Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অবাধে কাটা হচ্ছে বালু-মাটি

ঘটনাস্থল ইসলামপুরের যমুনা নদী তীরবর্তী এলাকা

ফিরোজ খান লোহানী, ইসলামপুর (জামালপুর) থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

সকল বিধি-নিষেধ অমান্য করে যমুনায় জেগে ওঠা নতুন চর থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। আতঙ্কে রয়েছে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া বাজার, কড়িরতাইড়, রাজ নগর, রামভদ্রা নতুন পাড়ার হাজার হাজার মানুষসহ উলিয়া বাজার এ.এম উচ্চ বিদ্যালয়, উলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উলিয়া বাজার নূরানী হাফেজিয়া মাদরাসা ও ২০০৩ সালের ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রক্ষা বাঁধটি। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা যমুনা তীরবর্তী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উলিয়া, কড়িরতাইড়, রাজনগর, রামভদ্রা নতুন পাড়া যমুনা নদী তীরবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছে একদল মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এতে আগাম বর্ষা-মৌসুমে পানি ঢুকে ওইসব এলাকায় বড় বড় গর্তে পানি ঘূর্ণায়বর্তার সৃষ্টির কারণে জেগে উঠা নতুন চর আবারও ভাঙনের সৃষ্টি হবে বলে অভিজ্ঞদের ধারণা। ফলে জেগে ওঠা নতুন চরে মানুষ বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে কোন মতে জীবন ধারণ করতে পেয়ে আশায় বুক বেঁধে ছিল। একদল বালু ও মাটি সিন্ডিকেট মাটি কেটে নিয়ে তাদের আশার বুক ভেঙে চুরমার করে দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জেগে উঠা নতুন চরে মানুষ চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। একজন ভুক্তভোগী জানান, আমার বাপ-দাদার যে জমি ছিল বিগত দিনে রাক্ষুসী যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়। আমরা দিন মজুরী করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছি। এখন জেগে উঠা চরে আমাদের জমিতে পলিমাটি পড়ে আবাদযোগ্য হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ফসলাদি ফলিয়ে ছেলে পুলে নিয়ে কোন রকম দিনযাপন করছি।

জানা যায়, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাদল ২০১৩ সালে হাড়গিলা বাজার সংলগ্ন এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে এলাকার সকল পেশাজীবী, শিক্ষক, ছাত্র, কৃষক, বিভিন্ন এনজিও’র সহযোগিতায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকায় বাঁধের নির্মাণ কাজ চলমান থাকাবস্থায় ২০১৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পায়। ভাটিতে বাঁধটি নির্মাণ হওয়ায় উজানে উলিয়া-কড়িরতাইড়, রাজনগর, রামভদ্রা নতুন পাড়া যমুনার বুকে চর পড়ে আবাদী জমিতে পরিণত হয়। মানুষ আশার আলো দেখতে পায। যমুনায় জেগে উঠা নতুন চর থেকে বর্তমান চেয়ারম্যানের ছেলে খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে সকাল-সন্ধ্যা মাহিন্দ্র ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাক্টর, ভটভটি ও অন্যান্য শত শত যানবাহন দিয়ে বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান সুরুজ্জামানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার ছেলে একা নয়, আরোও অনেকেই মাহিন্দ্র ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাক্টর, ভটভটি ও অন্যান্য যানবাহন দিয়ে শত শত গাড়ি বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছে। শুধু আমার ছেলের একার দোষ কিভাবে হয় বুঝি না। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খানকে ফোনে বালু ও মাটি কাটা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবাধে কাটা হচ্ছে বালু-মাটি

৩১ জানুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ