Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চা বাগানের নারী শ্রমিকদের সংগ্রামী জীবন

প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
দুটি পাতা একটি কুঁড়ি এই হচ্ছে সুপেয় চায়ের মূল কথা। প্রতিদিন সকালে চায়ে চুমুক দিয়ে যে ক্লান্তি দূর হয় এর পেছনে যাদের ঘামশ্রম রয়েছে এসব নারী শ্রমিকদের নিয়ে কেউ কি কিছু ভেবেছেন? বহু বছর আগে ব্রিটিশ শাসনামলে ভারত উপমহাদেশে বিভিন্ন রাজ্য থেকে তাদের আগমন ঘটলেও আজকের স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে তারা এ দেশের নাগরিক। তাদের সামাজিক রীতিনীতি ধর্ম, কৃষ্টি-কালচার, জীবনাচরণ, বর্ণ-ধর্ম, কথা বলার ঢং, কাজের নিখুুঁত বুনন আমাদের ঐতিহ্য ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলেছে। পোকা মাকড়ের মতো ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে ছেলে সন্তান নিয়ে ঠাসাঠাসি করে কোনো রকমে জীবন চালায়। বড় কথা হচ্ছে নারী চা শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রম করে থাকে। তাদের মধ্যে রয়েছে সাওতাল, মুন্ডা, ভূমিজ, কল, তন্তবায়, বাকতিসহ বিভিন্ন উপগোষ্ঠীর লোকজন। চা বাগানের নারী শ্রমিকরা কেউ অলস সময় কাটায় না। যাদের বাগানে কাজ রয়েছে ঘুম থেকে বাড়ি ঘরের কাজ শেষে পায়ে হেঁটে দল বেঁেধ বাগানে যায়। অবিরাম দুটি পাতা একটি কুঁড়ি উত্তোলন করে এ কচি পাতা মাথায় করে কারখানা অথবা ট্রাক্টরে পৌঁছায়। দুপুরের খাবার সেরে নেয় বাগানের ভিতর। ৫/৭ জন নারী শ্রমিক দল বেধে বসে খাবার প্রস্তুত করে। এ খাবারে কি পরিমাণ খাদ্যপ্রাণ অথবা পুষ্টিগুণ রয়েছে এ সম্পর্কে তাদের আদৌ কোনো ধারণা নেই। ক্ষুধা মেটাতে হবে এই প্রয়োজনে খাবার। খাবার তালিকা থাকে মুড়ি, চানাচুর, কাচামরিচ, কাচা চা পাতা, পেয়াজ, আলু, চটকিয়ে ভর্তা বানিয়ে রুটি দিয়ে এ খাবার খায়। সঙ্গে থাকে বোতল ভর্তি গরম লাল চা। কাজ সেরে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে এসব নারী শ্রমিকরা। ক্লান্ত শরীর মলিন মুখ ক্ষুধার্ত হাড্ডিসার দেহখানা নিয়ে ঘরে ফেরার পর আবার শুরু হয় পারিবারিক কাজ। রাতের খাবার শেষে চট-ছালা বিছিয়ে মশারিবিহীন অন্ধকার ঘরে ঠাসাঠাসি ঘরে ছেলে সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এত পরিশ্রমের পর নারী শ্রমিকরা যে মজুরি পায় তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য। অনেক সময় দেখা যায় অবুঝ শিশুকে গাছের নিচে রেখে নারী শ্রমিকরা কাজ করে। অভাব-অনটন নারী শ্রমিকদের এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চা বাগানের নারী শ্রমিকদের সংগ্রামী জীবন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ