বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে অবৈধ ইটভাটা। এতে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে বৃহত্তর নোয়াখালীর শস্যভান্ডার হাইব্রিড ফসল সয়াবিনের মাদারল্যান্ড। জানা যায়, এক শ্রেণির সুবিধাভোগীরা ফসলি জমি টার্গেট করে উপজেলার ২টি ইউনিয়নে গড়ে তুলেছে মাটি গিলে খাওয়ার এই কারখানা। উপজেলার এসএমবি, রএএবি, এফএনবি, এএসআরবিসহ ১৬টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এই সব ইটভাটাগুলোর কোনো অনুমোদন নেই।
মাটি খেকোদের লুলুপ দৃষ্টিতে কৃষকের প্রাণের তিন ফসলী ক্ষেতের টপ সয়েল ইটভাটায় চলে যাচ্ছে। ফলে কৃষিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিজ্ঞজনরা। অবৈধ ইটভাটার রসদ ও মালামাল আনা নেয়া বা ইট পরিবহনে ব্যবহার হচ্ছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক অবৈধ যানবাহন ট্রাক্টর-টলি। অবৈধ যানের কারণে গ্রামীণ সড়ক ভেঙে তছনছ হওয়াসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস বলছে, অবৈধ ট্রাক্টর টলির কারণে সরকারের কোটি টাকার অপচয় করা হচ্ছে। রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণ করার কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাক্টর টলির বেপরোয়া চলাচলের কারণে নতুন সড়কগুলো ভেঙে যাচ্ছে। অবাধে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধভাবে কোন ধরনের আইন কানুন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যথাযথ কর্তৃৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই পাল্লা দিয়ে স্থাপন হচ্ছে নতুন ইটভাটা। সরকার এ সমস্ত আদিম পদ্ধতির ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ করলেও অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে তা বৈধ করে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবছর উচ্চ আদালতের নকল কাগজপত্র তৈরি করে ভাটা মালিকরা আদালতের অনুমোদনের নাম ভাঙিয়ে যুগযুগ চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটা।
অন্যদিকে সরকার লাকড়ি নিষিদ্ধ করে গ্যাস বা কয়লা ব্যবহারের নীতিমালা করলেও আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এ সকল অবৈধ ইটভাটায় বেআইনী সমিল বসিয়ে গাছের গুড়ি কেটে ভাটায় পোড়াচ্ছে কাঠ। প্রতিটি ভাটায় রয়েছে বিশাল লাকড়ির পাহাড়। বৃক্ষরাজি কেটে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে অন্যদিকে তাদের বেআইনী চিমনির কারণে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে গ্রামের পর গ্রাম। আইনীভাবে চিমনির উচ্চতা ১২০ ফুট হলেও কার্যত অনেক ভাটার চিমনীর উচ্চতা ৫০ ফুটের কম। ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র, কৃষি বনবিভাগের ছাড়পত্রসহ ইট পোড়ানো লাইসেন্স ব্যতিরেকে এসকল অবৈধ ইটভাটায় ইট তৈরিতে মাপে ২ ইঞ্চি কম দেয়া ছাড়াও মাটি না পাকিয়ে করছে নিন্মমানের ইট উৎপাদন। এ ইট দিয়ে টেকসই স্থাপনা নির্মাণ করা সম্ভব নয় বলে স্বংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানান এই প্রতিবেদককে।
ব্রিকফিল্ড মালিক আলাউদ্দিন মাল জানান, আমরা ইউএনও, থানাসহ সবাইকে ম্যানেজ করে ফিল্ড চালাই। তারা আমাদের কাছ থেকে মাসিকভাবে মাসোয়ারা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের নোয়াখালী উপ-পরিচালক মো. ছেরাজুল ইসলাম জানান, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ ভাটা স্থাপন করতে পারেনা। আমরা সহসাই অভিযান পরিচালনা করবো। অবৈধ ভাটাগুলো ভেঙে দেয়া হবে। রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান, কোন অবৈধ ইটভাটা চলতে দেয়া হবেনা। মাসিক মাসোয়ারা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।