Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাবুল বিমানবন্দরে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটি ফিরল স্বজনদের কাছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:০৫ পিএম

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকে সেখানকার বিমানবন্দরে ভিড় বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৯ আগস্ট বিমানবন্দরে মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয় দুই মাসের শিশু সোহাইল আহমাদি। বিমানবন্দরে শিশুটি হারিয়ে যাওয়ার পর মা-বাবা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এরপর গতকাল শনিবার শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সোহাইল আহমাদির বাবা মির্জা আলি আহমাদি কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ ছিল তাঁর। কিন্তু গত ১৯ আগস্ট বিমানবন্দরে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় ছিল। মির্জা আলি আহমাদি ও তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া যত বিমানবন্দরের দিকে এগোচ্ছিলেন, তত ভিড় বাড়ছিল। তাই সুরাইয়ার ভয় ছিল, তাঁর সন্তান এই ভিড়ে হারিয়ে যেতে পারে। একসময় বিমানবন্দরের দেয়ালের কাছে পৌঁছালে তাঁরা শিশু সোহাইলকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা এক ব্যক্তির কাছে দেন। তিনি ভেবেছিলেন ওই ব্যক্তি একজন মার্কিন সৈন্য। তিনি ভেবেছিলেন বিমানবন্দরে ঢুকেই তার কাছ থেকে তিনি তাঁর সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন।
কিন্তু ওই সময়ই তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা বিমানবন্দরে ঢোকার জন্য অপেক্ষারত সবাইকে সরিয়ে দেয়। এর ঠিক দেড় ঘণ্টা পর আহমাদি তাঁর বাকি চার সন্তানসহ বিমানবন্দরে ঢুকতে পেরেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে নিখোঁজ সোহাইল। তাঁরা আর ছেলেকে খুঁজে পাননি।
আহমাদি জানান, তিনি বিমানবন্দরের ভেতরে তাঁর ছেলেকে মরিয়া হয়ে খুঁজেছিলেন। তখন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তাঁর ছেলেকে সম্ভবত আলাদাভাবে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে হয়তো তিনি তাঁর ছেলেকে পাবেন।
অবশেষে কাবুল থেকে সোহাইলকে ছাড়াই মির্জা পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন। অনন্যোপায় হয়েই। বর্তমানে তাঁরা টেক্সাসের একটি সামরিক ঘাঁটিতে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর কয়েক মাস ধরে তাঁরা সোহাইলের খোঁজ করছিলেন।
গত নভেম্বরে রয়টার্সে সোহাইলের ছবিসহ একটি নিখোঁজ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর শিশুটির খোঁজ মেলে কাবুলে। জানা যায়, হামিদ সাফি নামের এক ট্যাক্সিচালক সোহাইলকে কাবুল বিমানবন্দরে পান। এরপর থেকেই তিনি নিজের সন্তানের মতো সোহাইলকে লালন-পালন করছেন।
এরপর শিশুটিকে পাওয়ার জন্য আবেদন করেন মির্জার স্বজনেরা। মীমাংসার জন্য আলোচনা চলতে থাকে। শিশুটিকে তালেবান পুলিশ নিয়ে নেয় তাদের হেফাজতে। এর প্রায় দুই মাস পর সোহাইলকে তালেবান পুলিশ তার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শনিবার প্রায় পাঁচ মাস পর সোহাইল আত্মীয়দের কোলে ফিরেছে।
স্বজনেরা বলছেন, এখন সোহাইলকে তার বাবা-মা ও ভাইবোনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
তবে আফগানিস্তানে কোনো মার্কিন দূতাবাস না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কার্যকর না থাকায় এ ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ