Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রিকশাচালকরা সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত : সেমিনারে বক্তারা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:০৪ পিএম

সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মধ্যে সড়কে পুলিশ, মাস্তানের হয়রানির শিকার হতে হয় রাজধানী ঢাকার রিকশাচালকদের। একইসঙ্গে তারা রাজধানীর রিকশা গ্যারেজ, বস্তিতে মানবেতর জীবন যাপন করে। অনেকের রেজিস্ট্রেশন বা পরিচয় না থাকায় সরকারের কোনো নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আসতে পারে না এ রিক্সাচালকরা। বর্তমানে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন করোনার টিকা ও প্রণোদনা থেকেও।

আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সিরডাপ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) আয়োজিত ‘অতিমারি লকডাউনে ঢাকা শহরে রিকশাচালকদের জীবন ও জীবিকা : কার্যকর সুরক্ষায় ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, রাজধানীতে ২২ লাখ রিকশা শ্রমিকের বসবাস। চালক, গ্যারেজ মালিক, বডি প্রস্তুতকারীসহ ২৫ থেকে ২৬ লাখ মানুষ রিকশা খাতের উপর নির্ভরশীল। তবে রিকশাচালকদের কোনো ডাটাবেজ না থাকায় তারা নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ঢাকার ১৪ জন রিকশাচালকদের উপর গবেষণা চালিয়ে জানা গেছে, করোনার মধ্যে ঢাকায় রিকশা চালকের সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় তাদের আয় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। করোনায় কোনো রকম সরকারি সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছায়নি।

আলোচনায় সাংসদ ড. শিরিন আখতার বলেন, উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন আমাদের জাতীয় কাজ। এ কাজে অন্তর্ভুক্তি মূলক উন্নয়ন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেই আমাদের উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মানুষের জীবন মান নিচে থাকার কথা নয়। তিনি আরও বলেন, রিকশাচালকরা একটা বড় মানব শক্তি। তারা চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। চালকদের ঐক্যবদ্ধ করতে সংগঠনের আওতায় আনতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে চালকরা সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন।

সভায় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইনসুর আলী বলেন, সরকার গার্মেন্টস শ্রমিক মালিকদের অনুদান দিয়েছে। তবে রিকশাচালক ও মালিকদের কোনো রকম সাহায্য করেনি। চালকদের লাইসেন্স বা তথ্য ভাণ্ডার না থাকায় তারা প্রণোদনার আওতায় আসতে পারেনি। আমরা বেওয়ারিশ লাশ হতে চাইনা, পরিচয় চাই। বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, রিকশা চলে না এমন কোন সড়ক নাই। তবে তাদের কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। চালকদের সংখ্যা নির্ধারণ না করা গেলে তাদের মৌলিক চাহিদা ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলো অবহেলিত থেকে যাবে। চালকদের কাছে প্রণোদনার সাহায্য পৌঁছে দিতে পুলিশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।

পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সামাজিক মৌলিক চাহিদার দাবি তোলা লজ্জাজনক। ঢাকায় যারা রিকশা চালাতে আসেন, তারা দুর্যোগ কিংবা ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার। কর্মসংস্থান যদি থাকত তাহলে ঢাকামুখী স্রোত কমানো যেতো। রিকশাচালকদের মূল স্রোতধারার বাইরে এনে উন্নয়ন করা হয়। নতুন ড্যাপে জোন ভিত্তিক রিকশা ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ ৯৪ শতাংশ মানুষ রিকশায় চলাচল করে। আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়কারী মেসবাহউদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ রিকশা ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ, বিলসের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাদল খান, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ