Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্রেক্সিটে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ে উদ্বিগ্ন ব্রিটিশ শিল্পোদ্যোক্তারা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নতুন বছর যুক্তরাজ্যের উৎপাদক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রেক্সিট সংক্রান্ত পরিবর্তনের ফলে ব্রিটিশ শিল্প-কারখানাগুলোয় ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা করছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। কাস্টমস বিলম্ব, পরিবহন প্রতিবন্ধকতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ফলে উৎপাদন খাতের ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের প্রায় দুই বছর হতে চলল। সম্প্রতি ২২৮টি প্রতিষ্ঠানের ওপর করা এক জরিপ অনুযায়ী, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান বলছে, ব্রেক্সিট তাদের ব্যবসাকে মাঝারি বা উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত করেছে। অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান সতর্ক করেছে, তারা আমদানি চেকিং ও পণ্য লেবেলিং পরিবর্তনের কারণে কাস্টমসে বিলম্বের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে এ বছর তারা আরো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এদিকে মেকইউকের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নতুন বছরে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হবে ব্রেক্সিট। এর মধ্যে কভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ বাড়ায় দাম বেড়েছে কাঁচামালের। এছাড়া কাস্টমসে বিলম্ব, যুক্তরাজ্য ও ইইউর পৃথক নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার অতিরিক্ত ব্যয় এবং অভিবাসী কর্মীদের প্রবেশাধিকার কমে যাওয়া জরিপে শীর্ষ উদ্বেগের মধ্যে ছিল। এদিকে ওমিক্রনের প্রকোপ বাড়ায় বছর শেষে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি দেখা গেছে। বাজারে পণ্যের চাহিদাও ঊর্ধ্বমুখী। সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ ও বিওডির এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গত বছর ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক আশাবাদ কমেছে। এর জন্য নভেল করোনাভাইরাসের সর্বশেষ সংক্রমণপ্রবাহকে দায়ী করছেন গবেষকরা। আইএইচএস মার্কিট ও ন্যাটওয়েস্টের এক পৃথক সমীক্ষা বলছে, যুক্তরাজ্যের ১২টির মধ্যে ১১টি অঞ্চলেই শিল্প-কারখানার কার্যক্রম কমেছে। বিডিওর এক অংশীদার ক্যালি ক্রসওয়েট জানিয়েছে, ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ায় যুক্তরাজ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আবারো বিধিনিষেধ আরোপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগে থেকেই বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতায় বিপর্যস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া গত বছর ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির হারও প্রতিকূলতা তৈরি করেছে। এদিকে ওমিক্রন নিয়ে আশঙ্কা বাড়লেও আগামী বছর উৎপাদন খাত পুনরুদ্ধারের আশা রয়েছে। এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান বলছে, বর্তমান অবস্থার উন্নতি আসন্ন। এর মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির চেয়ে সম্ভাবনা বেশি দেখছে। প্রতিবন্ধকতা কাটাতে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানোর কথা ভাবছেন ব্যবসায়ীরা। ডেলয়েটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আগামী বছর পুঁজি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এছাড়া নতুন পণ্য ও পরিষেবার মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিবেচনা করছেন ব্যবসায়ীরা। ডেলয়েটের সমীক্ষা অনুযায়ী, ব্রেক্সিট চলতি বছর যুক্তরাজ্য ও ইইউর বাণিজ্য ও অভিবাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন আর্থিক নির্বাহী কর্মকর্তারা। মেকইউকের সমীক্ষায় জানা গেছে, ব্রেক্সিটের কারণে ব্যবসায়ীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। এছাড়া মহামারীর প্রাদুর্ভাব ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে দেশটির ব্যবসায়িক পরিবেশে। তা সত্ত্বেও উৎপাদনের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান বিকল্প হিসেবে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহারের কথা বিবেচনা করছে। যুক্তরাজ্যের আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো স্বল্পমেয়াদি হলেও মেকইউকের বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আন্তর্জাতিক পণ্য আমদানি বন্ধ করার ফলে সরবরাহ ব্যবস্থার জাস্ট ইন টাইম মডেল চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ