Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোটের সময় ফের মন্দির নিয়ে সোচ্চার বিজেপি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:২১ পিএম

উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে মথুরায় শ্রীকৃষ্ণজন্মস্থান নিয়েও সোচ্চার বিজেপি। কাশী-মডেলে মন্দির সংস্কারের প্রতিশ্রুতি।

উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের প্রচারে অযোধ্যায় রামমন্দির, কাশীতে বাবা বিশ্বনাথ মন্দির করিডোরের কথা বিজেপি-র প্রচারে খুবই গুরুত্ব পাচ্ছে। নিয়ম করে নেতা-মন্ত্রীরা অযোধ্যা-কাশীর উল্লেখ করছেন। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলো মথুরা।

যোগী সরকারের মন্ত্রী এবং মথুরায় বিজেপি প্রার্থী শ্রীকান্ত শর্মা নিউজ ১৮-কে জানিয়েছেন, ''কাশী-মডেলে মথুরার শ্রীকৃষ্ণজন্মস্থানের মন্দিরকে দিব্য ও ভব্য করা হবে।'' অর্থাৎ, এখানেও মন্দির ও তার পরিসরকে ঢেলে সাজানো হবে। ইতিমধ্যেই মথুরায় নতুন দুইটি বিশাল প্রবেশদ্বারের কাজ চলছে। মন্দিরে যাওয়ার পথে ফুটপাথ বাঁধানোর কাজও চলছে।

মথুরা সংলগ্ন বৃন্দাবনেও বিশাল প্রবেশদ্বার তৈরি হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে চলছে মথুরা নিয়ে প্রচার। শ্রীকান্ত বলেছেন, ''আমরা মথুরার মন্দিরের দিব্যভাব বজায় রেখে তা জাঁকজমকপূর্ণ করে গড়ে তুলব। উত্তরপ্রদেশে শ্রীরাম আছেন, বাবা বিশ্বনাথ আছেন, শ্রীকৃষ্ণও আছেন। তারা আমাদের আত্মার অংশ। এখন যদি মন্দিরগুলো দিব্যভাব বজায় রেখে জাঁকজমকপূর্ণ করে গড়ে তোলা না হয়, তাহলে আর কবে হবে?''

শ্রীকান্ত বলেছেন, ''প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত ও বিশ্বকে কাশী-মডেল দিয়েছেন। সেখানে বাবা বিশ্বনাথ মন্দির করিডোর তৈরি হয়েছে। সেই মডেল মথুরাতেও আমরা অনুসরণ করব। আমরা না করলে আর কে করবে?'' মথুরায় শ্রীকৃষ্ণজন্মভূমি মন্দিরের লাগোয়া একটি মসজিদও আছে। বিজেপি তথা সঙ্ঘপরিবার দীর্ঘদিন ধরে এই মসজিদ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছে।

সম্প্রতি মথুরার আদালতে কয়েকজন এই বিষয়ে আবেদনও করেছেন। তারা বলেছেন, এই মসজিদ মথুরা-বৃন্দাবন এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হোক। তার জন্য দেড়গুণ বেশি জমি দেয়া হবে। তারা অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদাহরণ দিয়েছেন। হিন্দুস্তান টাইমস জানাচ্ছে, একজন আবেদনকারী মহেন্দ্র প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, মুসলিমরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে তার সংগঠন এই জমি দেয়ার ব্যবস্থা করবে। মহেন্দ্র প্রতাপ শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি আন্দোলনের নেতা।

বিজেপি-র প্রচারে এখন তিনটি মন্দিরের কথা উঠে আসছে। যোগী আদিত্যনাথ তার প্রতিটি ভাষণে অযোধ্যাও কাশীর প্রসঙ্গ তো তুলছেনই, সেই সঙ্গে মথুরার কথাও বলছেন। সম্প্রতি ফারুখাবাদে আদিত্যনাথ বলেছেন, অযোধ্যায় প্রতিশ্রুতিমতো রামমন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। কাশী বিশ্বনাথধামেও কাজ হচ্ছে। মথুরা ও বৃন্দাবন কী করে বাদ থাকতে পারে। সেখানেও কাজ শুরু হয়ে গেছে। উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যও দাবি করেছেন, মথুরায় কৃষ্ণজন্মভূমি মন্দিরও নতুন করে হবে।

উত্তরপ্রদেশ বিশেষজ্ঞ এবং লোকমতের রাজনৈতিক সম্পাদক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''উত্তরপ্রদেশে হিন্দুত্বকে ভিত্তি করেই বিজেপি-র প্রচার চলছে। উন্নয়ন বা অন্য সমস্যা নিয়ে তারা কোনো কথা বলছে না। হিন্দু ভোটকে এককাট্টা করতে তারা মন্দির নিয়ে প্রচার করছে। যোগী আদিত্যনাথ ৮০-২০-র প্রসঙ্গ তুলছেন। বাকি বিজেপি নেতারা তার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।'' শরদের বক্তব্য, ''বিভাজন হলে বিজেপি-র পক্ষে আবার ক্ষমতায় আসা সহজ হবে।''

সম্প্রতি যোগী আদিত্যনাথ ৮০-২০-র তত্ত্ব নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, ''প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। লড়াইটা হচ্ছে ৮০ বনাম ২০-র।'' যোগীর ব্যাখ্যা, ''৮০ শতাংশ হলো জাতীয়তাবাদের সমর্থক, তারা উন্নয়নকে সমর্থন করে, আর এরাই বিজেপি-কে ভোট দেয়। এর উল্টোদিকে আছে ২০ শতাংশ, যারা মাফিয়া, অপরাধীদের সমর্থক, যারা কৃষক-বিরোধী।'' যোগী জানিয়েছেন, ''এই ২০ শতাংশ অন্যদিকে যাবে। তাই এটা ৮০-২০-র লড়াই।

আর এই লড়াইয়ে পদ্মই জয়ী হবে। ১০ মার্চ ভোটগণনার পর বোঝা যাবে, ২০ শতাংশের ভোট কোনদিকে গেছে।'' এরপরই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ করে, এভাবে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করতে চাইছেন যোগী আদিত্যনাথ। কারণ, উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মসুলিমের সংখ্যা প্রায় ৮০ ও ২০ শতাংশ। সূত্র: পিটিআই, নিউজ ১৮।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ