মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাবিধি লঙ্ঘন করায় পদত্যাগের আহ্বানের মধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালীন আয়োজিত এক গার্ডেন পার্টিতে যোগ দেয়ায় এই ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। এ নিয়ে বৃটিশ নাগরিক ও রাজনীতিবিদদের তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন জনসন।
তিনি মহামারিকালীন বিধিনিষেধকে তাচ্ছিল্য করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সমালোচকরা। নিষিদ্ধ থাকাবস্থায় তিনি সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্বা না করে পার্টিতে অংশ নিয়েছেন। এ জন্য কনজারভেটিভ দলেরও কয়েকজন সদস্য তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, বরিস যদি এ ক্ষোভ দমন করতে না পারেন তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিৎ। বুধবার প্রথমবারের মতো জনসন স্বীকার করে নেন যে তিনি ওই পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন।
২০২০ সালের মে মাসে ডাউনিং স্ট্রিটে তার কার্যালয়ে এটি আয়োজিত হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তিনি এই পার্টিকে একটি অফিসের অনুষ্ঠান হিসাবে নিয়েছিলেন। এরপরেও তিনি হাউজ অব কমনসে বলেন, আমি ক্ষমা চাইছি। আমার উচিৎ ছিল সবাইকে ফেরত পাঠানো।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক ইমেইলে ওই পার্টির বিষয়টি জানা গেছে। এই মেইল প্রকাশ করে ব্রিটিশ আইটিভি। এতে জানানো হয়, ওই পার্টিতে অন্তত ১০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সেদিন অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৪০ জন। অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং তার স্ত্রী ক্যারি সিমন্ডস। প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল প্রাইভেট সেক্রেটারি মার্টিন রেনল্ডস ডাউনিং স্ট্রিটের ওই পার্টিতে অংশ নিতে ১০০ এর বেশি জনকে মেইল করেছিলেন। এতে লেখা ছিল, এক অবিশ্বাস্য ব্যস্ত সময় পর আমরা ভাবছি এই সন্ধ্যায় ১০ নম্বর গার্ডেনে মনোরম পরিবেশে পানীয় পান করা যাবে। এই মেইলের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর থেকে চাপের মধ্যে রয়েছেন জনসন। বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এমনকি নিজ দলেরও কয়েকজন আইনপ্রনেতা তার পদত্যাগ চেয়েছেন।
এই পার্টির কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংস। বরিসের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পরে নিজের ব্লগে পার্টির কথা উল্লেখ করেন তিনি। শুধু বিরোধীরা নন, শাসক দলের একাংশ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। স্কটিশ কনজারভেটিভ নেত্রী রুথ ডেভিডসন টুইট করে বলেন, ‘নিজের বাগানে মদের পার্টিতে প্রধানমন্ত্রী হাজির ছিলেন কিনা, তা বলার জন্য সরকারি তদন্তকারী লাগে না।’
দাবি, কড়া লকডাউন চলাকালীন পার্টির আয়োজনের কথা শুনে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের কিছু কর্মীও অবাক হয়েছিলেন। এ নিয়ে তাদের মেসেজ চালাচালি প্রকাশ্যে এসেছে। এক কর্মী অন্য জনকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, ‘এসব কী হচ্ছে? এই সময়ে মার্টিন বাগানে পার্টির কথা কী করে ভাবছেন?’ অন্য জনের উত্তর, ‘এগুলো কি সত্যি সত্যি হচ্ছে?’
তবে, বরিসের বিরুদ্ধে কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এই প্রথম নয়। ২০২০ সালে ১৫ মে কয়েক জনের সঙ্গে চিজ আর ওয়াইন খাওয়ার ছবি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসায় হইচই পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর তরফে অবশ্য জানানো হয়, কাজের সূত্রেই সেদিন ঘনিষ্ঠ বৈঠক হয়েছিল। ২০২০ সালের ক্রিসমাসে আর একটি কুইজ পার্টির কথাও প্রকাশ্যে আসে। সে বিষয়ে বলা হয়, কর্মীদের উৎসাহ দিতে ওই প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজিত ছিল। তাতে বরিস ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
জনসন গতকাল একটি বিবৃতি দিয়েছেন যে, তিনি প্রথমবারের মতো একটি লকডাউন-ব্রেকিং পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। সংসদকে বলেছেন: ‘আমি ক্ষমা চাই। আমি জানি লাখ লাখ মানুষ অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করেছে। আমি জানি তারা যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে। আমি জানি তারা যে রাগ অনুভব করে’।
জনসন বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করেছিলাম যে, এটি একটি কাজের ইভেন্ট ছিল। তিনি দাবি করেছিলেন যে, তিনি মহামারি চলাকালীন তার কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। ‘কিন্তু অদূরদর্শিতার সাথে আমার সবাইকে ভিতরে ফেরত পাঠানো উচিত ছিল। তাদের ধন্যবাদ জানাতে আমার অন্য কোনো উপায় বের করা উচিত ছিল’।
লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার জনসনের বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। স্টারমার বলেন, ‘তার প্রতিরক্ষা যে, তিনি বুঝতে পারেননি তিনি একটি পার্টিতে ছিলেন, তা এতটাই হাস্যকর যে, এটি আসলে জনসাধারণের কাছে আপত্তিকর’। মি. স্টারমার বললেন, ‘দল শেষ হয়ে গেছে, প্রধানমন্ত্রী, তিনি কি এখন শালীন কাজ করবেন এবং পদত্যাগ করবেন’?
মি. জনসন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন, সিনিয়র বেসামরিক কর্মচারী সু গ্রে-এর অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফলাফলের জন্য পার্লামেন্টকে অপেক্ষা করতে বলেছেন। কিন্তু তিনি একজন প্রাক্তন পাবলিক প্রসিকিউটর মিস্টার স্টারমারের কাছ থেকে প্রতিকূল প্রশ্নের প্রবাহে বিভোর হয়ে পড়েন, তিনি প্রতিরক্ষার পথে সামান্য প্রস্তাব দিয়ে বারবার পরিস্থিতি ভুলভাবে পরিচালনা করার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি নিউজ, সিএনএন, অক্সিওস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।