গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
অর্থহীন কোন সংলাপে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। গত সোমবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রেসিডেন্টের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের বিষয়ে সভায় বলা হয়, বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন সময়ের নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যাতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়। বিগত দুইটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিলো। বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে প্রেসিডেন্টের কাছে পেশ করেছিলো। কিন্তু সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচনকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারনে।
সভায় আরও বলা হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনী ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারনে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটারগণ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পর পর দুটো নির্বাচন কমিশনই চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ২০১২ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্ববধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনের বিধান বলবত করে প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিকাশের সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে। জনগণ তার ভোটের অধিকার হারিয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীন ভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবেনা মন্তব্য করে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলেন, বিএনপি বিশ^াস করে নির্বাচন কালীন সময়ে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোন নির্বাচন কমিশনই অনুষ্ঠান করতে পারবেনা। প্রেসিডেন্ট নিজেই বলেছেন তার কোনও ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনও ইতিতবাচক ফলাফল আনতে পারবেনা। বিএনপি অর্থহীন কোন সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।
ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য- খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সভায় ৩০ ডিসেম্বর ভোটাধিকার হরণের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এবং ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফএআই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই হিসাব সামগ্রিক চিত্র বর্ণনা করে বলে মনে করে না বিএনপি। প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সামগ্রিক চিত্র আরও ভয়াবহ। সভা মনে করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয়ে অর্থ পাচার হচ্ছে।
সভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ইউএনএইচআরসি এর গুমসংক্রান্ত ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস’ প্রকাশিত প্রতিবেদন বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ‘গুম’ এর ঘটনাগুলো উঠে এেেসছে। গত এক দশক যাবত, রাজনৈতিক বিরোধী নেতা ও কর্মীদের গুম, নাগরিক আন্দোলনের কর্মী গুম হওয়া বাংলাদেশে একটা ত্রাসের অবস্থায় সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বারবার বাংলাদেশে তাদের প্রতিনিধি দল তদন্তের জন্য পাঠাতে চাইলেও সরকার অনুমতি প্রদান করে নি। উক্ত সংস্থার তদন্ত কমিটিকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানানো হয়।
সভায় সম্প্রতি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকা-ে ৪৫ জনের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। মর্মান্তিক এই দূর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানানো হয়। এছাড়া সিনিয়র সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।