পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৪০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি
২৭/৩০ শতাংশ হার নির্ধারণ কাছে বোধগম্য নয় : মোহাম্মদ হাতেম
দেশের রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত নিট পোশাকে সুতা থেকে কাপড় তৈরি এবং কাপড় থেকে পোশাক তৈরি। এ খাতে অপচয় সুবিধা বা ওয়েস্টেজ রেট প্রায় দ্বিগুণ করেছে সরকার। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৬ শতাংশ অপচয় সুবিধা দিয়েছিল। এবার সময়ের নতুন চাহিদাকে কেন্ত্র করে গত রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক আদেশে এ খাতের কারখানাগুলো বেসিক নিট কাপড় তৈরিতে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ, বিশেষ আইটেমে ৩০ শতাংশ এবং সোয়েটার ও মোজায় ৪ শতাংশ হারে অপচয় সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তবে নিট পোশাকশিল্প মালিকরা সরকারের নতুন এই ওয়েস্টেজ রেট প্রত্যাখ্যান করেছেন। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে অফিশিয়ালি চিঠি দিয়ে এই ওয়েস্টেজ রেট প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচার এন্ড এক্সপোর্ট অ্যাশোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।
এক প্রতিক্রিয়ায় বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা এই রেট মানি না। কমপক্ষে ৩৫ শতাংশ অপচয় সুবিধা চাই আমরা। সেই সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তে হতাশা ব্যক্ত করে এতে রফতানি না বেড়ে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন তিনি।
‘নতুন এই হার কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়’ উল্লেখ করে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করে দেখেছে, ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত অপচয় হয়। তাহলে তারা কীভাবে ২৭/৩০ শতাংশ হার নির্ধারণ করে আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।
দীর্ঘদিন ধরে অপচয় সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানানোর প্রেক্ষাপটে ১৯৯৮ সালে সব ক্ষেত্রেই ১৬ শতাংশ অপচয় সুবিধা দেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ট্রাউজার, শর্টস, স্কার্ট, পাজামা এবং এ-জাতীয় পোশাকে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ অপচয় সুবিধা পাবেন শিল্পমালিকরা।
নিটিং পর্যায়ে ১ শতাংশ, ডায়িং ও ফিনিশিং পর্যায়ে ৯ শতাংশ, কাটিং পর্যায়ে ১৩ শতাংশ, প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি, সেলাই, ধোয়া এবং ফিনিশিং ও ইনস্পেকশন পর্যায়ে ১ শতাংশ করে অপচয় সুবিধা পাবে কারখানাগুলো।
রমপার্স, ট্যাঙ্ক টপ, গাউন, হুডি, লিংগারির মতো বিশেষায়িত পোশাকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অপচয় সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের পোশাকের নিটিংয়ে ২ শতাংশ, ডায়িং ও ফিনিশিংয়ে ৯ শতাংশ, কাটিংয়ে ১৫ শতাংশ, প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি, সেলাই, ধোয়া এবং ফিনিশিং ও ইনস্পেকশন পর্যায়ে ১ শতাংশ করে অপচয় সুবিধা পাবে কারখানাগুলো।
সোয়েটার, জাম্পার, পুলওভার, কার্ডিগান, ভেস্ট, মোজা, গøাভসসহ এ ধরনের পোশাকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ অপচয় সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। এ ধরনের পোশাকের নিটিংয়ে ২ শতাংশ অপচয় সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া লিংকিং, ওয়াশিং ও ফিনিশিংয়ে ১ শতাংশ এবং ইনস্পেকশনে ১ শতাংশ হারে অপচয় সুবিধা পাওয়া যাবে।
যদিও নিট পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন এই সুবিধা বাড়িয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছিল।
অপচয় সুবিধা বাড়ায় রফতানিকারকরা এখন একই পরিমাণ তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে বিনা শুল্কে দেশ-বিদেশ থেকে এখনকার চেয়ে বেশি পরিমাণ সুতা ও ফ্যাব্রিক আমদানি করতে পারবে। কোনো কোম্পানির অপচয় নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হলে, তা খোলাবাজারে বিক্রি করে পোশাক কারখানা মালিক লাভবান হলেও দেশীয় সুতা ও ফ্যাব্রিক উৎপাদক কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অন্যদিকে, প্রকৃত অপচয় হারের তুলনায় সরকার নির্ধারিত হার কম হলে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের বাড়তি যে পরিমাণ অপচয় হয়, তা খোলা বাজারে বিক্রি হয়েছে কিংবা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কাঁচামাল অপচয় হয়েছে বলে ধরে নেয় কাস্টমস অডিট ডিপার্টমেন্ট। তখন বাড়তি অপচয় হওয়া কাঁচামালের ওপর সরকার নির্ধারিত শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট আদায় করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে রফতানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
গত জানুয়ারিতে এই অপচয় হার বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।
পরে প্রকৃত অপচয় হার বের করার জন্য রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২০টি কোম্পানির কাছে অপচয় হার জানতে চেয়ে চিঠি দিলে দুটি কোম্পানি তার জবাব দেয়। ৪০ শতাংশের বেশি অপচয় হয় বলে তারা জানায়।
পরে প্রকৃত অপচয় হার কত-তা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই কমিটি বেসিক নিটওয়্যার, স্পেশালাইজড আইটেম এবং সোয়েটার ও মোজা উৎপাদন করে এমন দুটি করে মোট ছয়টি কারখানা সরেজমিন পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়।
সুতা থেকে তৈরি পোশাক উৎপাদন পর্যন্ত কারখানায় ব্যবহৃত প্রযুক্তির ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন হারে অপচয় হয়ে থাকে। একই ধরণের কারখানায় অপচয় হার গড় করে তারা সর্বোচ্চ অপচয় রেট নির্ধারণের সুপারিশ করে। ওই সুপারিশের আলোকেই নিট পোশাকের জন্য নতুন অপচয় সুবিধা বা ওয়েস্টেজ রেট নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।