বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আরিচা সংবাদদাতা : নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় শিবালয়ে দরিদ্র জেলে পরিবারগুলোতে চলছে দুর্দিন। সরকারী নিষেধাজ্ঞার ২০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও সরকারী কোন সহায়তা পায়নি জেলেরা। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটছে তাদের। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কেউ কেউ বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছে, আবার কেউ কেউ জাল বুনানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
জানা গেছে, ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নদীতে ইলিশ মাছ ধরা, বেচাকেনা ও মওজুদের ওপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসময়ে অন্যান্য জেলায় জেলেদের জন্য ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু মানিকগঞ্জে এ রকম কোন বরাদ্দ না থাকায় শিবালয়ের জেলেদেরকে অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে। মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে পদ্মা-যমুনা নদী প্রবাহিত। শিবালয় উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। মাছ ধরতে না পাড়ায় শত অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে এদের দিন কাটলেও দেখার কেউ নেই।
এদিকে সরকারী সহায়তা দেয়ার কথা বলে ইউপি সদস্যরা জেলেদের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড ও নাম ঠিকানা নেয়ে গেছে। কিন্তু অদ্যবধিও জেলেরা মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে সরকারী কোন সহায়তা পায়নি। এতে অনেকেই নদীতে মাছ ধরতে না পেরে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে।
শিবালয় উপজেলার শুধু তেওতা ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ পালপাড়া, ঢালা, তেওতা ও কৃষ্ণপুরসহ বিভিন্ন এলাকাতে রয়েছে প্রায় ১১/১২শ’ জেলে পরিবার। নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এসব জেলে পরিবারগুলোতে চলছে দুর্দিন। সরকারী সহায়তা তারা এখনও পায়নি।
শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের ধীরেন হলদার (৫০) বলেন, শুনেছি মাছ ধরা বন্ধের জন্য সরকার নাকি আমাদেরকে চাল দেবে। মেম্বার আমাদের নাম লিস্ট করে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিছে গেছে। কিন্তু আজ পর্যন্তও আমরা চাল পাইনি। তিন ছেলে ও ছেলের বউসহ ছয়জনের সংসার। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় নদীতে যেতে পারতেছিনা। এমনিতেই অভাবের সংসার তার পর মাছ ধরা বন্ধ। ফলে অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হইতেছে।
কৃষ্ণপুর গ্রামের নিরঞ্জন হলদার (৫৮) জানান, তার একটি নৌকা রয়েছে। সে শুধু নদীতে মাছ ধরে তিনজনের সংসার পরিচালনা করেন। তার সাথে আরো ১৩ জন জেলে রয়েছে। তাদের সংসারের আয়ের একমাত্র উৎসই হচ্ছে নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করা। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে তারা বেকার-অলস দিন কাটাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে যারা মাছ ধরছে তারা প্রকৃত জেলে না। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে মৌসুমী জেলে। এরা শুধু নিষেধাজ্ঞার এ কয়দিন নদীতে মাছ ধরে মোটা অংকের টাকা কামিয়ে কেটে পড়বে। প্রকৃত জেলে যারা তারা মাছ ধরা তো দূরের কথা পুলিশের ভয়ে তারা নদীতেই নামছে না। এ পর্যন্ত প্রশাসনের হাতে যারা ধরা পড়েছে তাদের অধিকাংশই মৌসুমী জেলে।
একই গ্রামের কার্তিক হলদার, গৌতম হলদার , দীনুবন্ধু হলদার ও পতিত হলদারসহ অনেকেই বলেন, মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সরকার আমাদেরকে চাল দিবে শুনেছি। কিন্তু তা এখনও পাইনি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হতে চলেছে, চাল কবে পাব তা বলতে পারছি না।
এব্যাপারে শিবালয়ের মৎস্য কর্মকর্তা রফিকুল আলম বলেন, মাছ ধরা বন্ধের এ সময়ে অন্যান্য জেলার মত আমাদের এখানে সরকারী সহায়তার কোন বরাদ্দ নেই। এখানে শুধু জাটকা নিধন বন্ধের সময় মার্চ মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত চার মাস ২০৬ জন গরিব, দুস্থ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।