পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পাচার রোধে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ না দিলে হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হয়ে যেত।
গতকাল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশি রফতানিকারকরা তাদের রফতানির একটি অংশ বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবে এমন সুযোগ রেখে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বিনিয়োগ করা অন্যায় কিছু নয়। যদি অনুমোদন না করেন এটা হুন্ডির মাধ্যমে চলে যাবে বিভিন্ন দেশে। তার চেয়ে অফিসিয়ালি অনুমোদন করা ভালো। তবে ঢালাওভাবে সুযোগ দেয়া হয়নি। যারা এক্সপোর্ট করেন, যাদের রিটেনশন মানি রয়েছে তার ২০ শতাংশ বা নিট অ্যাসেটের ভিত্তিতে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, এটা একটা ভাল উদ্যোগ। আমাদের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা বেড়েছে। দেশের মানুষ এখন অনেক ইনোভেটিভ। দেশ এখন স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন যদি অ্যালাও না করা হয়, আমরা অন্যান্য দেশ থেকে পিছিয়ে পড়বো।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারের প্রাক্কলন চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। তবে আইএমএফ’র প্রক্ষেপণ ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। আইএমএফ সব সময় রক্ষণশীল প্রক্ষেপণ করে থাকে। তবে আমার বিশ্বাস, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। চলতি অর্থবছরে অর্থনীতির আকার ৪৫৫ বিলিয়ন ডলার হবে, এর মাধ্যমে অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইল ফলক অতিক্রম করতে পারবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ আমাদের ওঠানামা করবে, যখন আমরা আমদানি বেশি করি তখন রিজার্ভ থেকেই সেটা ব্যয় করতে হয়। রিজার্ভ কীভাবে হয়? যখন আমরা রফতানি করি তখন সেই রফতানির ফলে অর্জিত অর্থ চলে যায় বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে। তাদের নির্দিষ্ট লিমিট থাকে, এর বেশি তারা বৈদেশিক মুদ্রা রাখতে পারে না। তখন তাদের বিক্রি করতে হয়, বিক্রি করলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা কিনে নেয়। সেভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ বাড়ে। যেমনি ভাবে রফতানি তেমনি ভাবে রেমিট্যান্স। কারণ রেমিট্যান্স যখন বেশি আসে তখন সেটি চলে যায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কাছে। ব্যাংকগুলো তা বিক্রির জন্য দারস্থ হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলো কিনে নিয়ে তাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ বৃদ্ধি করে।
তিনি বলেন, আমরা এখন বিপুল অংকের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে রিজার্ভ কিছুটা ওঠানামা করে, আমরা পেমেন্ট করলে কিছুটা কমে। এখন যে ৪৫ থেকে ৪৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠানামা করছে এটা ঠিক আছে। আমরা যদি পেমেন্ট না করতাম তাহলে বহু আগেই আমাদের ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতো। আমি মনে করি আমাদের হবে, আমরা এভাবে করতে করতে এগুবো।
আগামী অর্থবছর দেশের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ৮৯ মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমার যে পূর্বাভাস দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছেন এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাবে কীসের ভিত্তিতে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ বছর জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২।
জিডিপি বৃদ্ধির ফলে ২০ শতাংশের বেশি মানুষকে সহায়তা করছে। এ ধরনের জিডিপি আর কতদিন গ্রহণ করবো এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নতি হলে জিডিপি বাড়বে। জিডিপিতে শুধুমাত্র দেশের উন্নয়ন থাকে না, আপনি যে বাজারে জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন সেগুলোও জিডিপিতে যায়। সুতরাং কেবলমাত্র রাস্তাঘাট জিডিপিতে আসে না। জিডিপিতে জনগণের তাদের আয়-ব্যয় সব কিছুই সেখানে আসে। শুধুমাত্র রেমিট্যান্স থেকে যে আয় করি সেই আয়টি আমাদের জিডিপিতে যায় না, কিন্তু আমাদের মাথাপিছু আয় এখানে আসে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রেমিট্যান্সও বাড়তি, রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক আছে। সেখানেও প্রবৃদ্ধি আছে। জিডিপিতেও প্রবৃদ্ধি আছে। মানুষ বাদ যাবে কিভাবে? আমরা যদি সামষ্টিকভাবে আমাদের সব জিনিস একসঙ্গে দেখার চেষ্টা করি তাহলে আমরা বুঝবো আমাদের দেশের ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে ব্যবধান যেটা ছিল, সেটি থাকারও কোনো কারণ নাই। সেই ব্যবধান নিরসনের জন্য সরকারের যাকিছু করণীয় সেগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন করে যায়।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের ইনকাম ইক্যুইটি ঠিক রাখতে সরকারের কাছে কিছু বিষয় থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে আমাদের ট্যাক্সেশন সিস্টেম। যে যতো বেশি আয় করবে তার ট্যাক্স হবে ততো বেশি। যারা ট্যাক্স দেন না তাদের জন্য স্যোসাল সেফটিনেট আছে। সেখানেও তারা বেনিফিটেড হচ্ছেন। আমি মনে করি এভাবেই সারা বিশ্বের অর্থনীতি চলে, আমাদেরও সেভাবেই চলছে। আমি মনে করি আমরা যেভাবে এগুচ্ছি তাতে জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিলে, উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম ভেদাভেট থাকবে না, শহর এবং গ্রামের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। আমাদের স্বপ্ন ২০৩০ সালের মধ্যে এগুলোর বাস্তয়ন নিশ্চয়ই হবে ইনশাল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।