Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উখিয়ায় ‘নেকাব’ না খোলায় স্কুল শিক্ষিকাকে হেনস্থার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট : ১১:৩৬ পিএম, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

অনলাইন ক্লাসে নেকাব না খোলায় একজন মহিলা শিক্ষককে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে উখিয়ার পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসানের বিরুদ্ধে। নিজেকে ‘নাস্তিক’ দাবিকারি এই প্রধান শিক্ষক মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে।

হেনস্থার শিকার শিক্ষিকা কামরুন নেছা’র দাবি, তিনি ধর্মীয় বিধান মতে প্রতিনিয়ত নেকাব পরেন। বছরের পর বছর ধরে নেকাব পরেই স্কুলে ক্লাস করে আসছিলেন। মঙ্গলবারও তেমন ভাবেই অনলাইন ক্লাসে লাইভ ক্লাস করেছিলেন। কিন্তু ক্লাস শেষে প্রধান শিক্ষক তাকে রুমে ডেকে নিয়ে নেকাব না খোলায় সহকর্মী ও অন্য লোকজনের সামনে তিরস্কার ও হেনস্থা করেন। একই সময়ে লাইভ করা ক্লাসটি স্কুলের ফেসবুক পেইজ থেকে মুছে দেন।

শিক্ষিকা কামরুন নেছা’র স্বামী মোহাম্মদ ইসলাম জানান, কামরুন নেছা ওই স্কুলে জয়েন্ট করার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিক তার বিরুদ্ধে লেগে আছেন। এমনকি স্কুলে গেলে প্রায় প্রতিনিয়তই ওই প্রধান শিক্ষক নানা ভাবে তাকে হেনস্থা ও অশ্লীল ব্যবহার করেন।

তিনি দাবি করেন, স্কুলে সুন্দর সহাবস্থানে থাকার জন্য এতদিন প্রতিবাদ না করে মানিয়ে চলার চেষ্টা করেছেন তার স্ত্রী কামরুন নেছা।

অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে নানা ভাবে হয়রানিমুলক কাজ করে আসছিলেন। পরিচালনা কমিটির মতামত না নিয়ে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড করেছেন।

একাধিক সুত্র মতে, দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বাসিন্দা এই আমিমুল এহসান মানিক ছাত্রজীবনে ইসলামি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি পড়ালেখাও করেছেন ছাত্রশিবিরের টাকায়। অথচ এখন নিজের শিবির পরিচয় ঢাকার জন্য অতীচেতনাধারী নাস্তিক্যবাদী আচরণ করে যাচ্ছেন।

একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন, আমিমুল এহসান মানিক একজন পাহাড় দখলকারি। পাহাড় দখল করেই তিনি কক্সবাজার বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় অবৈধ ভাবে বসতবাড়ি তৈরি করেছেন। ওই পাহাড় দখল ও পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার এর দায়ের করা মামলায় তিনি এজাহারভূক্ত আসামি।

সুত্র মতে, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়টি বিশাল পরিসরের স্কুল হলেও আমিমুল এহসান মানিক ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে নামাজের ব্যবস্থা বন্ধ করে দেন। শিক্ষক-কর্মচারীরা নামাজ পড়তে চাইলে স্কুল মাঠের পশ্চিম পাশের শৌচাগারের ট্যাংকের ঢাকনার উপর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হয়। কোন শিক্ষিকা খালি ক্লাস রুমে নামাজ আদায় করতে চাইলে সেখানেও বাধা দেন এই প্রধান শিক্ষক। ওই স্কুলে সাড়ে ৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও নামাজ পরার জন্য কোন নামাজ ঘর কিংবা মসজিদ এখানে রাখা হয়নি।

শিক্ষিকা কামরুন নেছা’র স্বামী মোহাম্মদ ইসলাম জানান, তার সহধর্মিনী ওই স্কুলে সহকারি শিক্ষিকা হিসেবে যোগদানের পর থেকে প্রধান শিক্ষক মানিক তার পেছনে পড়ে আছেন। শুরুতেই কামরুন নেছা’র এমপিওভূক্তি নিয়ে টালবাহানা করেন। পরে কোভিড-১৯ এর লকডাউন চলাকালে অন্য শিক্ষিকারা স্কুলে উপস্থিত না থাকলেও তার স্ত্রীকে স্কুলে যেতে বাধ্য করেছেন। শুধুমাত্র নেকাব পরা ও প্রধান শিক্ষকের চেম্বারে দীর্ঘ সময় ধরে বসে না থাকায় প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে এই অপকর্ম করে যাচ্ছেন তিনি।

তার মতে, তিনি বেশ কয়েকবার এই বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেছেন। স্কুলেও গেছেন বেশ কয়েকবার। কিন্তু দেখা করে আসার পর শিক্ষিকা কামরুন নেছা’র উপর নিপীড়ন আরও বেড়ে যায়।
মঙ্গলবারও তেমন ভাবে নেকাব পরে ক্লাস নেয়াকে অজুহাত বানিয়ে প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিক আবারও শিক্ষিকা কামরুন নেছাকে হেনস্থা করেছেন। তিনি একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারীর পর্দার অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, আমিমুল এহসান মানিক তার প্রথম স্ত্রীকে প্রসবকালিন চিকিৎসা না করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। পরে তিনি এক স্কুল ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। অনেকেই দাবি করছেন, ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ে করার জন্য প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করেছিলেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তিনি তার মোবাইলটিই বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল আহমদ মোবাইলে বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।



 

Show all comments
  • Md Helal Karim ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:৫৫ এএম says : 0
    কত বড় স্পর্ধা। এদের এখনই থামানো প্রয়োজন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের এই দেশে এটা মেনে নেওয়া যায়অ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->