Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনীতিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না

হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন বিধিনিষেধ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধে অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, আমরা যতটা ভয় পাচ্ছি ততটা ভয়াবহ হবে না। অতীতে যেভাবে মোকাবিলা করেছি, এবারও পারব।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, করোনা রোধে আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যে কী ধরনের চাপ আসতে পারে এবং প্রস্তুতি কেমন? এর জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সব সময় আমাদের সোশ্যাল সেফটিনেট বিস্তৃত। আমরা সব সময় সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আছি। আমি মনে করি, যতটা ভয় পাচ্ছি, ততটা ভয়াবহ কিছু হবে না। আমরা আগে যেভাবে মোকাবিলা করেছি, সেভাবে মোকাবিলা করতে পারব।

ব্যবসায়ীরা প্রণোদনা ঠিকমতো পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা যেসব প্রণোদনা দিয়েছি, এগুলো যাদের জন্য, তারা অবশ্যই পাবেন। যদি কোনো কারণে দেরি হয়ে থাকে, তাহলেও সেটা বাতিল হয়ে যাবে না। কারণ, বাতিলের কোনো ব্যবস্থা নেই। যে শর্ত আমরা দিয়েছি, সে শর্ত পূরণ করলে তারা প্রণোদনা পেয়ে যাবেন। আমি মনে করি, এখানে ভুল বোঝাবুঝি আছে। হয়তো কোনো কারণ থাকতে পারে। আমি আবারও বলব, যদি এমন কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে এগুলো আমাকে দিলে আমি দেখতে পারব এবং আপনাদের ভালোভাবে জবাব দিতে পারব।

করোনার সঙ্কটকালীন গ্যাস, সার, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, নতুন করে বৃদ্ধির কারণে জনগণের ওপর কী ধরনের চাপ পড়বেÑ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার এখান থেকে প্রাইজ বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, আমি এখনো জানি না। এ বিষয়ে আমি অবশ্যই জানব, যখন জানব তখন ব্যবস্থা নেব। আমার যা করণীয় সেটা অবশ্যই করব। আমাদের সরকার জনগণের সরকার। এ দেশের সব মানুষকে নিয়েই আমাদের চলাচল, আমি মনে করি কখনো এই চলার পথ বিঘ্নিত হবে না। আমরা ইনশাল্লাহ সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যাব।

জেলা চেম্বার সভাপতিরা অভিযোগ করেছেন মাঠ পর্যায়ে তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, এমন অভিযোগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে আসুক। এফবিসিসিআই’র যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে ডেফিনেটলি আমাদের মন্ত্রণালয়ে এসে বলবে এ অভিযোগগুলো। এই অভিযোগগুলো আমাদের জানালে আমরা টেক কেয়ার করব। আমি মনে করি সেগুলোর সমাধান খুঁজে বের করতে পারব।

এদিকে সভায় পাঁচ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৭৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সরকারিভাবে ব্যয় হবে ১ হাজার ৭০ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ১৯৫ টাকা এবং বিশ্বব্যাংক ঋণ ৭ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার ৭০০ টাকা। সভা শেষে অনুমোদিত প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর ডিপিএম-১ এর ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে ১ হাজার ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬৮ টাকায় ক্রয়ের চুক্তি করা হয়। সে অনুসারে মাঠ পর্যায়ে পূর্ত কাজ চলমানকালে কিছু আইটেম হ্রাস/বৃদ্ধি এবং নতুন কিছু আইটেম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৪৯ কোটি ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯১ টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

তিনি বলেন, ‘শরিয়তপুর-জাজিরা-নওডোবা (পদ্মা ব্রিজ সংযোগ সড়ক) উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউপি-১ এর পূর্ত কাজ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৬টি দরপত্র জমা পড়ে। সবগুলো দরপত্রই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি থেকে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ আহমেদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ৮২ লাখ ৩০ হাজার ৫৫৯ টাকা।

সভায় ‘কচুয়া-বেতাগী-পটুয়াখালী-লোহালিয়া-কালাইয়া সড়কে পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পটির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রাক-যোগ্যতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। সবগুলো দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি থেকে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান স্যামওয়ান এবং মীর আখতার যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬৪০ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪৫ টাকা।

সভায় ‘মডার্ন ফুড স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ প্রজেক্ট’র আওতায় আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণকাজে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সাইলো নির্মাণকাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত গ্যানিকো ফ্রান্স-এর সঙ্গে বর্ধিত চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখ শেষ হয়। যার সংশোধিত চুক্তিমূল্য ছিল ৪৪ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৪ টাকা। স্টিল সাইলো নির্মাণকাজ চলমান থাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ৫ মাস বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ৭ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার ৭০০ টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সামসুল আরেফিন বলেন, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের জন্য ‘ভেহিকেল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্টর (ভিওআইপি) অ্যান্ড রিলেটেড সার্ভিসেস’ ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমেরিকার মোবাইলিয়াম ইনকরপোরেশনের কাছ থেকে ভিওআইপিটি কেনা হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী

১১ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ