Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ঠকছে চাষি ও ক্রেতা

দামুড়হুদা ও উখিয়ার বাজারে শীতের শাক-সবজি

প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অভ্যন্তরীণ ডেস্ক

মধ্যস্বত্ব¡ভোগীদের দৌরাত্ম্যে ক্ষেতে উৎপাদিত শাক-সবজির মূল্য পাচ্ছে না চাষিরা। অন্যদিকে বাজারে পর্যাপ্ত শাক-সবজি থাক সত্ত্বে¡ও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাকে। এ সংক্রান্ত আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট-
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দামুড়হুদার বিভিন্ন হাটে-বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের শাক-সবজি। বাজারে যথেষ্ট সরবরাহ থাকলেও দাম বেশি। নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের সাথে চড়া দামের তরিতরকারি কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে স্বল্প আয়ের মানুষের। নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যসহ শাক-সবজির বাজারদরে সরকারিভাবে কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বিক্রেতাদের ইচ্ছেমত দরে জিনিসপত্র বিক্রি করার অভিযোগ। সবজির বাজারে পাইকারি ও খুচরা মূল্যের মধ্যেও দেখা যায় বিস্তর ফারাক। মধ্যস্বত্ব¡ভোগী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাষিদের কাছ থেকে কম দামে কিনে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে বেশি দামে। দেখা যায়, একজন কৃষক দীর্ঘসময় ধরে নানান ঝুঁকি নিয়ে নগদ টাকা খরচ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সবজি উৎপাদন করে আশানুরূপভাবে লাভবান হতে না পারলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে শুধু পুঁজি খাটিয়ে চাষিদের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি লাভ করছে। অপরদিকে ভোক্তা সাধারণও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে এসব শাক-সবজি কিনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলার দর্শনার পুরাতন বাজার ও রেলবাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে, প্রতি কেজি আলু ২৪টাকা, বেগুন ৪৫টাকা, মূলা ২৫টাকা, ফুলকপি ৫০টাকা, বাঁধাকপি ৪০টাকা, শিম ১০০টাকা, কাঁচকলা ৩০টাকা, ঢেঁড়স ৪০টাকা, কচু ১৫টাকা, পটল ৩০টাকা, করলা ৪০টাকা, উচ্ছে ৬০টাকা, ঝিঙ্গে ২৫টাকা, চিচিংগা ২০টাকা, পুঁইশাক ২০টাকা, কচুরলতি ৩০টাকা, ওল ৩০টাকা, পেঁপে ১৫টাকা, শশা ৩০টাকা, টমেটো ৭০, কাকরোল ৩০টাকা, বরবটি ৩০টাকা, ধোন্দল ২০টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০টাকা, জলপাই ২০টাকা, এছাড়াও প্রতি আঁটি পালংশাক ৮টাকা, লাল শাক ৬টাকা, প্রতিটি লাউ ২০টাকা, কাঁচা চালকুমড়া ২০টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত রমজান মাস থেকে শুরু করে ঈদুল ফিতরের পরও প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছিল মাত্র ৮০টাকায়। ঈদুল আজহার এক সপ্তাহ আগে থেকে দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১৮০ থেকে ২০০টাকা। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৬০টাকায়। ওই একই সময়ে ৮০ টাকা কেজি আদারও দাম বেড়ে দাঁড়ায় ২০০টাকা যা বর্তমানে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার হাটবাজারগুলোতে শাকসবজি, কাঁচা তরিতরকারির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আশক্সক্ষাজনকভাবে। শুধু তাই নয়, হাটবাজারে শাক-সবজির আকাল দেখা দেয়ার কারণে ক্রেতাসাধারণকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দাম, পোহাতে হচ্ছে সবজি সংকটের দুর্ভোগ। বিক্রেতারা বলছে, সরবরাহ না থাকার কারণে সবজির বাজারে আকাল দেখা দিয়েছে। কয়েকটি দোকানে কিছু পরিমাণ সবজি থাকলেও দাম চাওয়া হচ্ছে আকাশচুম্বী। সোমবার উখিয়ায় সবজির বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত দারোগা বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। সবজি বিক্রেতা নুর আহমদ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সবজি সংকট চলছেই। দোহাজারী-সাতকানিয়া থেকে যেসব সবজি উখিয়া-টেকনাফের হাটবাজারে সরবরাহ করা হত ওইসব সবজির আড়তে এখন সবজি নেই। যে কারণে প্রতিটি হাটবাজারে সবজি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সবজি বিক্রেতা শামশুল আলম জানায়, বর্তমানে বাজারে যেসব সবজি মিলছে, এসব সবজির মধ্যে একমাত্র টমেটো ব্যতীত অন্য সবজি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত। যা চাহিদার তুলানায় অতি নগণ্য। এখানকার হাটবাজারগুলোতে বর্তমানে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৫০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা। এর বাইরে একমাত্র ৩০/৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে আলু। একইভাবে মাছবাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে বসে আছে। ক্রেতাশূন্য বাজারে মাছের আকাল দেখা দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে মাছ ব্যবসায়ী ফরিদ আলম জানান, সাগরে ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ঘটনায় বাজারে মাছ সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, এখানে যে সকল মাছ বিক্রি হচ্ছে তা স্থানীয় মৎস্য খামারে উৎপাদিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাল-নদীর মাছ পাওয়া গেলেও দাম চাওয়া হচ্ছে বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ঠকছে চাষি ও ক্রেতা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ