পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের মহাসড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যান চলাচল নির্বিঘ্ন করার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ও অপরাধ প্রতিরোধ করতে দেশের দুটি মহাসড়কে প্রথমবারের বসছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্ট-এর মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে গাজীপুর-টাঙ্গাইল ও নাটোর-নবাবগঞ্জ এই দুটি মহাসড়ককে বেছে নেওয়া হয়েছে। নিরাপদ করিডোর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এ দুই মহাসড়কের পর পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কেও এই উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
মহাসড়কে সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে এসব ক্যামেরার মাধ্যমে। এমনকি চালকের পক্ষেও আর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের লাশ ফেলে পালানোর সুযোগও থাকবে না। এছাড়াও কোনো যানবাহন ট্রাফিক আইন ভাঙলেই ধরে ফেলবে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। সেখান থেকে বার্তা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে টহল কিংবা ট্রাফিক পুলিশ। দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত পৌঁছে যাবে অ্যাম্বুলেন্স। বিনামূল্যে পৌঁছে দেবে নিকটবর্তী হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য থাকবে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও ট্রমা সেন্টার। এ পদ্ধতিতে উন্নত দেশগুলোয় আগে থেকেই এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার প্রচলিত থাকলেও দেশে এবারই প্রথম এ পদ্ধতি অনুসরণ হতে যাচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্যোগটির মাধ্যমে একদিকে যেমন সড়কে দুর্ঘটনা কমবে, তেমনি বাড়বে যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা।
তবে সওজ ছাড়াও নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলার কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ পুলিশ। এসব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও (এনজিও)। এ বিষয়ে সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) মনির হোসেন পাঠান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হলো ট্রাফিক আইন-কানুন সম্পর্কে সড়ক ব্যবহারকারীদের অসচেতনতা এবং আইন না মানার প্রবণতা। সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পগুলোতে আমরা বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা সড়ক ব্যবহারকারীদের একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাই। এ কাজটি সফলভাবে করতে সক্ষম হলে তা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে জাতীয় মহাসড়ক এন-৪-এর গাজীপুর-টাঙ্গাইল অংশের ৭০ কিলোমিটার ও এন-৬-এর নাটোর-নবাবগঞ্জ অংশের ৭০ কিলোমিটারে বাস্তবায়িত হবে এ প্রকল্প। গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে। আর নাটোর-নবাবগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলে দিনে প্রায় ১০ হাজার। দুটি মহাসড়কই দুর্ঘটনাপ্রবণ। তাই দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক লাইফ সাপোর্ট সুবিধা সংবলিত অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির জন্য কাজ করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ অ্যাম্বুলেন্সটি প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। আহত যাত্রীকে বিনামূল্যে দ্রæত নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌঁছে দেবে এ অ্যাম্বুলেন্স। বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা ছাড়াও দুর্ঘটনাস্থলেই আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য থাকবে একটি বিশেষ ইউনিট। স্বাস্থ্য অধিদফতর বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজটি করবে। এসব কাজের জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøওএইচও) গাইডলাইন অনুসরণ করে মহাসড়ক দুটিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োজিত রাখা হবে।
সওজের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, সড়ক নিরাপত্তায় নিয়োজিত সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করবে। এর মধ্যে সওজ বিদ্যমান মহাসড়ক দুটির প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ করবে। পর্যাপ্ত সাইন-সিগন্যাল স্থাপন, পার্কিং ও যানবাহন মেরামতের জায়গা নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে সংস্থাটি। মহাসড়ক দুটির শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ।
মহাসড়ক দুটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পাশাপাশি সড়কের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চিহ্নিত, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরবরাহ করা হবে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম। এছাড়াও একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলসহ মহাসড়ক দুটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এসব কাজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বিআরটিএ। পাশাপাশি পরিবহন চালক, যাত্রী, পথচারীসহ সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে সংস্থা দুটি।
নিরাপদ মহাসড়ক গড়ে তোলার এ প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকার কথা জানিয়েছেন সওজের প্রকৌশলীরা। তারা বলছেন, মহাসড়ক দুটিকে নিরাপদ করে গড়ে তুলতে কি ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং মানবসম্পদ নিয়োজিত করা হবে, তা বিস্তারিতভাবে ঠিক করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির সময়। বর্তমানে এ কাজগুলো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সওজের প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, টেকসই ও নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে অধিদফতর কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিরাপদ সড়ক করিডোর গড়ে তোলার কাজটি দেশের দুটি মহাসড়কে পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য সব গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের এমন নিরাপদ করিডোর গড়ে তোলা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে গাজীপুর-টাঙ্গাইল ও নাটোর-নবাবগঞ্জ মহাসড়ককে নিরাপদ করিডোর হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওতে আইটিএসের মতো উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।