বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভ্যাকসিন কার্যক্রম ধীরলয়ে চলার মধ্যেই করোনা’র ডেল্টা ভেরিয়েন্ট আবার দক্ষিণাঞ্চলবাশীর ঘাড়ে শাষ ফেলছে। অক্টোবরের পর থেকে নতুন বছরের প্রথম ৭ দিনে পরিস্থিতির পুনরায় অবনতি ঘটতে শুরু করেছে। তবে গত ১৫ অক্টোবরের পর থেকে এ অঞ্চলে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু পূর্ববর্তি তিন মাসের তুলনায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে শুরুর করেছে নতুন বছরের শুরু থেকেই। আর আক্রান্তের তালিকায় এখনো এককভাবে বরিশাল মহানগরীই শীর্ষে রয়েছে। অথচ গোটা বিভাগের প্রায় ১ কোটি কোটি জনসংখ্যার মাত্র সাড়ে ৬ভাগের বাস এ নগরীতে।
বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি কেউ অনুসরন করছে না। আর এবিষয়ে সরকারী তরফ থেকে যত সতর্কতাই জারী করা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে নুন্যতম কোন হেলদোল নেই দক্ষিণাঞ্চলের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সহ পুলিশ ও প্রশাসনের।
নতুন বছরের প্রথম ৭ দিনেই বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ২৯ জনের করোনা সংক্রমনের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অথচ ডিসেম্বরের ৩১ দিনে সংক্রমনের সংখ্যা ছিল মাত্র ২২ জন। নভেম্বরের ৩০ দিনে সংখ্যাটা ছিল ৬৬। আর গত অক্টোবরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে মারা গেছেন দুজন।
গত জুলাই মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনার মহা সংকটকাল অতিক্রম কালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় প্রায় ৪১ হাজার নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ হাজার, মৃত্যু হয় ১৪০ জনের ওপরে। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।
অথচ গত মে মাসে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮০। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। তবে গত আগষ্টের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিনাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও গোটা মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। মৃত্যু হয় ১৬৭ জনের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির নতুন মোড় নিয়ে সংক্রমনে আশাব্যঞ্জক উন্নতি হয়। এ মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ১৯৫ জনে হ্রাস পায়। তবে মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের।
এদিকে শুক্রবার দুপুরের পূর্ববর্তি সপ্তাহে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় যে ২৯ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার ৯ জনই বরিশাল মহানগরীতে। এসময়ে পিরোজপুরে ৭, পটুয়াখালীতে ৬, বরগুনাতে ৪ এবং ঝালকাঠীতে দু জনের আক্রান্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে গত ২০ মাসে ৪৫ হাজার ৩৮২ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৭৯ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। যারমধ্যে মহানগরীতে ১১ হাজার ৫০ জন সহ বরিশাল জেলায়ই আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৪৯। এরমধ্যে মহানগরীতে ১০২ জন সহ এ জেলায় ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২৪০। মারা গেছেন ১০৯ জন। দ্বীপজেলা ভোলায় আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৬৮ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। খুলনাÑবাগেরহাট সীমান্তের পিরোজপুরে আক্রান্ত ৫ হাজার ৩০৩। মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। বরগুনাতেও এপর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬২ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে ৪ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্তের বিপরিতে মারা গেছেন ৬৯ জন।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ইতোমধ্যে ১২ বছরের উর্ধের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ ভাগ মানুষের করোনা ভ্যাকসিন গ্রহনের কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে ৩০ লাখ মানুষ করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের দুই ডোজের আওতায় এসেছেন। আর শুধু প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহনকারী সংখ্যৗা প্রায় ৪১ লাখ মানুষ।
তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম দ্রুততর করার সাথে অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরনে সকলকে সচেতন করা সহ তা পালনে আন্তরিক হবার কোন বিকল্প নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।