Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভালবাসার অত্যাচারে জঙ্গল ত্যাগ বাঘিনীর!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:২৩ পিএম

দেশের সর্বোচ্চ আদালত পরকীয়াকে বৈধ করেছে। ইতিউতি মনুষ্যসমাজে তা চালু হয়েছে। তাই বলে পশুকূলে পরকীয়া। মানবেন কেন মহারাজ? তার তো নিজস্ব ইজ্জত আছে। শুধু তাই নয় তিনি আবার বাদাবনের রাজা। ঝিলার জঙ্গলটা তার দখলে। আর সেই জঙ্গলে পা রেখেছে সদ্য যুবতী বাঘিনী। মহারানি যে যুবতী হয়েছে বুঝতে পেরেছেন মহারাজ। আর তাই যেমন ভাবনা তেমন কাজ। প্রেম নিবেদন করে বসলেন ঝিলার জঙ্গলে থাকা এক ডোরাকাটা।

আর তার প্রেম নিবেদনে বাধা হয়ে দাঁড়াল অন্য মহারাজ। সেও মহারানির সঙ্গ পেতে চান। সবে যৌবনে পা রাখা মহারানিকে পেতে তাই শুরু হল দুই বাঘের কামড়াকামড়ি। মহারানিকে নিয়ে টানাটানি দুই তাগড়াই মহারাজের। আর এই টানাটানির মধ্যে পড়ে মহারানির প্রাণ ওষ্ঠাগত। খাওয়া নাওয়া ভুলে দুই বাঘিনীর পিছনে পড়ে আছে দুই বোনের রাজা। অগত্যা প্রেমের জ্বালাতনে পালিয়ে আসতে হল গভীর জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ের কলাবাগানে। কিন্তু বনদপ্তরের কর্মীরা গভীর রাতে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে ফের আবার তাকে নিয়ে উপস্থিত হয়েছে জঙ্গলে। আপাতত রাখা আছে ঝিলা চার কম্পার্টমেন্টের একটি স্থানে। চিকিৎসকের অনুমতি পেলেই তাকে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে জঙ্গলে।

বাঘিনী যখন লোকালয়ে ঢুকে কলাবাগানে আটকে পড়ে আছে তখন দুই বাঘ ঝিলা থেকে আড়বেশি জঙ্গল পর্যন্ত সারারাত দাপিয়ে বেড়িয়েছে। হুংকার দিয়েছে একে অপরকে লক্ষ্য করে। দুই বাঘ প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হুংকার ছেড়েছে স্থানীয় সময় বিকাল 8টা থেকে ভোর ৪.৩০ পর্যন্ত। বাঘিনীর গন্ধে একটা সময়ে একজন তো চলে এসেছিল লঞ্চের রাখা খাঁচার মধ্যে বাহিনীর কাছে। বনকর্মীদের হাঁকাহাঁকিতে আবার পালিয়ে যায় সে। দুই মহারাজের হুংকারে কেঁপে গিয়েছে সুন্দরবনের কুমিরমারি, মোল্লাখালি, হেমনগর ও সাতজেলিয়া দ্বীপের গ্রামবাসীরা। সারারাত ঘুম উড়ে গেছে এই সমস্ত এলাকার মানুষের।

কি ঘটেছিল রাতে তা জানালেন উদ্ধারকারী দলের একজন কর্মী। তিনি বলেন, “সাধারণত ৪-৫ বছর বয়সেই বাঘ কিশোরী থেকে যৌবনে উত্তীর্ণ হয়। একটি বাঘিনী যখন সদ্য যৌবনে পা দেয় তখন তার পিছনে ঘুরে বেড়ায় একাধিক পুরুষ বাঘ। শনিবারের রাতের ঠিক সেই ঘটনাটি ঘটেছিল। বাঘিনীটি সঙ্গিনী হিসাবে পেতে দুই বাঘ নিজেদের মধ্যে ডাকাডাকি শুরু করেছিল। আর সেই অত্যাচার থেকে বাঁচতে বাঘিনী নদী পেরিয়ে চলে যায় নিরাপদ স্থানে।

বাঘদু’টিও বাঘিনীর খোঁজে প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সারারাত দাপিয়ে বেরিয়েছে। পরকীয়া আটকাতে একে অপরকে লক্ষ্য করে হুংকার দিয়েছে। যা বাদাবনকে ভেদ করে পৌঁছে গিয়েছে লোকালয়ে। বিনা যুদ্ধে কেউ সূচাগ্র মেদিনী দিতে নারাজ। বলা যেতে পারে বাঘিনী দিতে নারাজ। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে সুন্দরবনের উপকূলীয় থানার কুমিরমারি গ্রামে বাগনা অফিস পাড়াতে ঢুকে পড়ে একটি বাঘিনী। বাঘিনীটিকে বনদপ্তরের কর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলির সাহায্যে তাকে খাঁচাবন্দি করে। বর্তমানে সে সুস্থ রয়েছে। সূত্র: টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাঘিনী
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ