বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
মহান আল্লাহপাক সর্বশেষ আসমানী কিতাব আল কোরআন নাজিল করেছেন। এই কিতাবে ৩০টি পারা, ১৪৪টি সূরা, ৬২৩৬টি আয়াত, ৫৮০টি রুকু, ৭টি মঞ্জিল, ১৪টি তিলাওয়াতের সিজদাহ রয়েছে। সূরা সমূহের মধ্যে সূরা আল্ বাকারাহ সর্ব বৃহৎ সূরা। এতে ২৮৬টি আয়াত আছে। এই সূরার ২৫৫ নং আয়াতটি আল কুরআনের সর্ব বৃহৎ আয়াত। এই আয়াতে ১০টি বাক্য রয়েছে।
যথা (১) আল্লাহ, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, (২) তিনি চিরঞ্জীব, সব কিছুর ধারক, (৩) তাঁকে তন্দ্রা স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও না। (৪) আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। (৫) কে এমন আছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? (৬) দৃষ্টিসীমার সামনে এবং পেছনে যা কিছু রয়েছে, যে সবই তিনি অবগত। (৭) তাঁর জ্ঞানের সীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন। (৮) তাঁর আরশ বা সিংহাসন ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডলকে পরিবেষ্টন করে আছে। (৯) আর উভয় পরিমণ্ডলকে হেফাজত করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। (১০) তিনিই সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
এই দশটি বাক্যে মহান আল্লাহ জাল্লা শানূহুর একক ও অদ্বিতীয় অস্তিত্ব। তাওহীদ ও তাঁর গুণাবলির বর্ণনা এক অনুপম, হৃদয়গ্রাহী ও অত্যাশ্চর্য্য বর্ণনা ভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়েছে যাতে আল্লাহ পাকের অস্তিত্বশীল হওয়া চিরঞ্জীব হওয়া শ্রবণকারী ও সর্বদ্রষ্টা হওয়া, বাক শক্তির অধিকারী হওয়া, তাঁর অস্তিত্বের অপরিহার্যতা, তাঁর অসীম অনন্তকাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত থাকা, নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ড তথা সমগ্র বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ও উদ্ভাবক হওয়া, সকল প্রকার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রভাব ও পরশ থেকে বিমুক্ত হওয়া, বিশ্ব ভ্রহ্মাণ্ডের একচ্ছত্র অধিপতি হওয়া, এমন শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যাতে তাঁর সম্মুখে তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো কথা উচ্চারণ করতে না পারে।
আর এমন পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যাতে করে নিখিল বিশ্ব ও এর যাবতীয় দ্রব্য সামগ্রীকে পয়দা করা এবং সেগুলোর হেফাজত এবং তৎসবের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাঁকে শ্রান্তি ও ক্লান্তির সম্মুখীন হতে না হয়। আর তাঁর এমন ব্যাপক-বিস্তৃত জ্ঞানের অধিকারী হওয়া, কোনো প্রকাশ্য অথবা গোপন বস্তু ও উপাদান কিংবা কোনো অনুপরমাণুর কোনো কিছুই বাদ না পড়ে। তিনি সর্বজ্ঞানী, সর্বদর্শী ও মহা পরিকল্পনাকারী। মোটের ওপর, এতসব গুণ ও মহত্বের অধিকারী হওয়া মহান, রাব্বুল আলামীনের অনন্ত ও অসীম রহমতের ফলশ্রুতি মাত্র, একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
বস্তুত : সূরা বাকারাহ এর ২৫৫ নং আয়াতটি শুরু হয়েছে আল্লাহ নাম মোবারক দ্বারা। এই নামটি একমাত্র বিশ্ব স্রষ্টা আল্লাহপাক ছাড়া অন্য কোনো কিছুর প্রতি ব্যবহার করা যায় না বা হয় না। এই নামটি সুনির্দিষ্টভাবে আল্লাহরই জন্য প্রযোজ্য। এই নাম মোবারকের এক বচন, দ্বিবচন ও বহু বচন হয় না এবং এই নাম মোবারক কোনো শব্দমূল ও ক্রিয়ামূল হতে উৎসারিত নয়, আল্লাহ নাম মোবারক স্বয়ং সম্পূর্ণ ও স্বয়ম্ভূসত্তার পরিচয়দানকারী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।