Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের ৮৫ ভাগ মানুষের হাতে কিছু নেই, ১৫ ভাগের হাতে অধিকাংশ সম্পদ : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:১৬ পিএম

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের ৮৫ ভাগ মানুষের হাতে কিছু নেই। মাত্র ১৫ ভাগ মানুষের হাতে অধিকাংশ সম্পদ, যা ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে প্রথাগত ভঙ্গুরতার পাশাপাশি করোনা মহামারি নতুন ভঙ্গুরতা তৈরি করেছে। এজন্য দেশের গড় আয় নিয়ে উচ্ছ্বাস করার কিছু নেই। কেননা বৈষম্যের চিত্র ভিন্ন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সম্মেলন কক্ষে আব্দুল গফুর মেমোরিয়াল লেকচারে এসব কথা বলেন তিনি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেনের সঞ্চালনায় লেকচারে ‘মার্ক্স স্টাডিস ইন বেঙ্গল : সাম ক্রিটিক্যাল রিফ্লেকশনস’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এতে বক্তব্য রাখেন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিআইডিএসের সাবেক গবেষক রুশিদান ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এ. আকাশ প্রমুখ।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মার্ক্সের শ্রেণী বৈষম্যের পাশাপাশি আরও নানা বৈষম্য আমাদের সমাজে বিরাজমান। গবেষক গফুর ভাইসহ আমরা অনেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অনেক পরিকল্পনা করেছি বিআইডিএসের সম্মেলন কক্ষে বসে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আধা-সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে বসে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আজকের দিনে সেটি কি সম্ভব? শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অলৌকিক ও বায়বীয় অবস্থা তৈরির মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা তৈরির সুফল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, নাগরিকরা এখন আর স্বপ্ন দেখেন না। নেতা নেত্রীরা স্বপ্ন দেখলেই কেবল তারা স্বপ্ন দেখেন। ব্যক্তির বিকাশ বাধাহীন হলে সমাজে বৈষম্য কমে আসবে। বিশ্বে মার্ক্সকে শতবার কবর দেওয়া হয়েছে। আবার বিশ্বে কোথাও যখন কোনো ঘটনা ঘটে, তখন তিনি উঠে আসেন। এটি তার জীবন্ত উপস্থিতি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে মার্ক্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বিশ্বের যেখানে বৈষম্যের ঘটনা ঘটেছে, সেখানেই মার্ক্স প্রতিবাদী হয়ে এসেছেন। কিন্তু বাংলা ভাষায় মার্ক্সকে খুব বেশি তুলে ধরা হয়নি। মার্ক্সের তত্ত্ব নিয়ে আরও বেশি গবেষণা হওয়া দরকার।

ড. বিনায়ক সেন বলেন, আব্দুল গফুর বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ছিলেন। এছাড়া তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর আগে তার স্মরণে দুটি লেকচার হয়েছে। এবার তৃতীয় বারের মতো এ লেকচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় মার্ক্সের দর্শন কাজে লাগাতে হবে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মার্ক্সকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। বাংলাদেশে মার্ক্সীয় চর্চা বাড়ানো দরকার। তাহলেই বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। অধ্যাপক এম. এম. আকাশ বলেন, মার্ক্সকে জানতে হলে তার মূল বই পড়তে হবে। মার্ক্সের নিজস্ব ভাষায় লেখা বই আমরা পড়িনি। ইংরেজিতেও কম পড়েছি। বাংলায় তো বই নেই বললেই চলে।

ড. রুশিদান ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের জন্য মার্ক্স ও লেনিনের চিন্তার প্রয়োগ কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। পুঁজি ও উদ্বৃত্ত উৎপাদনের বিষয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। কেননা ক্ষুদ্র কৃষকরা শোষিত হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে। সমাজতন্ত্র আমাদের মনে আছে। কিন্তু সেটিকে কাজ লাগাতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মার্ক্সের বিষয়গুলো আরও বেশি বেশি অনুবাদ হওয়া উচিত ছিল। কেন এত কম অনুবাদ হয়েছে- সেটিই বড় প্রশ্ন। কার্ল মার্ক্সের মতো চিন্তার জগতে যারা পথিকৃৎ ছিলেন, তাদের খুঁজে বের করে চর্চা করতে হবে।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:০৫ এএম says : 0
    জনাব,দেব ভট্টাচার্য আপনাকে আমার পক্ষ থেকে কোটি কোটি বার সম্মানের সহিত জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন,আমি প্রথম বার দেখলাম একটি সত্য কথা বলার মানষ,আপনি বহু জ্ঞানী,আসলে কি জনাব আমাদের জনগণ কি দরনের শুধু জনগণ এইটি বুঝতে চায় না যে ,এই যে একটি দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি দেশে করেছে,সেটি আসলে কারা করেছেন,কি রহস্য ছিল কি জন্য আমলারা এই বুদ্ধি করেছেন,কি সারথে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি বাতিল করলেন,জনগণের যদি সে দেমাক থাকতো জনগণ 1990তে সংবিধান সংশোধন এই দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি করতেন না,চৌরাচার আমলারা যখন দেখলেন দেশে লুট পাঠ করার সুযোগ মিলছেনা,তখন এরা জনগণের সাথে মিশে গিয়ে জনগণ কে বিভিন্ন আশা দিয়ে পলিসি এবং পলিটিক্স করে দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি করেছেন,শুধু লুট পাঠ করে খাওয়ার জন্য,জনগণ এখন ও অন্ধ বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বিভিন্ন প্রলোভন দেখাইয়া কিছু সারতপর রাজনৈতিক আমলারা দেশের সব কিছু নিয়ে তাহারা শক্তি শালি হতেছেন আর হয়ে ও গেছেন ভবিষ্যতে সব তাদের হাতে চলে যাবে ,আপনি 15% বলেছেন সেটা 5% আসতেছে ,যদি দেশে রাষ্ট্র পতি পদ্ধতি চালু না হয়,ভবিষ্যতে 5% হয়ে যাবে,কিন্তু জনগণ কিছুই বুঝে না শুধু আওয়ামী লীগ বিএনপি ও এদল সে দল নিয়ে ঘুম হারাম,ভাই ভাইকে খুন করেন বাবা ছেলে কে ছেলে বাবা কে ,কি যেন ট্যাবলেট জনগণ কে খাওয়ালেন সবাই এদের নিয়ে মারা মারি কাটা কাটি একে বারে জনগণের কলিজার টুকরা মনে হয় এই আমলারা ,কিন্তু জনগণ জানেনা যে এই রাজনৈতিক আমলারা তাদের সারথের জন্য,জনগণ কে বেবহার করছেন,এবং জনগণের বুকে চুরি মারছেন,জনগণ কি সেটা বুজেনা যে বহু দলীয় গণতন্ত্রে কি রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি নিষেধ আছে, যে বহু দলীয় গন তন্ত্র করা যাবে না,সবাই মিলে ভোটের মাধ্যমে একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা সেটাই বহু দলীয় গন তন্ত্র। আর দলীয় আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল সেটা বহু দলীয় গন তন্ত্র না,আমার দৃষ্টিতে আমি দেখতেছি বর্তমানে আওয়ামী লীগ যে ভাবে জোর পুর্বক জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছেন,সে অনুসারে বুজলাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরে যাবে অথবা হেরে যাবে কিন্তু দলীয় আমলাতান্ত্রিক সংসদীয় পদ্ধতির আরেকটি দল ক্ষমতায় আসবে,পরবতীর্তে তারাও সেই ভাবে চেষ্টা করে যাবে এবং করবেন ক্ষমতায় থাকতে,তখন ও কিছু করার থাকবেনা কারণ সব কিছু দলীয়,এই ভাবেই আজ আমি কালকে আপনি ক্ষমতায় এই গুলি করতে করতে দেশের সম্পদ তাদের কব্জায় চলে যাবে এবে চলে গেছে,বাকি যাহা সামান্য আছে সামনে তাহাও থাকছে না,শেষ পযন্ত 5% তারা হবেন দেশের সব কিছুর মালিক,95%লোক হবে পথে ভিখারী,এখন ও সময় আছে জনগণের বুঝতে হবে যে আমরা বাচতে হবে আমাদের সম্পদ আমাদের কাছে রাখতে হবে,তাই কি করতে হবে জরুরি জরুরি এই আমলাতান্ত্রিক চৌরাচার দলীয় সংসদীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে এবং রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি চালু করতে হবে,দেশ রক্ষার সারথে নির্বাচন এর মাধ্যমে একজন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি জরুরি,ধন্যবাদ মাননীয় দেব ভট্টাচার্য।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ