Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিধিনিষেধের প্রথম দিনে কারও মাস্ক থুতনিতে, কেউ রেখেছেন পকেটে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৩০ পিএম

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইস্যুতে সরকারের দেওয়া ১১ বিধিনিষেধ আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে কার্যকর হয়েছে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সকাল থেকে মাঠে আছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. সঞ্জীব দাস। পৌনে ২ ঘণ্টার অভিযানে ৫০-৬০ জনকে নিজের টেবিলে ডেকে পাঠান তিনি। তাদের প্রত্যেকেরই মাস্ক পড়ায় ত্রুটি দেখা যায়। কেউ থুতনিতে মাস্ক পড়েছেন, কেউ ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পকেট থেকে মাস্ক বের করেছেন। এছাড়া অধিকাংশের কাছেই ছিল না মাস্ক। তারা দিয়েছেন নানা অজুহাত।

অভিযানে ১১ জনের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের বিষয়ে ডা. সঞ্জীব দাস বলেন, অভিযানে পথচারী ও গণপরিবহনের যাত্রীরা মাস্ক পড়ছেন কি না তা দেখছি। সার্বিকভাবে আমরা দেখেছি অনেকে মাস্ক ছাড়া বের হয়েছেন, কেউ কেউ আবার মাস্ক পকেটে রাখছেন। কয়েকজনকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ‘পরবর্তীতে মাস্ক পড়বে’ এ মর্মে মুচলেকাও নেওয়া হয়েছে। অপরাধ বিবেচনায় অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের মূল উদ্দেশ সবাইকে সতর্ক করা।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইস্যুতে ১১ বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব এবং দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলী/চলাচলে নিম্নোক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

১. দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

২ . অফিস - আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

৩ . রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে ।

৪ . ১২ বছরের ঊর্ধ্বের কোনো ছাত্র - ছাত্রীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকার সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না ।

৫ . স্থলবন্দর , সমুদ্রবন্দর , বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং - এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টসমূহে ক্রু - দের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও দেশের বাইরে থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে শুধু ড্রাইভার থাকতে পারবে। কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

৬ . ট্রেন , বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানবাহনের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড - ১৯ টিকার সনদধারী হতে হবে। ( ট্রেন - বাস অর্ধেক যাত্রী বহন করবে ১৫ জানুয়ারি থেকে , লঞ্চের তারিখ এখনো জানা যায়নি )

৭ . বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোভিড ১৯ টিকার সনদ প্রদর্শন এবং র ‍ ্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

৮ . স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন ।

৯ . সর্বসাধারণের করোনার টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার ও উদ্যোগ নেবে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা গ্রহণ করবে ।

১০ . কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক , রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে ।

১১ . কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে ।

উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো ।

করোনার সবশেষ পরিস্থিতি

বুধবার ( ১২ জানুয়ারি ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে , সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯১৬ জন। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশে। করোনায় এ পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ১১১ জনের মৃত্যু হয়েছে ; শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১ হাজার ৩০৫ জনে। একইসঙ্গে দেশে করোনার নতুন ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধির পেছনে ওমিক্রনের প্রভাব থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ