Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মু’মিন ব্যক্তি বিশ্বাসগত শান্তির প্রতীক-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

আরবী ‘আল মু’মিনু’ শব্দটি এর মূল ধাতু ‘আমনুন’ শব্দ হতে উৎসারিত। ইহার অভিধানিক অর্থ হলো যে বিশ্বাস করে, যে স্বীকার করে অথবা যে স্বীকৃতি দেয়। পারিভাষিক অর্থ হলো- আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপনকারী। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের পক্ষ থেকে নবী রাসূলগণ যে হেদায়েত ও পথনির্দেশনা নিয়ে আগমন করেছেন তাকে আন্তরিকভাবে সত্য বলে গ্রহণ করা, মুখে এর স্বীকৃতি প্রদান করা এবং সে মোতাবেক কাজ করাকে ঈমান বলা হয়। আর যে ব্যক্তি এ ঈমানের ঘোষণা দেয় সে-ই মু’মিন। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়-আল্লাহপাক এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর রাসূল, ফিরিশতা, কিতাব, আখিরাত এবং তাকদীরের ওপর আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপনকারীকে মু’মিন বলা হয়।

প্রকৃত মু’মিনের বৈশিষ্ট্য ও পরিচিতি আল্ কোরআন ও সুন্নাতে নাবুবীতে সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করা হয়েছে। যথা (ক) ইরশাদ হয়েছে : ‘মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করেনি। আর নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। এরাই সত্যনিষ্ঠ। (সূরা হুযুরাত : আয়াত-১৫)।

(খ) ইরশাদ হয়েছে : ‘মুমিন তো তারাই, যাদের অন্তরসমূহ উদ্বেল হয়ে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের ওপর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তা’ তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং যারা তাদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করে।’ (সূরা আনফাল : আয়াত-২)।

(গ) অবশ্যই মুমিনগণ সফলকাম, যারা নিজেদের নামাজে বিনয় নম্র, যারা অনর্থক কথাবার্তা এড়িয়ে চলে, যারা যাকাত আদায়ে সচেতন, যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে, তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না, অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালঙ্ঘনকারী হবে, এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকে, এবং যারা তাদের নামাজসমূহের হেফাজত করে, তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে, তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে, তারা তাতে চিরকাল থাকবে। (সূরা মু’মিনুন : আয়াত-১-১১)।

(ঘ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত আকাক্সিক্ষত মানের মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার নিজের প্রবৃত্তি (খেয়াল-খুশী) আমার আনীত আদর্শের আনুসারী হয়। (মিশকাত শরীফ, হাদীস-১/১৫)।

(ঙ) হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ আমি তার কাছে তার পিতামাতা সন্তান-সন্ততি, এবং অন্যান্য সকল মানুষের চেয়ে প্রিয় না হব। (সহীহ বুখারী শরীফ, হাদীস ১/১৫)।



 

Show all comments
  • মমতাজ আহমেদ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:২৪ এএম says : 0
    আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদাতের জন্য। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না।’ যিনি পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করেন তিনিই মুমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • আনোয়ারুল কাইয়ূম কাজল ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:২৪ এএম says : 0
    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে প্রকৃত মুমিন হওয়ার তৌফিক দান করুক। আমীন।
    Total Reply(0) Reply
  • জব্বার ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:২৬ এএম says : 0
    মুসলিম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে রব, ইসলামকে দ্বীন ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী ও রাসুল হিসেবে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসসহ অন্য শর্তগুলো মেনে চলে। ইমানের ভিত্তির ওপর জীবন পরিচালিত করে, যা তাকে আচার-ব্যবহার, চলাফেরা, উদ্দেশ্য-লক্ষ্য ও লেনদেন সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়। ইসলামের বিধানমতে প্রতিষ্ঠিত হয় তার জীবন-জীবিকা ও সময়। নির্ধারিত হয় তার দৃষ্টিভঙ্গি, কাজকর্ম। যাতে কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও বিভ্রান্তি নেই। ইসলাম এ বিষয়টির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে; কেননা জীবনে মানুষের চলার সূচনা কী হবে সেটা একমাত্র ইসলামই নির্ধারণ করতে পারে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সুতরাং তুমি জেনে রাখো, আল্লাহ ছাড়া (প্রকৃত) কোনো মাবুদ নেই, ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য।’ সুরা মুহাম্মদ : ১৯
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন