গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
জটিল সিস্টেমে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। আমাদের কাছে এমন কোন ম্যাজিক নেই যা দিয়ে রাতারাতি দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে। সিস্টেম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতি কমে আসে। ভূমি ব্যবস্থাপনা এখনো শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে বলা যাবে না। ভূমি ব্যবস্থাপনায় পূর্ববর্তী পদ্ধতিটি ছিলো অত্যন্ত জটিল ও অস্বচ্ছ। এই ব্যবস্থাকে দুর্নীতি মুক্ত করাটাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আশা করা যায় বর্তমান ডিজিটাল পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে ভূমি ব্যবস্থাপনা দুর্নীতিমুক্ত হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমরা এমন একটি পদ্ধতি প্রণয়নের চেষ্টা করছি যেখানে কারো ব্যক্তিগত পাওয়ার থাকবে না। কারো ব্যক্তিগত পাওয়ার থাকলেই সেখানে দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হয়। দুর্নীতির আরেকটি পন্থা হলো মধ্যস্থতাকারী। ভূমি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ডিজিটাল হলে এই মধ্যস্থতাকারীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। দুর্নীতিও দূরীভূত হবে। আজ শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এফডিসিতে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জমি বেচা কেনা, রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, পর্চা, খতিয়ান, খাজনা প্রদান, ভূমি জরিপ ইত্যাদি সেবা পেতে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। খাস জমি, হাট বাজার ইজারা, ওয়ারিশান জমি বন্টনসহ ভূমি সংক্রান্ত প্রায় সকল কার্যক্রমেই এখনো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তবে বর্তমান সরকারের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে। মানুষ এখন ঘরে বসে অনলাইনে ফি জমা দিয়ে খতিয়ান, নামজারি ও খাজনা প্রদান করতে পারছেন। দেশের ভূমি অফিসগুলো এখনো শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ভূমি সেবা গ্রহণের প্রায় প্রত্যেকটি স্তরেই ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ বিদ্যমান। বাংলাদেশের দেওয়ানি মামলার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশই ভূমি সংক্রান্ত। ভূমি জরিপ ট্রাইবুনালে প্রায় ৩ লক্ষেরও বেশি মামলা ঝুলছে। ফলে ভুক্তভুগিদের ভূমি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ নিম্নের ৮ দফা সুপারিশ প্রদান করেন। জমি দখল, ভূমি নিয়ে জাল জালিয়াতি, অনিয়ম দুর্নীতি নিরোধসহ ভূমি অপরাধ দমনে ল্যান্ড ক্রাইম অ্যাক্ট প্রনয়ণ করা, ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, ভূমি ব্যবস্থাপনায় পিএসসির মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার অথবা মাঠ পর্যায়ে নন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগের পরিকল্পনা করা, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পোষ্যদের হালনাগাদ আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশ করা, অতি দ্রুত ল্যান্ড ডাটা ব্যাংক তৈরির প্রস্তুতি সম্পন্ন করা, প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ডিজিটাল সার্ভের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন ব্যবহার করা, ভূমি প্রশাসনের দক্ষ জনবল বাড়িয়ে কারিগরি জটিলতা কমিয়ে দালাল নির্ভরতা দূর করতে হবে।
ভূমি সচিব আরো বলেন, ভূমি ব্যবস্থানপনা ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে বর্তমানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ভূমি অফিসের কর্মচারী ও জনগণকে আইটি ট্রেনিং প্রদান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তাদেরকে ঢাকায় এনে এই ট্রেনিং প্রদান করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি মাস্টার ট্রেইনারের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় ও উপজেলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ট্রেনিং প্রদান ও দক্ষ করে গড়ে তোলা। এছাড়া আমরা একটি সিস্টেম অ্যাপস তৈরির চেষ্টা করছি যেখানে ঢুকে যে কেউ অনলাইনে ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা গ্রহণ করতে পারবে, কাউকে ভূমি অফিসে যেতে হবে না। ভূমি অফিস না চিনলেও ভূমি সেবা থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না।
প্রতিযোগিতায় সরকারি দল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিরোধী দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর বিতার্কিকরা সমান নম্বর পাওয়ায় উভয় দল যৌথভাবে বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক আলমগীর স্বপন, বি এম জাহাঙ্গীর ও ধরিত্রী সরকার সবুজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।