পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোনো চিকিৎসার দরকার নাই। আমি মরা অবধি যাব না। ওনারা তো চাইছে আমরা মরি› হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া এক ছাত্রী এমন কথাগুলোই বলছিলেন। স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আল্টিমেটাম শেষে নিজেদের ঘোষণা অনুযায়ী আমরণ অনশনে নেমেছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ২৪ জন শিক্ষার্থী।
আমরণ অনশন করতে গিয়ে এমন অন্তত ৪ জন শিক্ষার্থীকে নেওয়া হয়েছে সিলেটের রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়াও ভিসির কার্যালয়ের সামনে অনশনে থাকা ১০জন শিক্ষার্থীর শরীরে স্যালাইন লাগিয়ে রাখা হয়েছে। তবুও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
অনশনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা না খেয়ে এখানে পড়ে থেকে মরে যাচ্ছি। আমাদের ভিসি তার গদির লোভে এখনো পদত্যাগ করছেন না। যতক্ষণ না ওনি পদত্যাগ করছেন ততক্ষণ আমরা এই অনশন চালিয়ে যাব। ওনারা তো আগেই বলেছেন মারা গেলে আসবেন।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন রোববারের ঘটনায় পুলিশকে ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নির্দেশ দিয়েছিলেন। গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, দোষ করে থাকলে সরকারের যেকোন সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিবেন। এতে তদন্ত কমিটি গঠনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তে প্রশাসন ও সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে সময় চাইলে তারা বলেন, ভিসির পদত্যাগের জন্য কোনো তদন্ত কমিটি গঠনের দরকার নেই। তারা বলেন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পুলিশ প্রবেশের নির্দেশ ভিসি দিয়েছেন। আমাদের ওপর পুলিশি হামলার আগে তারা (পুলিশ) যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত ছিল। এ থেকেই বুঝা যায় তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছিল আমাদেরকে মারার জন্য। এ ঘটনার জন্য আবার তদন্ত কমিটি গঠন করতে হোক আমরা তা চাই না।
এদিকে চার বার শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এসে ব্যর্থ হন শিক্ষকবৃন্দ। প্রতিবার ব্যর্থ হয়ে গণমাধ্যমের সম্মুখে একই বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সাস্টে কেন রক্ত আমরা সেটাই উদঘাটন করতে চাই। আর যেন রক্ত না ঝরে তা ঠিক করতে চাই। একথা নিশ্চিত করার জন্যেই আমরা বারবার আসতেছি। যেন কেউ এখানে এসে মাতব্বরি করা, ভিসিগিরি করার জন্য না এসে শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে আসে সেটা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা ছাত্র-শিক্ষক সম্মিলিতভাবে এই ক্যাম্পাস সমৃদ্ধ করতে চাই যেন সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি হয়। ছাত্রদের ওপর পুলিশি হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা যেন আর না ঘটে, যেন আর রক্ত না ঝরে তার জন্য যারা রক্ত ঝড়িয়েছে তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে আমরা আসছি। আমরা তোমাদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করছি, তোমাদের সাথে এক হয়ে আমরা এগুলো বন্ধ করতে চাই, বিচার করতে চাই।
কার আদেশে গত রোববার এ পুলিশি হামলা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রেজারার বলেন, আদেশ হতে পারে ভিসির জায়গা থেকে , হতে পারে ট্রেজারারের জায়গা থেকে, পারে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকের জায়গা থেকে, প্রক্টরের জায়গা থেকে অথবা আদেশ হতে পারে পুলিশ বাহিনীর কোনো জায়গা থেকে। এ সময় তিনি বলেন, আদেশ না দেওয়ার পরেও যদি কাউকে তার দায়ভার বহন করতে হয়, তাহলে তার প্রতি এটা অবিচার করা হবে।
পদত্যাগের আগ পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করে আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ভিসি পদত্যাগ না হলে অজ্ঞাতনামা মামলা ও নিজ ডিপার্টমেন্টে হয়রানির শিকার হতে হবে তাদের। তারা বলেন, ভিসি পদত্যাগ না করলে প্রথমত অনশনে যাওয়া শিক্ষার্থী মারা যেতে পারে। অন্যদিকে ভিসি থেকে গেলে আমাদেরকে ডিপার্টমেন্টে ভুগতে হবে। আবার আমরা যারা আন্দোলনে অংশ নিচ্ছি তাদের তালিকা করে অজ্ঞাতনামা মামলায় আসামি করে দেওয়া হবে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কথা বলতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীরা বলেন, বিভাগের শিক্ষকরা ফোন দিয়ে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলছেন। এমনকি পরে কোনো ধরণের সমস্যা হলে তারা কোনো দায়ভার নিতে পারবেন না বলে আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রেজারার বলেন, শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য সব বিভাগের শিক্ষকরাই ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এর মধ্যে যদি বিচ্ছিন্নভাবে কোনো শিক্ষক তাদের এরকম কথা বলে থাকেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা আমাদের নির্দিষ্টভাবে জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।
এদিকে সিলেট মহানগর বিএনপির আহŸায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সম্মতি জানিয়ে বলেন, গত ৫ দিন ধরে আমরা এখানে ইচ্ছা করেই আসিনি। কারণ আগে এখানে আসলে অন্যান্যরা আমাদের নাম নিয়ে আন্দোলন বানচাল করতো। আমরা ভেবেছিলাম উদ্ভুত এ সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে। আপনারা দেখেছেন যে বিএনপি না আসার পরেও এখানে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে যে এখানে বাইরের প্রভাব রয়েছে। আমরা আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা দেখেছি তারা এখানে অনশন করে একের পর এক অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রæত এই সমস্যার সমাধান করবে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।