Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লকডাউনে পার্টি করায় ক্ষমা চাইলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ব্যাখ্যা দাবি বিরোধীদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১৮ পিএম

করোনা বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে সরকারি বাসভবনে পার্টি করার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালে আয়োজিত এক গার্ডেন পার্টির আয়োজন করেছিলেন তিনি। এ নিয়ে বৃটিশ নাগরিক ও রাজনীতিবিদদের তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন জনসন।

বুধবার রক্ষণশীল এবং বিরোধী সংসদ সদস্যরা বরিস জনসনের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করেছে। লেবার পার্টির উপ-প্রধান নেত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার বলেন যে, তিনি যদি সেখানে থাকেন এবং তিনি এটি সম্পর্কে মিথ্যা বলেন, তবে তার অবস্থান ‘অসহনীয়’। এবং টোরি এমপিরা প্রতিবেদনে তাদের ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

জনসন মহামারিকালীন বিধিনিষেধকে তাচ্ছিল্য করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সমালোচকরা। যখন নিষিদ্ধ ছিল তখন তিনি সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্বা না করে পার্টিতে অংশ নিয়েছেন। এ জন্য কনজারভেটিভ দলেরও কয়েকজন সদস্য তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, বরিস যদি এই ক্ষোভ দমন করতে না পারেন তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিৎ।

বুধবার প্রথমবারের মতো জনসন স্বীকার করে নেন যে, তিনি ওই পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২০ সালের মে মাসে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে তার কার্যালয়ে এটি আয়োজিত হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তিনি এই পার্টিকে একটি অফিসের অনুষ্ঠান হিসাবে নিয়েছিলেন। এরপরেও তিনি হাউজ অব কমনসে বলেন, আমি ক্ষমা চাইছি। আমার উচিৎ ছিল সবাইকে ফেরত পাঠানো।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক ইমেইলে ওই পার্টির বিষয়টি জানা গেছে। এই মেইল প্রকাশ করে বৃটিশ আইটিভি। এতে জানানো হয়, ওই পার্টিতে অন্তত ১০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে সে দিন অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৪০ জন। অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং তার স্ত্রী ক্যারি সিমন্ডস।

ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে সেই পার্টির আমন্ত্রণ পত্র। সেই রিপোর্টে দাবি, ২০২০ সালের ২০ মে যখন দেশ জুড়ে কড়া লকডাউন চলছে, সেই সময়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মদের পার্টিতে অন্তত ১০০ জন আমন্ত্রিত ছিলেন। আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মুখ্য ব্যক্তিগত সচিব মার্টিন রেনল্ডস। এই ঘটনায় ফের নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী।

এই মেইলের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর থেকে চাপের মধ্যে রয়েছেন জনসন। বিরোধী দলের আইনপ্রনেতারা তার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এমনকি নিজ দলেরও কয়েকজন আইনপ্রনেতা তার পদত্যাগ চেয়েছেন।

এই পার্টির কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংস। বরিসের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পরে নিজের ব্লগে পার্টির কথা উল্লেখ করেন তিনি। শুধু বিরোধীরা নন, শাসক দলের একাংশ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। স্কটিশ কনজারভেটিভ নেত্রী রুথ ডেভিডসন টুইট করে বলেন, ‘নিজের বাগানে মদের পার্টিতে প্রধানমন্ত্রী হাজির ছিলেন কিনা, তা বলার জন্য সরকারি তদন্তকারী লাগে না।’

দাবি, কড়া লকডাউন চলাকালীন পার্টির আয়োজনের কথা শুনে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের কিছু কর্মীও অবাক হয়েছিলেন। এ নিয়ে তাদের মেসেজ চালাচালি প্রকাশ্যে এসেছে। এক কর্মী অন্য জনকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, ‘এ সব কী হচ্ছে? এই সময়ে মার্টিন বাগানে পার্টির কথা কী করে ভাবছেন?’ অন্য জনের উত্তর, ‘এগুলো কি সত্যি সত্যি হচ্ছে?’

তবে, বরিসের বিরুদ্ধে কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এই প্রথম নয়। ২০২০ সালে ১৫ মে কয়েক জনের সঙ্গে চিজ আর ওয়াইন খাওয়ার ছবি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসায় হইচই পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর তরফে অবশ্য জানানো হয়, কাজের সূত্রেই সে দিন ঘনিষ্ঠ বৈঠক হয়েছিল। ২০২০ সালের ক্রিসমাসে আর একটি কুইজ পার্টির কথাও প্রকাশ্যে আসে। সে বিষয়ে বলা হয়, কর্মীদের উৎসাহ দিতে ওই প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজিত ছিল। তাতে বরিস ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ