদের-কে স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও স্বল্প চিকিৎসায় সুস্থ করা সম্ভব।
৫. বাংলাদেশে কোন জাতীয় ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচী নাই। বিএসএমএমইউ এর একটি প্রকল্পের অধীনে স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং চলছে। বক্তারা জাতীয়ভাবে স্তন, জরায়ুমুখ ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার অন্তর্ভুক্ত করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত উপযুক্ত পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিজ্ঞানসম্মত সংগঠিত কর্মসূচি চালুর উপর জোর দেন। এজন্য সরকারের জাতীয় প্রতিষ্ঠান ও এর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরিচালনা ও তদারকির সাথে যুক্ত করার আহবান জানান।
৬. ক্যান্সারের প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য হেপাটাইটিস বি ও হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে টীকাদান ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাত্রায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নেয়া দরকার বলে মনে করেন।
৭. রোটারি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক ক্যান্সার সেবা প্রদানকারী সংগঠনগুলোকে জাতীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা দরকার।
৮. ক্যান্সার সোসাইটি, ক্যান্সার ফাউন্ডেশন, কমিউনিটি অংকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট, স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের মত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ওজিএসবি-সহ ক্যান্সার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে প্রতিরোধ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা উচিত।
৯. দেশের ধনবান বিত্তবান ব্যক্তিবর্গকে মানবসেবায় অলাভজনক ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে তোলা ও বেসরকারি ক্যান্সার হাসপাতালগুলির শতকরা ১০ভাগ সেবা গরীব ও দুঃস্থ রোগীকে বিনামূল্যে দেয়ার আহ্বান জানান সবাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।