Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রেড জোন রাজশাহীতে ঘরে ঘরে করোনা, সন্ধ্যা-সকাল দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ ঘোষনা

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১:২৮ পিএম | আপডেট : ২:২৮ পিএম, ২৯ জানুয়ারি, ২০২২

রেড জোন রাজশাহীতে হু হু করে বাড়ছে করোনা। শনাক্তের হার ৭৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন মৃত্যুর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। সবকিছুতেই চলছে ফ্রি-ষ্টাইল। ফলে বাড়ছেই করোনার সংক্রমন। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় প্রশাসন কিছুটা লাগাম টানতে উদ্যোগ নিয়েছে। সন্ধ্যার পর বাইরে জনসমাগম রোধে দোকানপাট ও কমিউনিটি সেন্টার, শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষনা দিয়েছে। রাত আটটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। একই সাথে অপ্র্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যেতেও নিরুৎসাহিত করে নগরজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও মেট্রপলিটন পুলিশক এ বিষয়ে তৎপরতা শুরু করেছে। জনসাধারনেরও সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ মেনে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে।

রাজশাহীর প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন জ্বরসর্দিতে কাশির রোগি। বেশিরভাগ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত রোগিদের ল্যাবে নমুনা দেয়ার পর পজেটিভ শনাক্ত হচ্ছে। একারনে অনেকেই ভয়ে করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন না। বাড়িতেই জ্বর-সর্দি নিয়ে ফর্মেসি বা হাতুড়ে চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অবস্থা বেগতিক হলে তবেই তারা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের স্বরনাপন্ন হচ্ছেন। মূলত করোনা শনাক্ত হতে পারে এই ভয় থেকে জ¦র-স্বর্দিতে আক্রান্ত রোগিরা হাসপাতালে যেমন চিকিৎসা নিচ্ছেন না। তেমনি করোনার নমুনা দিচ্ছেন না। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমানে যারা জ্বর বা সর্দিতে আক্রান্ত তাদের মধ্যে কিছুটা মওসুমি জ্বর-সর্দির রোগি আর বাকিদের টেষ্ট করালে করোনা ধরা পড়ছে বা পড়বে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
রাজশাহীতে করোনার সংক্রমন বেড়ে যাওয়ার কারন হিসেবে দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে বেপরোয়া ভাব। সরেজমিনে দেখা যায়, মহানগরীর কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, মার্কেট , দোকানপাট, রাস্তাঘাট, গণপরিবহন সকল ক্ষেত্রেই চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। আগের মতই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে জনসাধারনকে রাস্তাঘাট, খোলাবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচিল করতে দেখা গেছে। শনিবার নগরীর ব্যস্ততম সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট, আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন শপিংমল ও খোলা বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি উপক্ষো করে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসময় অনেককেই মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা এবং ব্যবসা বানিজ্য করতে দেখা গেছে। নগরীর খাবারের দোকান, হোটেল, রেষ্টুরেন্টেও নেই কোনো বিধি নিষেধ মানার প্রবনতা। গণপরিবহন তথা বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের বিধান থাকলেও নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে আসন সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেকের মুখে ছিলনা মাস্ক। শুধু মহানগরীর অভ্যন্তরেই নয়। জেলার বাকি ৯টি উপজেলাতেও একই অবস্থা।
এদিকে মধ্য মাঘে এসে রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রার ক্রমশ কমছে। বইছে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ। গত কয়েকদিনের কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় মানুষ যেন জুবুথুবু। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ছে শীত জনিত রোগ-বালাই। ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, এ্যালার্জি, চর্মরোগসহ শীতকালীন নানা ধরনের রোগ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগির চাপ বেড়েছে ব্যাপক হারে। বিশেষ করে শিশুদের ডায়রিয়া নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টসহ রোগির ভর্তি বেড়েছে। শিশুদের প্রতিটি ওয়ার্ডেই শয্যা না থাকায় চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতেই। যেন পা ফেলার জায়গা নেই। চিকিৎসকরা বলছেন শীত আরও বাড়লে রোগির সংখ্যাও বাড়বে। শুধু শিশু বিভাগে নয় মেডিসিন প্রতিটি বিভাগেই প্রচন্ড চাপ। চিকিৎসকরা হিমশীম খাচ্ছেন। হাসপাতালে রোগির চাপ বেড়ে যাওয়ায় শংকিত হাসপাতাল প্রশাসন। একদিকে করোনা অন্যদিকে শীতজনিত রোগ। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ