বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল বিভাগে ভ্যাকসিন কার্যক্রম কিছুটা গতি লাভ করার মধ্যে গত তিনদিনে সংক্রমন পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও মহানগরীতে এখনো করোনা খুব স্বস্তি দিচ্ছেনা। তবে ডিসেম্বরে গোটা মাসের তুলনায় জানুয়ারীর ১০ দিনেই অক্রান্তের সংখ্যাটা অনেক বেশী। ‘ডেল্টা ভেরিয়েন্ট’ই এখনো দক্ষিণাঞ্চলের উদ্বেগের কারণ। গত অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হলেও নতুন বছরের প্রথম ৭ দিনে পুনরায় তা অবনতি ঘটতে শুরু করে। তবে গত ৩দিনে তা কিছুটা স্থিতিশীল হলেও তা নিয়ে নিরুদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন।
চলতি মাসের প্রথম ৭দিন বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও গোটা ডিসেম্বর মাসে সংখ্যাটা ছিল ২২। তবে ৮ থেকে ১০ জানুয়ারী, ৩দিনে আক্রান্তের সংখ্যা আরো ৯ জন সহ মাসের প্রথম ১০ দিনে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩৮। যারমধ্যে মহানগরীতে ৫ জন সহ বরিশাল জেলায়ই ৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এসময়ে পিরোজপুরে দুজন এবং পটুয়াখালীতে আরো ১জন করোনা রোগী শণাক্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।
গত ১৫ অক্টোবরের পর থেকে এ অঞ্চলে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কারো মৃত্যু না হলেও পূর্ববর্তি তিন মাসের তুলনায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে নতুন বছরের শুরু থেকেই। আর আক্রান্তের তালিকায় এখনো এককভাবে বিভাগের জনসংখ্যার ৬% জনসংখ্যার বরিশাল মহানগরীই শীর্ষে রয়েছে।
বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি কেউ অনুসরন করছে না। আর এবিষয়ে সরকারী তরফ থেকে যত সতর্কতাই জারী করা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে নুন্যতম কোন হেলদোল নেই এ অঞ্চলের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সহ পুলিশ ও প্রশাসনের।
গত নভেম্বরের ৩০ দিনে অঞ্চলে করোনা শনাক্তের সংখ্যাটা ছিল ৬৬। আর গত অক্টোবরে ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে মারা গেছেন দুজন। গত জুলাই মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনার মহা সংকটকাল অতিক্রমকালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১৫ হাজার অক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয় ১৪০ জনের ওপরে। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।
অথচ গত মে মাসে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮০। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। তবে গত আগষ্টের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিনাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও গোটা মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। মৃত্যু হয় ১৬৭ জনের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির নতুন মোড় নিয়ে সংক্রমনে আশাব্যঞ্জক উন্নতি হয়। তবে এ মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ১৯৫ জনে হ্রাস পেলেও মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের।
এদিকে সোমবার দুপুরের পূর্ববর্তি ১০ দিনে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় যে ৩৮ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার ১২ জনই বরিশাল জেলায়। যারমধ্যে ১০ জনই মহানগরীতে। এসময়ে পিরোজপুরে ৯, পটুয়াখালীতে ৭, বরগুনাতে ৪ এবং ঝালকাঠীতে দু জনের আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে গত ২০ মাসে ৪৫ হাজার ৩৯১ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৭৯ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। যারমধ্যে মহানগরীতে ১১ হাজার ৫০ জন সহ বরিশাল জেলায়ই আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৫৫। এরমধ্যে মহানগরীতে ১০২ জন সহ এ জেলায় ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২৪১। মারা গেছেন ১০৯ জন। দ্বীপজেলা ভোলায় আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৬৮ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। খুলনাÑবাগেরহাট সীমান্তের পিরোজপুরে আক্রান্ত ৫ হাজার ৩০৫। মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। বরগুনাতেও এপর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬২ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে ৪ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্তের বিপরিতে মারা গেছেন ৬৯ জন।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ইতোমধ্যে ১২ বছরের উর্ধের প্রায় ৪৮ লাখ মানুষের করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহনের কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে ৩২ লাখ মানুষ করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের দুই ডোজের আওতায় এসেছেন। যা মোট জনসংখ্যঅীর ৪০%-এর বেশী। ইতোমধ্যে প্রায় পৌনে ৪ লাখ ছাত্রছাত্রী প্রথম ডোজ ও ৩৬ হাজারেরও বেশী দ্বিতীয় ডোজের করোনা ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। চলতি মাসের মত আগামী মাসেও এ অঞ্চলের প্রতিটি ইপিআই কেন্দ্রে এ ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম দ্রুততর করার সাথে অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরনে সকলকে সচেতন করা সহ তা পালনে কঠোর হবার কোন বিকল্প নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।