Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক সেতুর অপেক্ষায় ৫০ বছর

ঘটনাস্থল মাদারীপুর চর লঞ্চঘাট ৫০ হাজার মানুষকে জেলা সদরে আসতে হয় নৌকায়

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

নাম আবুল হোসেন, বয়স ২৫। মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর মহিষেরচর গ্রামে তার বাড়ি এবং ওই গ্রামের মনু ফরাজীর একমাত্র ছেলে সে। পেশায় মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে সে। প্রতিদিনই গ্রাম থেকে জীবিকার প্রয়োজনে তাকে মাদারীপুর শহরে আসতে নৌকায় আড়িয়াল খাঁ নদী পাড়ি দিতে হয়। একটি সেতু না থাকায় প্রতিদিন মাদারীপুর শহরে আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাকে। এ অবস্থা শুধু আবুল হোসেনের নয় ওই গ্রামের সকলেরই। মাদারীপুর চর লঞ্চঘাট এলাকায় নদীতে সেতু না থাকায় ইঞ্জিনচালিত নৌকাই তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। স্বাধীনতার পর আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর ৫০ বছর ধরে একটি সেতুর অপেক্ষায় রয়েছেন ৬ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপারে মহিষেরচর, জাফ্রাবাদ, বাহেরচর কাতলা, জাজিরা, তালুøক (মোল্লা কান্দি), ছিলারচর নামে ছয়টি গ্রাম রয়েছে। যেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। আড়িয়াল খাঁ নদী দিয়ে দ্রুত মাদারীপুর শহরে আসতে ভরসা একমাত্র নৌকা। আড়িয়াল খাঁ নদীতে কোনো সেতু না থাকায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শিশু, নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫-৬ হাজার মানুষ চলাচল করছে। নৌকা ডুবির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে। এসব এলাকার মানুষের তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহনে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্বাধীনতার কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে ৬ গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। উত্তর মহিষেরচর ৭নং ওয়ার্ডের লঞ্চঘাট এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত হলে দুই পাড়ের মানুষের কষ্ট যেমন শেষ হতো তেমনই হাজারো মানুষের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হতো।
লঞ্চঘাট সংলগ্ন খেয়াখাটের মাঝি স্থানীয় মান্নান কাজী বলেন, আমি ৩৫ বছর যাবৎ এ খেয়াঘাটে লোক পারাপার করি। গভীর রাত পর্যন্ত এ খেয়াঘাটের নৌকায় লোক পারাপারে অপেক্ষায় থাকতে হয়। একটি সেতু না থাকায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। ১০ বছর পূর্বে বৈঠা দিয়ে নৌকা চালাতাম। পরে নৌকায় ইঞ্জিন বসিয়ে এখন নৌকা চালাই। কিছুদিন আগে মহিষেরচর গ্রামে এক গর্ভবতী মহিলা মারাত্বক অসুস্থ হলে খেয়া পারাপারে আসতে দেরি হওয়ায় পথে সে মারা যায়। এখানে একটি ব্রিজ খুবই প্রয়োজন।
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. টুকু মোল্লা বলেন, মাদারীপুর লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে নদী পারাপারে সারা বছরজুড়ে নৌকাই একমাত্র ভরসা। এই খেয়া দিয়ে ৫-৭টি ইউনিয়নের লোকজন যাতায়াত করে। ব্যস্ততম একটি যাতায়াতের খেয়াঘাটের পথ এটা। কিন্তু এখানে খেয়ার বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। ওপাড়ে যত ছাত্র-ছাত্রী আছে তারা পড়াশোনার জন্য শহরে আসে এবং প্রত্যেকটা লোক হেটে এই খেয়া পার হয়ে আসতে হয়। বিশেষ করে বর্ষায় নদীতে প্রবল স্রোত থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয়। এখানে সেতু নির্মাণ হলে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে। এই ব্রিজটা অনেক আগেই বিশেষ প্রয়োজন ছিল।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ ৫ টাকার বিনিময়ে নদী পারাপার হয়। সেতু না থাকায় মালামাল নিয়ে বাজারে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে খুবই কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। এতে করে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে তাছাড়াও সময়ও ব্যয় হচ্ছে। এই সেতু হলে আমাদের সময় অনেকটা বেঁচে যাবে। কোনো সেতু না থাকায় পাঁচখোলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজনকে সকল মৌসুমেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই ব্রিজটা কাক্সিক্ষত স্বপ্ন সবার, আমরা এর বাস্তবায়ন চাই।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান বলেন, মাদারীপুর লঞ্চঘাট হইতে ওপারে উত্তর মহিষের চর পর্যন্ত আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর তা অনুমোদন হয়েছে। মাটির গুনাগুন পরীক্ষা করার কাজ শিগগিরই শুরু হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদারীপুর চর লঞ্চঘাট

৬ জানুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->