Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গা সওয়া হয়ে যাওয়ায় মর্মান্তিক ঘটনা দেখছে না বিশ্ব : পোপ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে দেওয়া বার্তায় ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বব্যাপী চলমান সংঘাত, সংকট, দুঃখ-দুরদশার কথা তুলে ধরে এসবের প্রতি বিশ্ববাসীর উদাসীনতা নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, চারিদিকে নানা সংকট, দুঃখ-দুর্দশা মানুষের এতটাই গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে যে, সেদিকে কারও খেয়াল নেই। এগুলো এখন কেউ দেখেও দেখছে না। বিবিসি জানায়, কোভিড মহামারীর মধ্যে গতবছর পোপ বদ্ধ জায়গায় বড়দিনের ভাষণ দিয়েছিলেন। তবে এবছর মহামারীর মধ্যেও তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটারর্স স্কয়ারে বাসিলিকা গির্জার বারান্দা থেকে হাজার হাজার অনুসারীর সামনে ভাষণ দেন। যেখানে ২০১৩ সালের মার্চে পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে প্রথম দেখা গিয়েছিল। শনিবার পোপের এই বার্ষিক ‘উরবি এট অরবি’ (শহর ও বিশ্বের প্রতি) ভাষণ শুনতে মহামারীর মধ্যেও মাস্ক পরে উপস্থিত হন অনুসারীরা। ভাষণে পোপ সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাকসহ আফ্রিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিরতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা সংঘাত, সংকট, ভিন্নমত বেড়ে যেতেই দেখতে পাচ্ছি। এর কোনও শেষ নেই বলেই মনে হয়। কারণ, এখন আর আমরা এগুলো খেয়াল করি না বললেই চলে। এসবে আমরা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, বড় বড় সব ট্র্যাজেডি নীরবেই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।” তাছাড়া, মহামারীর কুপ্রভাবের কারণেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংঘাত সমাধানের চেষ্টা বিঘেœর মুখে পড়েছে বলে পোপ ফ্রান্সিস উল্লেখ করেন। ভাষণে পোপ ব্যক্তিগত এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ক্রমেই বাড়তে থাকা মেরুকরণেরও নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পারিবারিক বিরোধ থেকে শুরু করে যুদ্ধের হুমকি পর্যন্ত সবকিছু কেবল সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব। মুখ ফিরিয়ে বসে না থেকে বরং মানুষে মানুষে আলোচনা এবং বিশ্বনেতাদেরকেও একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় বসার ওপর জোর দিয়েছেন পোপ। সবকিছু একা করা এবং অন্যদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার প্রবণতা কমছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষে মানুষে দূরত্ব বাড়ছে। কোভিড-১৯ মহামারী এই দূরত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পোপ আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সংলাপ এড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। আর তা হচ্ছে, এর ফলে সংলাপের দীর্ঘপথে না গিয়ে বরং শর্টকাট রাস্তায় সংকটের সমাধানে পৌঁছার চেষ্টা দেখা দেবে।” সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেন প্রসঙ্গ টেনে পোপ বলেন, “সেখানকার মর্মান্তিক পরিস্থিতি কেউ দেখেও দেখছে না। বছরের পর বছর ধরে সেখানে একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের চলমান সংঘর্ষ এবং নজিরবিহীন অথনৈতিক, সামাজিক সংকট ঘিরে ধরা লেবাননের কথাও মানুষকে স্মরণে রাখার আহŸান জানান পোপ। এশিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আফগানিস্তানের মানুষের কল্যাণের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার আহŸান জানান, যে মানুষগুলো ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতে ত্যাগ-তিতিক্ষার এক কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে। মিয়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী মানুষদের টিকে থাকার জন্যও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণার আহŸান জানান পোপ। তাছাড়া, ইউক্রেন, ইথিওপিয়াসহ বিশ্বজুড়ে সংঘাতপূর্ণ অন্যান্য আরও অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসার কামনায় প্রার্থনা করেন পোপ ফ্রান্সিস। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ