বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন গত বছরের মহামারী সময়ের পর্যায়ে পৌছলেও সরকারী হাসপাতালগুলোর করোনা ওয়ার্ডে রোগীর আকাল চলছে। চলতি মাসের শুরুতে স্বাস্থ্য বিভাগ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৭১টি আইসিইউ সহ করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রায় ৭শ বেড প্রস্তুত করে রাখলেও চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৫০ জনেরও কম । মূলত অমিক্রনে তীব্রতা কম হবার সাথে করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন গ্রহনের কারনেই আক্রান্তেদের গুরুতর উপসর্গ না থাকায় সহসা কেউ হাসপাতাল মুখি হচ্ছেন না বলেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন। এমনকি এখন বেশীরভাগ আক্রান্তই নমুনা পরিক্ষা করাচ্ছেন না বলেও মনে করছেন চিকিৎসকগন।
অপরদিকে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় শণিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নমুনা পরিক্ষা তলানীতে ঠেকায় মাত্র ৮৯ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যা আগের দিন ছিল ৫০৩। তবে দক্ষিণাঞ্চলে গড় শনাক্তের হার ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫%-এ পৌছলেও পিরোজপুরে গত বুধবারে তা ছিল ৬৪.৯৫%। একই দিন বরগুনাতে ৪৮.৮৪%, বরিশালে ৪৪.৯৫%, ঝালকাঠীতে ৪০%, পটুয়াখালীতে ২৭.৬৯% এবং ভোলাতে এ হার ছিল ২৭.৬৯%।
এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলে এপর্যন্ত ৪৭ হাজার ৮০১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হলেও এপর্যন্ত সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ১৩ জন । যারমধ্যে বরিশালের শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডেই এপর্যন্ত ২ হাজার ৩৭৫ জন ভর্তি হয়েছে। তবে এ হাসপাতালের আইসোলেশনে করোনার উপসর্গ নিয়ে আরো ৭ হাজার ৫১১ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এ অঞ্চলে সর্বমোট প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার রোগী ভর্তি হলেও ইতোমধ্যে প্রায় সবাই বাড়ি ফিরেছেন। এরমধ্যে শুধুমাত্র শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডেই ৭ হাজার ৫১১ জন ভর্তি হলেও তাদেরও প্রায় সুবাই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
এমনকি গত ১০ জানুয়ারীর পরে বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই করোনা আবার থাবা বসালেও সে তুলনায় হাসপাতালগুরোতে তেমন কেউ ভর্তি হচ্ছেন না। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ২৪০ সাধারন বেড ছাড়াও ৬০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড মিলে রোগীর সংখ্যা এখন ৩০-এরও কম। গত ২৪ ঘন্টায় এ অঞ্চলের ৬টি জেলা ও ৩৮টি উপজেলা হাপসাতালের করোনা ওয়ার্ড গুলোতে নতুন কোন রোগী ভর্তি হয়নি বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
তবে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুত রয়েছে বলে কতৃপক্ষ জানিয়েছেন। কিন্তু এ অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে এখনো চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট রয়েছে। এ অঞ্চলে সর্বমোট ভেন্টিলেটরের সংখ্যা এখনো মাত্র ২২ টি। যার ১১টি বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ নগরীর জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও পিরোজপুর ও ঝালকাঠী জেলা হাসপাতালে কোন ভেনিল্টের নেই। এছাড়া বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ২টি, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি ও ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ৫টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। অতি প্রয়োজনীয় এ ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট-এর অভাবে গতবছর মুমুর্ষ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় যথেষ্ঠ সংকট দেখা দেয়।
দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে মুমুর্ষ করোনা রোগীদের চিকিৎসার আরেক জরুরী প্রয়োজনীয় সামগ্রী ‘হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা’র সংখ্যাও মাত্র ১১১টি। যারমধ্যে বরিশাল শের বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৭টি থাকলেও মহানগরীর জেনারেল হাসপাতালে এ সংখ্যা মাত্র দুটি। এছাড়া পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঝালকাঠী জেনারেল হাসপাতালেও মাত্র দুটি করে ‘হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা’ রয়েছে । বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এর সংখ্যা ১২টি হলেও পিরোজপুরে ৭টি এবং ভোলাতে রয়েছে মাত্র ৯টি। এছাড়া বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি ছাড়াও পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ, দুমকি ও দশমিনা ও পিরোজপুরের ভান্ডরিয়াতে ১টি করে ‘হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা’ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ অঞ্চলের ৫টি জেনারেল হাসপাতাল এবং বরিশাল শের এ বাংলা ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্বমোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে ১ হাজার ৬৮১টি। এ অঞ্চলের দুটি মেডিকেল হাসপাতাল সহ সবগুলো জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল এবং ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাবস্থা চালু করা হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলেল ৬টি জেচলায় অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে মাত্র ৫২ টি।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে যে ৮৯ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে মহানগরীতে ২৯ জন সহ বরিশাল জেলাতেই ৪২ জন। এছাড়া ভোলাতে ৩৪, ঝালকাঠীতে ১০, পটুয়াখালীতে ২ ও বরগুনাতে ১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আর গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৬০ জন সহ এ অঞ্চলে ৪৪ হাজার ৯৮৫ জনের সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।