গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বিএনপির উদ্দেশে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রেসিডেন্ট আপনাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যাবেন কি যাবেন না আপনাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার প্রেসিডেন্টের উদ্যোগ এগিয়ে যাবে, এই এগিয়ে যাওয়ার পথে কোন বাধা বা সড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিবি) মিলনায়তনে মুজিববর্ষে বিজয়ের ৫০ বছর ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছেসেবক লীগ আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যের একথা বলেন। অনুষ্ঠানে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রধান করা হয়।
এসময় জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, স্বাধীনতার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশ যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ওরা, মেনে নিতে পারেনি। প্রতিশোধের জন্য ওরা ষড়যন্ত্র করেছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তির ছড়িয়ে দিয়ে দুর্বল করেছিল। ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনীদের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। সেই খুনীদের রাজত্ব কায়েম করেছিল মুক্তিযুদ্ধের ভিতরে পাকিস্তানি অনুচর ঢুকে পড়া জেনারেল জিয়া। সেই মুক্তিযুদ্ধের ভিতরে চর হিসাবে ঢুকে মুক্তিযুদ্ধকে বাধাগ্রস্থ করতে চেয়েছিল। তার প্রমাণ রেখেছেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রকে আবার একটি সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তার প্রমাণ রেখেছিলেন জিয়াউর রহমান। তার পদ ধরে জেনারেল এরশাদ এই বাংলাদেশে পঁচাত্তরে খুনীদের আর একাত্তরের পরাজিতদের গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিল। আর সেই এরশাদের পথ ধরে জিয়ার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একই পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করেছে।
আজকে মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এবং রাষ্ট্র ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের সেই নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা ধরনের মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়েছে তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নানক।
এবিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে নানক বলেন, এই বাংলাদেশে আমরা ঘুরে বেড়াতাম, আর মতিউর রহমান নিজামীরা গাড়িতে করে ঘুরে বেরিয়েছে। নিজামী রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। রাষ্ট্রের মন্ত্রী হিসাবে আমার রক্তের আঁকড়ে লেখা ওই লাল-সবুজের পতাকা গাড়িতে উড়াতে কে এই সুযোগ করে দিয়েছিল? তাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না। ওরাই আবার এখন লম্বা লম্বা কথা বলে। ওরাই আবার দেশের মানুষের কথা বলে, এর চেয়ে লজ্জাস্কর আর ধিক্কার কিছু দেয়ার মতো ভাষা আমার নেই।
কাজেই আমার মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যখনি এই বাঙালি জাতি সফলতার দিকে এগিয়ে গিয়েছে তখনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। আজকে আমরা বাঙালি,আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছি। আজকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছি। আজকে অন্নের নিশ্চয়তা হয়েছে, বস্ত্রের নিশ্চয়তা হয়েছে। শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চিকিৎসা আমাদের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে শেখ হাসিনা। আর তখনি শুরু হয়েছে ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন নানক।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে যখন মা মারা গেলে মন্তান তার মায়ের কাছে যায় না, সন্তান মারা গেলে মা যখন তাকে স্পর্শ করে না, লাশ দাফন করা এক অনিশ্চয়তা ছিল তখন শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ দাফন পর্যন্ত করেছে বলেও জানান তিনি। করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকান্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি।
এবিষয়ে নানক বলেন, ‘‘লম্বা লম্বা কথা বলেন, কি করেছেন করোনাকালীন সময়? বিএনপির বন্ধুরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে গরম গরম কথা বলেন। কোথায় গরম তো হয় না? কারণ মানুষ উন্নয়ন দেখেছে, মানুষ দেখেছে শেখ হাসিনা যে ওয়াদা দিয়েছিলেন, সেই ওয়াদা তিনি পূরণ করে যাচ্ছেন। সেই কারণে মানুষ রয়েছে শেখ হাসিনার সাথে আর মানুষ আপনাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে আন্দোলন আর হয় না।
সভায় দলের আরেক সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে বিএনপি একদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না, আবার নির্বাচনকে নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে। তবে দলটি পেছনের দরজা দিয়ে যে কোন প্রকারে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে। এসকল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে দেশের সকল মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যবদ্ধ কওে তাদের মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন হবে স্বচ্ছ। সেই লক্ষ্যে সংবিধানের আলোকেই মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সকল দলের সংলাপের মাধ্যমে ইসি গঠন হচ্ছে। তারপরেও দেশে একটি দল সেই সংলাপে বিরোধিতা করে ষড়যন্ত্র করছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাজু, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, এ. কে. এম. আজিম, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বিটু, দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কে এম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, সদস্য মির্জা মুরশেদ, সংগঠনের দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈমসহ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।