গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বর্তমানে মোট মৃত্যুর ৬৯% এর কারণ অসংক্রামক রোগ। সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বিগত সময়ে কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে কোভিড ১৯ সেটিও বাড়িয়ে দিয়েছে। সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগে বহু মানুষ অসুস্থ থাকার ফলে চিকিৎসকদের ব্যস্ততা ও মানসিক চাপ বাড়ছে। যা রাষ্ট্রের পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা জরুরী। জনগণকে সুস্থ রাখা সম্ভব হলে চিকিৎসকদের অত্যাধিক চাপ কমে আসবে এবং তারা নানাবিধ গবেষণায় মনোনিবেশ করতে পারবেন। আর এজন্য প্রয়োজন একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করার দাবিতে আজ ২০ ডিসেম্বর ২০২১ সকাল ১১.০০ টায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “চিকিৎসা ব্যয় কমাতে প্রয়োজন, হেল্থ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যায়াম, খেলাধুলা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব তুলে ধরে বিষয়টি প্রদর্শন করেন।
ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান এবং সঞ্চালনা করেন প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব। কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রজেক্ট অফিসার মিঠুন বৈদ্য, কমিউনিকেশন অফিসার শানজিদা আক্তার, নেটওয়ার্ক অফিসার আজম খান, এসিস্টেন্ট প্রজেক্ট অফিসার ট্রিজা কৃষ্ণা গমেজ, ডেভেলপমেন্ট অফিসার আহম্মেদ হোসেইন এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং- বাংলাদেশ এর কর্মকর্তা মোছা: শাপলা খাতুন।
বক্তারা বলেন, শুধু নিরোগ থাকাটাই স্বাস্থ্য নয়; বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার নামই হল স্বাস্থ্য। দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য শব্দটি শারীরিক অংশটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে আশার কথা দেরীতে হলেও সারা বিশে^ আজ মানসিক স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূল আঙিনায় স্থান পেয়েছে। স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিকে অন্যতম প্রধান বাধা চিহ্নিত করা হয়েছে। জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা প্রদান রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। দেশে স্বাস্থ্য উন্নয়নে ’হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা সম্ভব। যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য অবনতির মূল কালণগুলো চিহ্নিত করে এগুলো সামাধানের দিকে মনোনিবেশ করবে, যাতে মানুষ দীর্ঘদিন সুস্থ জীবন অতিবাহিত করতে পারে।
বাংলাদেশের জনগনের গড় আয়ূ বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার পাশাপাশি শারিরীক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতকরণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরী। রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ‘হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ ঞযরহশ ঞধহশ হিসেবে প্রয়োজন অনুসারে সরকারী, বেসরকারী উভয় পর্যায়ে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ জাতি গড়ে তোলা সম্ভব হলে একদিকে চিকিৎসা নির্ভরতা কমবে অন্যদিকে ধীরে ধীরে চিকিৎসা খাতে রাষ্ট্রের ব্যয়ও কমে আসবে। শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রবীণদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধেও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সুইডেন, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, কোরিয়া, মঙ্গোলিয়াসহ বিশে^র ২৩টিরও অধিক দেশে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। রোগ হবার পর নিরাময় নয়, প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে জোর দেওয়া প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ব্যায়াম ও হাঁটা-চলা ও জীবনাচারের পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করা। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতের পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের প্রচারণা, বিজ্ঞাপনের কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন হতে পারে কার্যকর সমাধান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।