পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশে কোনো মূল্যস্ফীতি নেই, জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি সারাবিশ্বে আছে। আমাদের এখানে নাই। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও কম বাড়ছে; সহনীয় পর্যায়ে আছে। অন্য কোনো দেশের সঙ্গে মেলালে দেখবেন এখন মূল্যস্ফীতিতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। আমরা গত ১৫ বছর ধরে আমাদের ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতির রেট। পৃথিবীর কোনো দেশ এমন খুঁজে পাওয়া যাবে না, এটি একটি অসাধারণ দেশ। এছাড়া চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
গতকাল জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’ সম্পর্কিত চ‚ড়ান্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় স্মারক অনুষ্ঠানের প্রি-ইভেন্ট প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন দাবি করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে, এ দেশের মানুষের দক্ষতা বেড়েছে, উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। আমাদের আশপাশের দেশ দেখেন, তাদের যে অবস্থান সেটি আমরা দখল করে নিচ্ছি। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো ভালোভাবেই নিই, এগুলো উত্তরণে আমরা ফ্লেক্সিবল অ্যাপ্রোচে আছি। আমরা চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাই। অতীতেও আমরা এতে সফলতা পেয়েছি। আগামীতেও এটাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগাবো। আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য ৪৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আমরা ৬০ বিলিয়নে যাবো। আমাদের রফতানিও কমবে না কিছুই কমবে না। আমাদের হোঁচট খেতে হবে না এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না।
জ্বালানির দাম বাড়ানো সঠিক ছিল কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে আমি নিজের কাজ নিজে করি না, আপনাদের (মিডিয়া) থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা কাজ করি। এটি নিয়ে আমাদের সরকারের সংশ্লিষ্ট যারা কাজ করেন তারা বিষয়টি দেখবেন। আমি অর্থমন্ত্রী হলেও সব বিষয়ে আমি হস্তক্ষেপ করি না, সব বিষয় দেখি না। আমার যে অংশটুকু সেটুকু নিয়ে আমি নিয়োজিত থাকি। এ বিষয়টি যারা বিবেচনা করার তারা দেখবেন কী করা যায়।
রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বাড়ালাম। আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম সে সময় আমি নিজে স্টাডি করেছি। সে সময় আমাদের রেমিট্যান্স যা অর্জন করার কথা, আমরা ৪৯ শতাংশ অর্জন করতাম ফরমাল চ্যানেলে আর ইনফরমাল চ্যানেলে বাকিটা আসতো। আমি চিন্তা করলাম এটাকে ফরমাল চ্যানেলে আনলে আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে এবং সবাই এটার বেনিফিটটা পাবে। সেই চিন্তা থেকে আমরা প্রথম ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া শুরু করি। এরপর লক্ষ্য করলাম আমাদের যে উদ্দেশ্য সেটি সফল। আমাদের যে অ্যাভারেজ রেমিট্যান্স ছিল ১৪ শতাংশ, এই প্রণোদনা দেয়ার পর প্রথম বছরে রেমিট্যান্স বেড়ে হলো ১৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর আমাদের রেমিট্যান্স আরও বেড়ে যায় এবং ২০২০-২১ সালে আমাদের রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই অর্জন আমি মনে করি একদিকে আমরা সহজ করেছি এবং পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনা কাজে লেগেছে। কারণ রেমিট্যান্স পাঠাতে একটি খরচ করতে হয় সেটি কাভার করতে পারছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। সেটা করতে গেলে আমরা দেখলাম আমরা যদি ইনসেনটিভ আরেকটু বাড়িয়ে দেই তাহলে বর্ধিত যে খরচ তারা সেটি কাভার করতে পারবে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এই রেমিট্যান্সটা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক এলাকায় কত বড় ভ‚মিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা একদিকে এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি, তাহলে জানতে পারি কতটা আসা উচিত আর কতটা পেলাম। যেটা পাচ্ছিলাম না সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাচ্ছিল। আমরা সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করবো এবং ফরমাল চ্যানেলেই পুরোটা অর্জন করতে চাই। সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ ছিল সেখানে থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে, আজ (শনিবার) থেকে এটি কার্যকর হবে। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা ভিন্ন পথে টাকা পাচার করছেন এবং রেমিট্যান্স থেকে সেটা কাভার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে টাকা পাচার হয় এটা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আপনাদের (মিডিয়া) থেকে তথ্য নিয়েই আমরা ব্যবস্থা করছি। গত কয়েকদিন আগেও কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে, অনেকেই জেলে আছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যেটি সম্ভব তা বাস্তবায়ন করছি। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কে দোষী বা নির্দোষ সেটি কীভাবে প্রমাণ করবো? আমার যে চিন্তা সেটি হলো এখন বিদেশে টাকা রাখলে কেউ সেই টাকার ওপর কোনো লাভ পাচ্ছে না বরং দেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ দিতে হয়। এই টাকাগুলো আমাদের কষ্টার্জিত টাকা, আমাদের ভাইবোন যারা বিভিন্ন ব্যবসা ও পেশায় জড়িত তারাই এ অর্থটি পাঠায়। আমরা চাই এই অর্থ দেশের মানুষের কাজে আসুক। দেশের সরকারের কাছে আসুক। সরকার যদি এই অর্থটি সম্পর্কে জানতে পারে তাহলে সরকার অর্থবহভাবে এই অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমদানি বাড়বে, আমদানি বাড়া ভালো। আমদানি বাড়লে রফতানিও বাড়বে। আমাদের রফতানিও বেড়েছে। আমরা যতই রফতানি করি তার সিংহ ভাগই ইম্পোর্ট খাতে চলে যায়। তবুও আমাদের এক্সপোর্ট বাড়াতে হবে, আমরা সেই কাজটি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কয়েকটি খাতকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। এবং সেখানেও বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়ে থাকি। এগুলোর মূল কথাটা হলো একটু সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের টাকা যারা যেখান থেকে অর্জন করুক দেশে আসুক। দেশে আনার জন্য যা যা বাস্তবায়ন করা দরকার আমরা করবো।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।