Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে কিডনি পাচারকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৩ জন গ্রেফতার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:৪৮ পিএম

ভারতে কিডনি, লিভার পাচারকারী আন্তর্জাতিক চক্রের তিন সদস্যকে পাকড়াও করেছে র‌্যাব। নগরীর খুলশী থানার ভারতীয় ভিসা অফিস এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব জানায় শক্তিশালী আন্তর্জাতিক এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে কিডনি ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের নামে ভারতে মানবপাচার করে আসছে। ইতোমধ্যে এই চক্রের খপ্পরে পড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন তাদের কিডনি হারিয়েছেন।

এই চক্রের সদস্যরা খুলশী এলাকায় তৎপর আছে এমন খবরের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যাবের একটি আভিযানিক দল ভারতীয় ভিসা অফিসের কাছে অভিযানে গেলে চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় সেখান থেকে মোহাম্মদ আলী ডালিম (৩৫), মোঃ আতিকুর রহমান রনি (৩৬) ও মোঃ আলম হোসেনকে (৩৮) পাকড়াও করা হয়। তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় সাইফুল ইসলাম নামে একজন অসহায় লোককে চার লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকায় কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করছে। তাকে ভারতে পাচার করার জন্য তার পাসপোর্ট ভিসা লাগানোর কাজে সহযোগীতায় ব্যস্ত ছিল। এসময় তাদের হাতে নাতে গ্রেফতার এবং ঘটনাস্থল থেকে একজন ভিকটিম ও বিভিন্ন ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার রনিসহ অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, রনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও লিভার পাচারকারী দলের সদস্য। বাংলাদেশে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা ডালিম। ভারতে অবস্থান করে শাহিন নামে একজন বাংলাদেশী রনি, আলমদের মাধ্যমে কিডনি ও লিভারের ডোনার সংগ্রহ করে তাদের ভারতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। এ ক্ষেত্রে ডোনারদের তারা চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে থাকে। ভারতে ডোনারদের সাথে রোগীদের রক্ত, কিডনি ও লিভার ক্রস ম্যাস করিয়ে থাকেন। শুধু কিডনির ও লিভারের জন্য চক্রটি রোগীদের কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা নেন।

গ্রেফতার ডালিমের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা প্রথমে কিডনি ডোনেট সেন্টারসহ বিভিন্ন নামে ফেইসবুক পেইজ ওপেন করেন। ঐ পেইজে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ডোনারদের নানাভাবে কিডনি ও লিভার ডোনেশনের ব্যাপারে প্রলোভন দেখানো হয়। ডোনার পাওয়ার পর ঐ চক্রের সদস্যরাই তাদের পাসপোর্ট ও ভারতীয় ভিসা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে তাদের রক্ত, কিডনি ও লিভার পরীক্ষা করানো হয়। রির্পোট ঠিক থাকলে ঐ লোকদের তারা ভারতে পাচার করে।

র‌্যাব জানায়, ভারতে অবস্থানরত শাহিন ঐ দেশের হাসপাতালে ভিকটিমদের বিভিন্ন অঙ্গের পুনরায় পরীক্ষা করানোর পর তাদের কাছ থেকে কিডনি ও লিভার সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। এই চক্রটি এ পর্যন্ত ৩০-৪০ জনকে প্রলুব্ধ করে অবৈধভাবে কিডনি ও লিভার নেওয়ার কথা বলে ভারতে পাচার করেছে। তারা আরো কয়েকজনকে একই উদ্দেশে ভারতে পাচারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার কথাও স্বীকার করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্রগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ