Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি বিজিএমইএ–বিকেএমইএর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২০, ২:২৭ এএম

রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করলে যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ উলেন মিলস (ইডব্লিউএম) গ্রুপকে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন-বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

৭৩ বছর পুরোনা ইডব্লিউএম গ্রুপের পিকক, কান্ট্রি ক্যাজুয়াল, অস্টিন রেডসহ পোশাকের বেশ কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে। তাদের বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৪০০। পাঁচ বছর আগে গ্রুপটির বার্ষিক বিক্রীর পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি পাউন্ড।

করোনাভাইরাসের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ইডব্লিউএম বাংলাদেশের রিভার সাইড সোয়েটার, স্কাইলাইন অ্যাপারলেস, সাউর্দান ডিজাইনারস লিমিটেডসহ কয়েকটি কারখানার ১১ লাখ ৯৫ হাজার পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়া পোশাকের রপ্তানি মূল্য ৮২ লাখ ডলারের বেশি।

বাংলাদেশী পোশাক মালিকদের দুই সংগঠনের পক্ষে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক ইডব্লিউএমের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ অ্যাডওয়ার্ড ডে´কে গত বৃহস্পতিবার ই-মেইল করেন। এতে তিনি লিখেছেন, ২৫ মার্চ পর্যন্ত ইডব্লিউএম ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশের বিপরীতে যেসব পণ্য তাদের মনোনীত ফ্রেইড ফরোয়ার্ডের মাধ্যমে জাহাজীকরণ সম্পন্ন করা হয়েছে তার অর্থ ২৯ মে´র মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে যেসব ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। বিষয়গুলো সুরাহা না হলে ইডব্লিউএমের কোনো নতুন ক্রয়াদেশের জন্য শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সনদ ইউটিলাইজেন ডিক্লারেশন বা ইউপি ইস্যু করবে না বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

ইডব্লিউএমকে বকেয়া অর্থ পরিশোধ ও নির্দেশনাগুলো মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে রুবানা হক ই-মেইলে লিখেন, নির্দেশনা অনুসরণ না করলে ইডব্লিউএম ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা ছাড়া বিকল্প উপায় থাকবে না। সেটি হলে ভবিষ্যতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্যদের সঙ্গে ইডব্লিউএম ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে।

এই চিঠির অনুলিপি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি (বেপজা), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিট্রিশ হাইকমিশনসহ সব ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডদের পাঠানো হবে বলে জানান রুবানা হক।

বিট্রিশ ক্রেতাকে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, আমরা কখনই ক্রেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে যেতে চাই না। ব্যবসার ক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই কৌশলি। তবে আমাদের ব্যবসা হুমকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। সে জন্য ক্রেতাদের র‌্যাংকিং করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ব্যবসা টেকসই করতে অনেক আলোচনা হলেও পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। অনেক ক্রেতা পোশাকের দাম না দিয়েও শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধের চাপ দেয়। এটি একেবারেই অন্যায্য। তাই ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।

করোনাভাইরাস চীনের বাইরে ইউরোপ ও আমেরিকায় ছড়িয়ে যাওয়ার পর গত মার্চে একের পর এক পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হওয়ার তথ্য আসতে থাকে। বিজিএমইএ জানায়, দেশের ১ হাজার ১৫০ কারখানার ৩১৮ কোটি ডলারের পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে। তাতে প্রায় ২২ লাখ পোশাকশ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ