বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করাসহ ৬ দফা দাবিতে গতকাল বুধবার চতুর্থ দিনের মতো যশোর কালেক্টরেট ভবনের (ডিসি অফিস) সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জলমগ্ন এলাকার শতশত নারী-পুরুষ। গত রবিবার থেকে যশোর জেলা প্রশাসকের অফিস চত্বরে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির ডাকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। মিছিল সহকারে তারা যশোর কালেক্টরেট ভবনের সামনে আসেন। লাগাতার এই অবস্থান কর্মসূচি প্রতিদিন দুপুর থেকে মুহূর্মুহ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা জেলা প্রশাসক কার্যালয়। ব্যানার-ফেস্টুন ছাড়াও তাদের হাতে থাকে লাঙল, মই, আঁচড়া, ধান, শাপলার গাদা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বিলপাড়ের এসব মানুষেরা।
বয়োবৃদ্ধদের মধ্যে যারা এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে একজন ভবদহ এলাকার ভুলবাড়িয়া গ্রামের হরেকৃষ্ণ বিশ্বাস। বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। কাছে গিয়ে জানতে চাইলেই বলে চললেন, ‘উঠোনে জল, না খেয়ে এখানে এসেছি। যে অবস্থা সামনে ব্লক (বোরো ধান) হবে না। না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’ পাশে বসা নেবুগাতি গ্রামের শিবপদ রায় বলে উঠলেন, আমাগে বাঁচাতে সরকার অনেক পয়সা দেচ্ছে। কিন্তু সব টাকা আউট হয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী-এমপি-আমলারা নিলে সব খেয়ে নিচ্ছে। আমরা টিআরএম চাই। টিআরএম হলেই এলাকার মানুষ বেঁচে যাবে। সরাসরি সেনাবাহিনী দিয়েই এই কাজ করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান, নদী হত্যা, জনপদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা, ফসল-বসতবাড়ি-জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সাথে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ অবিবেচনাপ্রসূত প্রকল্প বাতিল, ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু, আমডাঙ্গা খাল সংস্কার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন ও কাজের স্বচ্ছতা আনতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর তদারকিতে সম্পন্ন করা, ভবদহ সুইস গেটের ভাটিতে পাইলট চ্যানেল করতে ৫ থেকে ৬টি স্কেভেটর লাগানো, ২১, ৯ ও ৮ ভেন্টের গেট উঠানামা করানোর ব্যবস্থা এবং জনপদের মানুষের ক্ষতিপূরণ, কৃষিঋণ মওকুফ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ছয় দফা দাবি জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।